বাংলার ভোর প্রতিবেদক
বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনায় যথাযোগ্য মর্যাদায় যশোরে মহান বিজয় দিবস উদযাপিত হয়েছে। বাংলাদেশ অভ্যুদয়ের ৫৩ বছর পূর্তির এই দিবস জুড়ে জেলা প্রশাসনসহ রাজনৈতিক সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর ছিল নানা কর্মসূচি। ১৬ ডিসেম্বর এক সাগর রক্তের বিনিময়ে এই বাংলার বুকে এসেছিল স্বাধীনতা। ৫৫ হাজার বর্গমাইলের এদেশে উদিত হয়েছিল নতুন এক সূর্য। যার কিরণে ছিল বিজয়ের আভা। ৩০ লাখ প্রাণ আর আড়াই লাখ নারীর সম্ভমের বিনিময়ে সবুজ এ বাংলায় তা মিলেমিশে তৈরি করেছিল বাংলার লাল-সবুজ পতাকা। সোমবার মহান বিজয় দিবসে প্রথম প্রহরে ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসটির শুভসূচনা হয়। সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্বশাসিত
ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, সূর্যোদয়ের সাথে সাথে বিজয় স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।
এদিন, সকালে প্রথমেই বিজয় স্মৃতিস্তম্ভে বীর শহীদদের প্রতি ফুলেল শ্রদ্ধা জানান যশোরের জেলা প্রশাসক আজাহারুল ইসলামের নেতৃত্বে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ সুপার জিয়াউদ্দীন আহমেদের নেতৃত্বে পুলিশ প্রশাসন। এরপর জেলা পরিষদ, পৌরসভা, যশোর জেলা বিএনপি, সদর উপজেলা বিএনপি, নগর বিএনপি, জেলা মহিলা দল, জেলা যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, শ্রমিক দল, ছাত্রদল, মৎস্যজীবী দল, জেলা ইসলামী আন্দোলন, প্রেসক্লাব যশোর, দৈনিক বাংলার ভোর, দৈনিক লোকসমাজ, দৈনিক স্পন্দন, যশোর সাংবাদিক ইউনিয়ন (জেইউজে), সাংবাদিক ইউনিয়ন যশোর, যশোর সংবাদপত্র হকার্স ইউনিয়ন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি), যশোর জেনারেল হাসপাতাল, বিমানবন্দর, পানি উন্নয়ন বোর্ড, জেলা সেটেলমেন্ট অফিস, বিটিআরসি, স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর, মৎস্য অধিদপ্তর, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি, বিআরটিএ, বিএসটিআই, জেলা পোস্ট অফিস, বিটিসিএল, পরিসংখ্যান অফিস, ব্যুরো বাংলাদেশ জোনাল অফিস, কৃষি বিপণন অধিদপ্তর, প্রতিষ্ঠান পরিদর্শক অধিদপ্তর, বাংলাদেশ ডিপ্লোমা মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তর, পিটিআই, জনতা ব্যাংক, প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক, রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি, ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স, ডক্টরস ওয়েলফেয়ার
সোসাইটি, ডিস্ট্রিক্ট একাউন্টস এন্ড ফিনান্স অফিস, আরডিআরএস রিজিওনাল অফিস, ওজোপাডিকো, প্রাণীসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট, যশোর চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজ, যশোর উইমেন চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডস্ট্রিজ, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস, যশোর মেডিকেল কলেজ, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন, সরকারি এম.এম কলেজ, সরকারি এম.এম কলেজ, সরকারি এম.এম কলেজ ছাত্রদল, ইসলামী ছাত্রশিবির, সরকারি সিটি কলেজ, ডা. আব্দুর রাজ্জাক মিউনিসিপ্যাল কলেজ, নার্সিং ও মিডওয়াইফ কলেজ, বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহম্মদ ন্যাশনাল প্রি-ক্যাডেট, যশোর কলেজ, শহীদ মশিউর রহমান আইন কলেজ, স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা বাঁচতে শেখা, পোফ বাংলাদেশ, ধারা, এডাব, সুজন, নবান্ন সমাজ কল্যাণ সংস্থা, মানবাধিকার কল্যাণ ট্রাস্ট, বাংলাদেশ এনজিও ফাউন্ডেশন, জেলা পূজা উদযাপন পরিষদ, জাতীয় হিন্দু মহাজোট, সনাতন ধর্ম সংঘ, সূর্যোদয় সমাজ কল্যাণ ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, অর্পণ মানব কল্যাণ সংস্থা, জেলা শিল্পকলা একাডেমি, অগ্নিবীণা, বৈষম্য বিরোধী সাংস্কৃতিক জোট, ব্যঞ্জন থিয়েটার, থিয়েটার ক্যানভাস, জেলা সাংস্কৃতিক পরিষদ, মাগুরা কল্যাণ ফোরাম, মোটর পার্টস ও অটো পার্টস দোকান কর্মচারি ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র, বড়বাজার হাটচান্নি মার্কেট দোকান মালিক সমিতি, জাতীয় যুব পরিষদ, ছাত্র ইউনিয়ন, আর্স বাংলাদেশ, এস.এস.সি ৮৬, এস.এস.সি ৮৭ ব্যাচ, মুক্তি যুব পাঠাগার, পরিবহন সংস্থা শ্রমিক ইউনিয়ন, এপেক্স বাংলাদেশ, জেলা মোটর পার্টস ব্যবসায়ী মালিক সমিতি,
ইঞ্জিনিয়ার্স মালিক সমিতি, জেলা মুদ্রণ শিল্প মালিক সমিতি, জেলা টায়ার ব্যবসায়ী মালিক সমিতি, জেলা অটোমোবাইল মালিক সমিতি, বৈদ্যুতিক দোকান মালিক কল্যাণ সমিতি, জেলা হিউম্যান হলার মালিক সমিতি, জাগরণ উন্নয়ন ফাউন্ডেশন, জেলা ফল ব্যবসায়ী মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দসহ দেশ শতাধিক সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, রাজনৈতিক দল, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন।
বেলা ১১ টায় টাউন হল ময়দানের মুক্তিযোদ্ধা মঞ্চে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্য ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জেলা প্রশাসনের দেয়া সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক আজাহারুল ইসলাম। অনুষ্ঠানের উপস্থিত ছিলেন এবং বক্তব্য রাখেন পুলিশ সুপার জিয়াউদ্দিন আহমেদ, বৃহত্তর যশোরের মুজিব বাহিনীর প্রধান আলী হোসেন মনি, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার এএইচএম মুজহারুল ইসলাম মন্টু, বীরমুক্তিযোদ্ধা আফজাল হোসেন দোদুল, নজরুল ইসলাম চাকলাদার, নজরুল ইসলাম দফাদার, ফেরদৌসী বেগম ও গোলাম সারোয়ার।
বিকেলে একই স্থানে ছিল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। বিকেল ৪ টা থেকে রাত নয়টা পর্যন্ত দীর্ঘ এই সময় বিভিন্ন সংগঠনের ব্যানারে মঞ্চস্থ হয় নাটক নাচ-গান ও আবৃতি। বিপুল সংখ্যক দর্শক উপভোগ করে এই অনুষ্ঠান। এ সময় যশোর সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের পরিবেশিত ডাক্তার শফিকুল ইসলাম রচিত এবং আব্দুল্ল্হ্ াহিল খালেক নির্দেশিত নাটক ‘রক্তে যখন আগুন’ সকলের হৃদয় কেড়েছে। অংশগ্রহণ করে জেলা শিল্পকলা একাডেমী, শিশু একাডেমি, প্রত্যয় থিয়েটার, বিদ্রোহী সাহিত্য পরিষদ, দোতালা সাহিত্য পরিষদ, বৃষ্টি
র বন্ধন, প্রাচ্য সংঘ, রূপকার নাট্যগোষ্ঠী, যশোর সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, তরঙ্গ শিল্পীগোষ্ঠী, মুক্তেশ্বরী সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক পরিষদ, নজরুল সাহিত্য পরিষদ, শব্দ থিয়েটার, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন, থিয়েটার ক্যানভাস, পিপলস থিয়েটার, কিংশুক সংগীত শিক্ষা কেন্দ্র, যশোর সাংস্কৃতিক সংসদ, যশোর সাংস্কৃতিক পরিষদ, অগ্নিবীণা কেন্দ্রীয় সংসদ, নৃত্য বিতান, প্রত্যয় থিয়েটার, ফুলকুড়ি আসর, ও নাট্য কালা সংসদ যশোর।
এছাড়াও সকাল ১০টায় শিশু একাডেমিতে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। টাউন হল মাঠে আয়োজিত হয় ক্রীড়া অনুষ্ঠান, গ্রামীণ খেলা ও দিনব্যাপী বিজয় মেলা। সকাল সাড়ে ১০টায় অনুষ্ঠিত হয় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানে সংবর্ধনা অনুষ্ঠান ও দিনব্যাপী তাদের জন্য ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প। এছাড়া বিকেল চারটায় টাউন হল মাঠে অনুষ্ঠিত হবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
এদিকে, মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে যশোরের সাংস্কৃতিক সংগঠন সমূহের ব্যানারে অনুষ্ঠিত হয়েছে মনোমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় টাউন হল ময়দানের রওশন আলী মঞ্চে প্রায় আড়াই ঘন্টার এই অনুষ্ঠান মুগ্ধ করেছে সকলকে। অনুষ্ঠানের সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট যশোরের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি দীপঙ্কর দাস রতন ও জেলা শিল্পকলা একাডেমির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাহমুদ হাসান বুলু।
অনুষ্ঠানের ডালিতে ছিল সংগীত, নৃত্য ও আবৃত্তি। অর্ধশতাধিক শিল্পী অংশ নেয় গোটা অনুষ্ঠানে। অংশ নেন সুরবিতান সংগীত একাডেমি, মাইকেল সঙ্গীত একাডেমি, কিংশুক সংগীত শিক্ষা কেন্দ্র, সুরধুনী, পুনশ্চ যশোর, চাদের হাট, নৃত্য বিতান, তির্যক যশোর, স্পন্দন যশোর, উৎকর্ষ, শিল্পাঙ্গন ও মা নৃত্যালয়ের শিল্পীবৃন্দ।