নড়াইল সংবাদদাতা
নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলা পরিষদের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নামে চিঠি দিয়ে মহান স্বাধীনতা দিবস ২৬ মার্চ উপলক্ষে লোহাগড়া-লক্ষীপাশা বাজারে বিভিন্ন হোটেল ও মিষ্টান্ন ভান্ডার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে চাঁদা আদায় করার অভিযোগ উঠেছে।
সাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নামে চিঠি বিতরণ করে বাধ্যতামূলক ৪/৫ হাজার টাকা করে চাঁদা দাবি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সূত্রে জানা যায়, লোহাগড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসের অফিস সহকারী শরিফুল ইসলাম বিভিন্ন মিষ্টান্ন ভান্ডার ও হোটেলে গিয়ে সাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনিমেষ বিশ্বাসের নাম ইস্যু করা একটি চিঠি দিয়ে বিভিন্ন পরিমাণে চাঁদা দাবি করছেন।
ব্যবসায়ীরা আরো বলছেন, এরকম চাঁদা নিতে আমরা আগে পরে কখনো কোনদিন দেখিনি। কিন্তু এবছর স্বাধীনতা দিবসের কথা বলে আমাদের কাছ থেকে বাধ্যতামূলক চাঁদা দাবি করা হচ্ছে। যা আমাদের সাধ্যের বাইরে। আমরা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে জানতে চাই? এটা কি সরকারি নির্দেশনা আছে?
ব্যবসায়ীরা আরো বলেন, আমরা জানি স্বাধীনতা দিবস আমাদের বাঙালি জাতির অন্যতম একটি দিন। ১৯৭১ সালের এই দিনে ৩০ লক্ষ শহীদের রক্তের বিনিময়ে আমরা ফিরে পেয়েছিলাম আমাদের স্বাধীনতা। প্রতিবছরে বিভিন্ন আয়োজনের মধ্য দিয়ে পালিত হয় এই দিনটি। আমরা যার যতটুকু সাধ্য সেই সাধ্যমত চেষ্টা করি স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করতে।
লক্ষ্মীপাশা বাজারের সুস্বাদু হোটেলের মালিক, সনাতন কুমার কুন্ডু, রউফ মিষ্টান্ন ভান্ডরের মালিক নিজাম উদ্দিন শেখ, মোল্লা সুইটসের মালিক, মোহাম্মদ মনির আহমেদ ও মুসলিম সুইটস্রে মালিক, মফিদুল ইসলাম বলেন, এখন রমজান মাস। এমনিতেই আমাদের বেচাকেনা কম। উপজেলা নির্বাহী অফিস থেকে আমাদেরকে একটা চিঠি দিয়ে জোরপূর্ব টাকা দাবি করা হচ্ছে। আমরা ব্যবসা করি বিভিন্ন সময় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে আমাদেরকে জরিমানা করেন। এ সমস্ত ভয়ে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান টিকিয়ে রাখতে আমরা অনেক সময় বাধ্য হই টাকা দিতে। অথচ এরকম কোন নিয়ম সরকার থেকে নেই বলে আমাদের ধারণা।
এ বিষয়ে অফিস সহকারী শরিফুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, প্রতিবছরই আমাদের ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন জায়গায় চিঠির মাধ্যমে দাওয়াত করতে হয়। সেই দাওয়াতের অংশ ছিল এই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোই। কিন্তু কোন দোকানে বাধ্যতামূলক টাকার কথা বলা হয়নি। বিষয়টি বর্তমান ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা আফরিন জাহান অবগত আছেন।
এ বিষয়ে লোহাগড়া বাজার বণিক সমিতির সভাপতি ইবাদত শিকদারের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এভাবে চিঠি দিয়ে টাকা নেয়ার কোন নিয়ম নেই। প্রতিবছর স্বাধীনতা দিবস যথাযথ মর্যাদায় আমরা নিজেদের মতো পালন করে থাকি। যদি নির্বাহী অফিসের কেউ এরকম করে থাকে, সেটা আইন বহির্ভুতভাবে করেছে। আমরা বাজারের যত দোকানদাররা আছে সবাইকে বলে দিব জোরপূর্বক কেউ টাকা নিতে আসলে যেন টাকা না দেয়া হয়।
এ ব্যাপারে লোহাগড়া উপজেলার ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা আফরিন জাহানের সাথে মুঠো ফোনে কথা হলে তিনি বলেন, ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবসের চিঠির ব্যাপারে আমার জানা নেই। এরকম কোন নির্দেশনাও দেয়া হয়নি। আমি বিষয়টি আমাদের অফিসের অফিস সহকারী শরিফুলের সাথে কথা বলে দেখছি।