বাংলার ভোর প্রতিবেদক
নিরাপদ দুধ উৎপাদন ও গ্রহণ সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে যশোরে ‘পুষ্টি কথা’ যাত্রা শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে যশোরের কেশবপুর উপজেলার ভরত ভায়না মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পারস্পরিক অংশগ্রহণমূলক কার্যক্রমের মাধ্যমে ‘পুষ্টি কথা’ শুরু হয়। এতে বিদ্যালয়ের ৬শ’ শিক্ষার্থীর পাশাপাশি স্থানীয় নারী-পুরুষ, দুগ্ধ খামারি, কৃষকসহ সামাজিক বিভিন্ন পেশাজীবী মানুষেরা অংশ নেন। অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, দুধ শরীরের জন্য খুবই প্রয়োজনীয় একটি উপাদান। যদি সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের মধ্যে নিরাপদ দুধ উৎপাদন ও বিপণনের বিষয়ে ভালো ধারণা থাকে তাহলে ভোক্তারা নিরাপদ দুধ পাবেন।

নিরাপদ দুধ পেতে উৎপাদন পর্যায় থেকে সচেতনতা তৈরি ও সঠিক ব্যবস্থাপনা অত্যন্ত জরুরি। দুধের মান বজায় রাখতে স্বাস্থ্যসম্মত খামার ব্যবস্থাপনা, সময়মতো গরুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা, দুধ দোহানোর পর সঠিকভাবে সংরক্ষণ ও সংগ্রহ কেন্দ্রে পরীক্ষার মাধ্যমে মান নিশ্চিত করা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন খুলনা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের বিভাগীয় পরিচালক ড. গোলাম হায়দার, কেশবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেকসোনা খাতুন, আরলা ফুড বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক লরেন্ট পন্টি, প্রাণ ডেইরির প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা মাকসুদুর রহমান, সলিডারিডাড নেটওয়ার্ক এশিয়ার সাপ্লাই চেইন অ্যান্ড প্রাইভেট সেক্টর এনগেজমেন্ট প্রধান মো. মুজিবল হক।

‘পুষ্টি কথা’ মূলত শুরু করেছে গ্রিন ডেইরি প্রকল্প। প্রকল্পটি ডেনমার্ক পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ড্যানিডা গ্রিন বিজনেস পার্টনারশিপের সহায়তায় বাস্তবায়িত হচ্ছে। সলিডারিডাড নেটওয়ার্ক এশিয়া দ্বারা পরিচালিত গ্রিন ডেইরি প্রকল্পটিতে অংশীদার হিসেবে রয়েছে প্রাণ ডেইরি, আরলা ফুডস, আইডিআরএন- বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, এসইজিইএস ইনোভেশন এবং ড্যানিশ এগ্রিকালচার অ্যান্ড ফুড কাউন্সিল। আয়োজকরা জানান, বাংলাদেশের দুগ্ধ খাতকে নিরাপদ, টেকসই এবং বাণিজ্যিকভাবে শক্তিশালী করে তুলতে কাজ করছে গ্রিন ডেইরি প্রকল্প। দশ হাজার দুগ্ধ খামারির আয় বৃদ্ধি (যার ৮০ ভাগই মহিলা), টেকসই খামার পদ্ধতি অনুশীলন ও জলবায়ু সহনশীলতা ছাড়াও এই প্রকল্পটি ৩০ শতাংশ গ্রিন হাউস গ্যাস নিঃসরণে কাজ করছে। এছাড়া শিশুদের দুগ্ধ পুষ্টি নিরাপত্তা ও নিরাপদ খাবার গ্রহণ প্রচারে কাজ করছে প্রকল্পটি।

আরলা ফুডস- এর বৈশ্বিক উদ্যোগ ‘ফুড মুভার্স’ থেকে অনুপ্রাণিত ‘পুষ্টিকথা’ কর্মসূচিটি একইসাথে প্রাণ ডেইরির নিরাপদ দুধের গুরুত্ব তুলেধরার সাম্প্রতিক উদ্যোগের সাথে সমন্বয় করে সাজানো হয়েছে। এছাড়াও নিরাপদ দুধ উৎপাদন ও গ্রহণে সলিডারিডাড ২০১৩ সাল থেকে বাজার ভিত্তিক পদ্ধতিতে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে। ‘পুষ্টি কথা’ আয়োজনে বিশেষজ্ঞ থেকে স্বাস্থ্যবিষয়ক পরামর্শের পাশাপাশি পারস্পরিক অংশ গ্রহণমূলক কার্যক্রম ও শিশু-বান্ধব সেশনের মাধ্যমে স্থানীয় জনগণ ও দুগ্ধ খামারিরা নিরাপদ দুধ সংরক্ষণের উপায়, জীবানুমুক্ত রাখতে করণীয় ও পুষ্টি বিষয়ক জ্ঞান অর্জন করেন। এছাড়াও খামারে উৎপাদন থেকে শুরু করে ভোক্তা পর্যায়ে গ্রহণ পর্যন্ত কীভাবে দুধের গুণগত মান নিশ্চিত করা যায়, সে বিষয়েও পরামর্শ গ্রহণ করেন।

Share.
Leave A Reply Cancel Reply
Exit mobile version