বাংলার ভোর প্রতিবেদক
যশোর-২ (ঝিকরগাছা- চৌগাছা) আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও ঝিকরগাছা উপজেলা বিএনপির সভাপতি সাবিরা সুলতানা মুন্নী নির্বাচনের মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত নির্বাচনে গণসংযোগে ব্যস্ত সময় পার করছেন। অপরদিকে বসে নেই মনোনয়ন বঞ্চিতরাও। বঞ্চিতরা একাট্টা হয়ে সাবিরা মুন্নীর দলীয় মনোনয়ন বাতিলের দাবিতে নানা কর্মসূচি পালন করছে। ওই সব কর্মসূচিতে ধানের শীষের প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে নেতিবাচক বক্তব্য ও অপপ্রচার চালানোর হচ্ছে। এতে দলের পাশাপাশি প্রার্থীর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে। এ বিষয়টি আমলে নিয়েছে বিএনপির হাইকমান্ড। ইতোমধ্যে যুবদল ও ছাত্রদলের চার নেতার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিয়েছে কেন্দ্রীয় কমিটি। সর্বশেষ ২২ নভেম্বর ঝিকরগাছা উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক মোনাজ্জেল হোসেন লিটন ও ঝিকরগাছা পৌর যুবদলের আহ্বায়ক আরাফাত হোসেন কমলকে ও ২০ নভেম্বর ঝিকরগাছা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আশরাফুল আলম রানা ও সদস্য সচিব শাহিন আলমকে শোকজ করা হয়েছে।
জাতীয়তাবাদী যুবদলের কেন্দ্রীয় সহদপ্তর সম্পাদক মিনহাজুল ইসলাম ভুঁইয়া স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়েছে, মোনাজ্জেল হোসেন লিটন ও আরাফাত হোসেন কমল উপজেলা ও পৌর যুবদলের গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন থাকার পরও জনসম্মুখে আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি মনোনীত ধানের শীষের প্রার্থীর বিরুদ্ধাচরণ করছেন মর্মে যুবদল কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির দৃষ্টিগোচর হয়েছে। সংগঠনের শৃংখলা বিনষ্টকারী এহেন কর্মকাণ্ডের জন্য আপনাদের বিরুদ্ধে কেন সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা আগামী তিন দিনের মধ্যে কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সামনে উপস্থিত হয়ে বাখ্যা দেয়ার নির্দেশ দেয়া হল।’ এর আগে ২০ নভেম্বর কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলমের স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে ঝিকরগাছা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আশরাফুল আলম রানা ও সদস্য সচিব শাহিন আলম বিপ¬বকে শোকজ কর হয়। চিঠিতে উলে¬খ করা হয়, উপজেলা ছাত্রদলের দায়িত্বশীল পদে আসীন থেকে আপনারা ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থীর বিরুদ্ধে নানা কর্মকান্ড করছেন। যা সুস্পষ্টভাবে সাংগঠনিক শৃঙ্খলা পরিপন্থী কাজ। এমতাবস্থায় সাংগঠনিক পরিপস্থী কাজে জড়িত থাকার অভিযোগে কেন স্থায়ী সাংগঠনিক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না এই মর্মে আগামী ৪৮ ঘন্টার মধ্যে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি-সম্পাদকের উপস্থিতিতে সংগঠনের কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে লিখিতভাবে ব্যাখা প্রদানের নির্দেশ দেওয়া হলো।’
শুধু যুবদল ও ছাত্রদলের এই চার নেতা নয়, তাদের মত বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবকদল, ছাত্রদলের বিভিন্ন স্তরের নেতারা প্রকাশ্যেই কর্মসূচিতে সাবিরা সুলতানা মুন্নীর বিরুদ্ধাচরণ করে বক্তব্য রাখছেন। বিএনপির নেতাকর্মীরা বলছেন, যশোর-২ আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন অন্তত পাঁচজন নেতা। মনোনয়ন পেয়েছেন সাবিরা সুলতানা মুন্নী। বঞ্চিত নেতারা সাবিরা সুলতানা মুন্নীর দলীয় মনোনয়ন বাতিলের দাবিতে একাট্টা হয়েছেন। তারা ধারাবাহিক নানা কর্মসূচি পালন করছেন। এসব কর্মসূচির মাধ্যমে দলের অভ্যন্তরে সাবিরা সুলতানা মুন্নীর বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তোলার চেষ্টা চলছে। তাকে অযোগ্য প্রমাণের চেষ্টা করছেন বঞ্চিতরা। এতে প্রার্থীর পাশাপাশি দলের ভাবমূর্তিও ক্ষুণ্ন হচ্ছে। প্রতিপক্ষের রাজনৈতিক দলের সমালোচনার রসদ জোগাচ্ছেন বঞ্চিতদের অনুসারীরা। জানতে চাইলে যশোর-২ আসনের বিএনপি মনোনীত প্রার্থী সাবিরা সুলতানা মুন্নী বলেন, যারা দলের শৃংখলা বিরোধী কর্মকাণ্ড করছেন, তারা দলের হাইকমাণ্ডের নিবিড় পর্যবেক্ষণের ভেতরেই আছেন। ইতোমধ্যে কারো কারো বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিয়েছে। তাদের বিষয়টি দল দেখবে। এ বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই। দল আমাকে মনোনয়ন দিয়েছে। ধানের শীষকে বিজয়ী করতে নিরলসভাবে কাজ করছি। তৃণমূলের মানুষের কাছে যাচ্ছি। জনগণের ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি।

