বাংলার ভোর প্রতিবেদক
যশোরে আওয়ামী লীগের একাংশের মিছিল থেকে জেলা বিএনপির কার্যালয়ে ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। ফায়ার সার্ভিসের লোকজন গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। রোববার সন্ধ্যা ছয়টার দিকে এই ঘটনা ঘটে। সরকার বিরোধী আন্দোলন প্রতিহত করতে বিকালে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষ লাঠি, হকিস্টিক নিয়ে পৃথকভাবে বিক্ষোভ মিছিল বের করে।
স্থানীয় সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদারের অনুসারীরা পৃথকভাবে এই মিছিল বের করেন। কাজী নাবিল অনুসারীদের মিছিলটি শহরের লালদীঘিপাড়ের বিএনপি কার্যালয়ের সামনে পৌছালে বিক্ষুব্ধ কর্মীরা কার্যালয়ের দরজা ভেঙ্গে ভাংচুর, ভিতরে আগুন জ্বালিয়ে দেয়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রোববার সন্ধ্যা ৬টার দিকে ১৫ থেকে ২০ জন যুবক লাঠিসোটা হাতে নিয়ে যশোর জেলা বিএনপি কার্যালয়ে হানা দেয়। তারা বিএনপি কার্যালয়ের সামনের দরজা ভেঙ্গে ভেতরে প্রবেশ করে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ সময়ে আশপাশের লোকজনকে অগ্নিসংযোগের বিষয়ে মুখ না খুলতে ভয়-ভীতি দেখিয়ে চলে যায়।
এ সময় ইমদাদুল হক নামে এক ওষুধ কোম্পানিতে চাকরিরত একজন পথচারী সামনে পড়লে অগ্নিসংযোগকারীরা তাকে বেধড়ক পিটিয়ে জখম করেন। তার বাড়ি নড়াইল জেলার সদর উপজেলার বরশোল গ্রামে। পরে আশপাশের লোকজন তাকে উদ্ধার করে যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে ভর্তি করেন।
অগ্নিসংযোগের খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। অন্যদিকে খবর পেয়ে সাথে সাথে যশোর কোতোয়ালি থানা পুলিশের ইনচার্জ আব্দুর রাজ্জাক, জেলা গোয়েন্দা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ রূপণ কুমার সরকারসহ পুলিশের কয়েকটি টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
যশোর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপারেশন) বেলাল হোসাইন বলেন, খবর পেয়ে সাথে সাথে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। কারা এ অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটিয়েছে সে বিষয়ে খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে। এরপর দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ঘটনার পরে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান জেলা পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তা ও বিএনপির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত। এ সময় তিনি উপস্থিত সাংবাদিকদের অমিত বলেন, ‘আওয়ামী লীগের মিছিল থেকে কার্যালয়ে আগুন দেয়া হয়েছে। তখন কার্যালয়ে কেউ ছিলো না। বিনা উস্কানিতে তারা পরিকল্পিতভাবে মিছিল নিয়ে কার্যালয়ে আগুন দিয়েছে। তিনি বলেন, যশোরে অতীতে বিএনপির কার্যালয় হামলা ভাংচুর করা হয়েছে। শীর্ষ নেতাদের বাড়ি ভাংচুর করা হয়েছে। এটা কারা করেছে, সেটা কারোও অজানা নয়। এটি শাষক দলের চরিত্র। সেই হামলার ভাংচুরের পুনরাবৃত্তিতেই বিএনপির দলীয় কার্যালয় ভাংচুর ও আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ বিষয়ে আলোচনা করে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করা হবে।