বাংলার ভোর প্রতিবেদক
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে যশোর থেকে অর্ধলক্ষাধিক নেতাকর্মী ও সমর্থক ঢাকায় যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এ উপলক্ষে ‘যশোর স্পেশাল’ ট্রেন ছাড়াও বাস, মাইক্রোবাস ও প্রাইভেট কারে করে ঢাকায় যাবেন নেতাকর্মীরা। বুধবার সন্ধ্যার পর থেকে বিভিন্ন যানবাহনে এসব নেতাকর্মীরা ঢাকার উদ্দেশ্য রওনা দেবেন।
যশোর জেলা বিএনপির সভাপতি সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু বলেন, ‘যশোরের প্রতিটি ইউনিয়ন থেকে অন্তত ৫০০ জন করে নেতাকর্মীকে ঢাকায় যাওয়ার নির্দেশনা রয়েছে। জেলায় আটটি উপজেলায় মোট ইউনিয়নের সংখ্যা ৯৩টি ও ৮টি পৌরসভা রয়েছে। সবমিলিয়ে ৫০ হাজার নেতাকর্মী ঢাকাতে যাবে বলে ধারণা করছি। ইতোমধ্যে যশোর জেলার সব বাস ভাড়া হয়ে গেছে। শুধু বাস নয়, ট্রাক, মাইক্রোবাস, ট্রেন, প্রাইভেটকার এমনকি মোটরসাইকেল করেও আমাদের নেতাকর্মীরা ঢাকায় যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছেন।’
জেলা বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, বিএনপির পাশাপাশি ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, কৃষক দলসহ সব অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরাই ঢাকায় যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছেন। দীর্ঘদিন পর দলের শীর্ষ নেতৃত্বের দেশে ফেরাকে কেন্দ্র করে তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত নেতাকর্মীদের মধ্যে উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। ইউনিয়ন, উপজেলা বিএনপির সভাপতি-সম্পাদকের নেতৃত্বে যার যার ইউনিয়ন থেকে বাস মাইক্রোবাস ভাড়া করেছে। উপজেলা শহর ছাড়াও যশোরের মনিহার, নিউ মার্কেট, উপশহর মাঠ, খাজুরা, বাঘারপাড়া, ঝিকরগাছা বিএম হাই স্কুল, বেনাপোল বল ফিল্ড মাঠ, শার্শা, বাগআঁচড়া , মনিরামপুর বাজার, কেশবপুর, চৌগাছা বাজার, অভয়নগর , নওয়াপাড়া থেকে বিভিন্ন বাস ঢাকার উদ্দেশ্য ছেঁড়ে যাবেন। এছাড়া ‘যশোর স্পেশাল’ নামে যশোর থেকে একটি ট্রেন বিশেষ বরাদ্দ নিয়েছে বিএনপি। রাত ১২ টা ১৫ মিনিটে ট্রেনটি যশোর স্টেশন থেকে ছেড়ে যাবে।
যশোর জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব রাজিদুর রহমান সাগর বলেন, ‘আমাদের নেতা তারেক রহমানের এই স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকে স্মরণীয় করে রাখতে তার সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে অগণিত মানুষের সমাগমের প্রত্যাশা করছি আমরা। দীর্ঘ ১৭ বছর প্রবাস জীবন শেষে দেশে ফিরছেন আমাদের নেতা। তারেক রহমানকে এক নজর দেখার জন্য যশোরের নানা প্রান্ত থেকে যে যেভাবে পারছেন ঢাকার দিকে ছুটে যাচ্ছেন।’
জেলা যুবদলের সদস্যসচিব আনসারুল ইসলাম রানা বলেন, ‘দীর্ঘ ফ্যাসিবাদের নিপীড়ন সহ্য করে তারেক রহমান অবশেষে দেশে ফিরছেন। জেলার প্রতিটি ইউনিট থেকে নেতাকর্মীরা ঢাকায় যাচ্ছেন। জেলার আটটি উপজেলা থেকে প্রায় ৩০ হাজার যুবদলের নেতাকর্মী ঢাকায় যাওয়ার প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন। তারা কীভাবে ঢাকায় পৌঁছাবেন, সে বিষয়ে একটি রোডম্যাপ ইতোমধ্যে ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত পৌঁছে দেয়া হয়েছে। এই প্রত্যাবর্তন বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন অধ্যায়ের সূচনা করবে।
বিএনপির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত বলেন, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের আগমনকে কেন্দ্র করে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনা বিরাজ করছে। নেতাকর্মীরা বাস, মাইক্রোবাস ও ব্যক্তিগত যানবাহনের পাশাপাশি যেসব এলাকায় ট্রেন যোগাযোগ আছে, সেসব এলাকা থেকে ট্রেনের মাধ্যমেও ঢাকায় যাওয়ার চেষ্টা করবেন। ইতোমধ্যে কিছু নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ ঢাকা অভিমুখে যাত্রা শুরু করেছেন বলেও তিনি জানান।
যশোর রেলওয়ে স্টেশনের স্টেশন মাস্টার সাইদুজ্জামান বলেন, ‘বুধবার সকাল থেকে স্বাভাবিক দিনের চেয়ে এদিন ঢাকাগামী ট্রেনগুলোর ভিড় বেশি। কোন টিকিট না থাকলেও দাঁড়িয়ে এসব ট্রেনে ঢাকাতে যাচ্ছেন। যশোর থেকে ঢাকাগামী ট্রেনে বিএনপির পক্ষ থেকে একটি বিশেষ ট্রেন বরাদ্দ নিয়েছে। যশোর স্পেশাল নামে ওই ট্রেনটি বুধবার রাত ১২টা ১৫ মিনিটে যশোর ছেড়ে যাবে। ট্রেনটি ৪১৫টি সিট থাকলেও কয়েক হাজার যাত্রী যেতে পারবে বলে জানান তিনি
