সাতক্ষীরা সংবাদদাতা
সাতক্ষীরা শহরের প্রাণকেন্দ্র প্রাণ সায়েরের খাল এক সময়ে ভরা যৌবন নিয়ে প্রবাহমান ছিল। কিন্তু যৌবন হারিয়ে সেটি এখন ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। খালটিতে এখন ফেলা হচ্ছে ইচ্ছেমতো ময়লা-আবর্জনা। অন্যদিকে খালের দুইধার দখল করে তোলা হচ্ছে অবৈধ স্থাপনা। যার ফলে দখল আর দূষণে খালটি এখন অস্তিত্ব সংকটে ভুগছে। পচা দুর্গন্ধ থেকে বাচার তাগিদে নাক চেপে রাস্তা পার হচ্ছেন মানুষজন। এটা দেখার যেন কেও নাই।
আজ (মঙ্গলবার) সরজমিনে গিয়ে দেখা যাই সাতক্ষীরা শহরের পাকাপোল, কেষ্টময়রার ব্রিজ, সুলতানপুর বড় বাজার ব্রিজসহ প্রাণ সায়েরের খালের দুইধার দিয়ে যেসব অস্থায়ী অবৈধ দোকান পাট গোড়ে উঠেছে তাদের দোকানের অবশিস্ট ময়লা আর্বজনা ফেলার কারণে খালের পানি পচে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে।
স্থানীয় লোকজন জানান, ১৮৫০ সালের দিকে সাতক্ষীরার জমিদার প্রাণনাথ রায় চৌধুরী নদীপথে ব্যবসা-বাণিজ্যের সুবিধা ও শহরের শ্রীবৃদ্ধির জন্য খালটি খনন করেন। মরিচ্চাপ নদের সঙ্গে বেতনা নদীর সরাসরি যোগাযোগ রক্ষার জন্য সাতক্ষীরা শহরের ওপর দিয়ে ১৪ কিলোমিটার এ খাল খনন করা হয়। খুলনা, বরিশাল, ঢাকা, কলকাতাসহ বিভিন্ন স্থানের সঙ্গে প্রধান যোগাযোগের মাধ্যম ছিল এ খাল। এ খালের মাধ্যমে সহজ হয়ে উঠেছিল জেলার অভ্যন্তরীণ যোগাযোগও। জমিদার প্রাণনাথ রায় চৌধুরীর নাম অনুসারে খালটির নামকরণ করা হয় প্রাণসায়ের খাল।
স্থানীয় বাসিন্দা ইমরান হোসেন জানান, এই প্রাণ সায়েরের খালপাড়ের সড়ক যাতায়াত করা হাজারো মানুষকে নাক চেপে ধরে চলাচল করতে হয়। খালে আশপাশের বাসিন্দারা ছাড়াও ব্যবসায়ীরা ময়লা ও আবর্জনা ফেলে দুর্গন্ধময় পরিবেশ সৃষ্টি করেছেন। এতে সাতক্ষীরা শহরের পরিবেশ অনেক দূষিত হয়ে পড়েছে। ফলে ভারসাম্য হারিয়ে ফেলছে জনমানব।
স্বদেশের নির্ববাহী পরিচালক ও মানবধিকারকর্মী মাধব চন্দ্র দত্ত প্রাণ সায়ের খালকে যারা ভাগাড়ে পরিণত করছে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন।
সাতক্ষীরা পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত মেয়র ফিরোজ হাসান বলেন, মানুষ যাতে খালটিতে ময়লা-আবর্জনা না ফেলেন, সে জন্য বারবার বলা হচ্ছে। কিন্তু কেউ শুনছেন না। জেলা প্রশাসকের সঙ্গে আলাপ করেছি। খুব দ্রুত এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ূন কবির জানান, প্রাণ সায়ের খালপাড়ের বাসিন্দা ও দোকানদারদের নোটিশ করে নিষেধ করা হবে। তারা না শুনলে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা ছাড়া অন্য কোনো উপায় থাকবে না। খাল রক্ষায় দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।