বাংলার ভোর প্রতিবেদক:
যশোর শহরের হযরত বোরহান শাহ সড়কের ওয়াপদা মোড়ের মফিজুর রহমান নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে পৌরসভার জমি দখল করে ঘর নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। পৌর কর্তৃপক্ষ নির্মাণাধীন স্থাপনাকে অবৈধ উল্লেখ করে তা ভেঙ্গে অপসারণের জন্য একাধিকবার চূড়ান্ত নোটিশ প্রদান করেছে। মফিজুর রহমান সেটিকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে নির্মাণ কাজ অব্যাহত রেখেছেন।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে অভিযুক্ত মফিজুর রহমান বলেন, ‘আমি এখনো নোটিশের জবাব দেয়নি। ওই জমির দলিলপত্র আমার কাছে আছে, আমি পৌরসভার এক ইঞ্চি জমিও নেব না। কে বা কারা আমার সাথে শত্রুতামূলকভাবে এই কাজটি করছে।’
জানা যায়, মফিজুর রহমান হযরত বোরহান শাহ সড়কের ওয়াপদা মোড়ের তার বসত বাড়ির উত্তর পাশের রাস্তার জায়গা দখল করে নতুন দোকান ঘর নির্মাণ করছেন। নির্মাণধীন নতুন দোকান ঘরের পূর্ব পাশের জায়গা পূর্বে দখল করে আরও তিনটি দোকান ঘর করেছেন। পৌর কর্তৃপক্ষ জায়গাটি মানুষের চলাচলের জন্য ফেলে রেখেছিল। কিন্তু স্থানীয় প্রভাবশালীদের সহযোগিতায় তিনি ওই জায়গা দখল করে দোকান ঘর নির্মাণ করছেন। মফিজুরকে কাজ বন্ধের জন্য চলতি বছরের ৮ মে নোটিশ প্রদান করা হয়। নোটিশে বলা হয়, মফিজুর রহমান তার বসত বাড়ির উত্তর এবং পূর্ব পাশে রাস্তার জায়গা দখল করে আরসিসি কলাম নির্মাণ শুরু করলে উক্ত নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ প্রদান করা হয়। কিন্তু মফিজুর রহমান নোটিশের সন্তোষজনক জবাব না দিয়ে এবং নোটিশের নির্দেশ অমান্য করে কলাম নির্মাণ ও পুরাতন ভবনের সাথে সংযুক্ত করে এবং রাস্তার দিকে আরো বর্ধিত করে ছাদ ঢালাই কাজ সম্পন্ন করে।
এরপর ২৯ মে পৌর কর্তৃপক্ষ মফিজুর রহমান দোকান ঘর নির্মাণের বিষয়টি বে-আইনী উল্লেখ করে আরেকটি নোটিশ প্রদান করে। কিন্তু মফিজুর রহমান নোটিশটি নিতে অস্বীকার করায় পৌর কর্তৃপক্ষ সেটি তার বাড়ির সদর দরজায় সাটিয়ে দেয়। নোটিশে পৌর কর্তৃপক্ষের নির্দেশ অমান্য করে মফিজুর রহমানের দোকান করার নির্মাণ কাজ চালানোর বিষয়টিকে বেআইনী এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে উল্লেখ করা হয়। সর্বশেষ ২৫ জুন পৌর কর্তৃপক্ষ মফিজুর রহমানকে পুনরায় নোটিশ প্রদান করে। নোটিশে মফিজুর রহমানকে তার বসত বাড়ির পূর্ব পাশের রাস্তার জায়গায় নির্মিত সেমিপাকা দোকান ঘর এবং উত্তর পাশে বর্তমানে নির্মাণাধীন পাকা ভবনসহ পৌরসভার অনুমোদনহীন তার সকল স্থাপনা ভেঙে অপসারণ করে পৌর কর্তৃপক্ষকে অবহিত করার জন্য বলা হয়। নির্দেশ অমান্য করলে কোন প্রকার নোটিশ প্রদান ব্যতিরেকে পৌরসভার পক্ষ থেকে উক্ত স্থাপনা ভেঙে অপসারণ করা হবে। যাবতীয় খরচ উন্নয়ন কর হিবেসে মফিজুরের কাছ থেকে আদায় করাসহ তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে ।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, মফিজুর রহমান প্রভাবশালী লোকদের সহায়তায় রাস্তার জায়গা দখল করে দোকান ঘর নির্মাণ করছেন। ঘরটি নির্মাণের ফলে এ পথ দিয়ে আমাদের চলাচলের জায়গা নেই। এখন ঝুঁকি নিয়ে আমাদের চলাচল করতে হবে।’
যশোর পৌরসভার মেয়র হায়দার গনী খান পলাশ বলেন, ‘তাকে বারবার নোটিশ দেয়া হচ্ছে। কিন্তু কর্ণপাত না করে নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। মফিজুর যদি দোকান ঘর ভেঙ্গে সরিয়ে না নেন, তাহলে নির্দেশ অমান্য করার কারণে পৌর কর্তৃপক্ষ স্থাপনা ভেঙ্গে অপসারণ করবে। জরিমানাসহ তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’