বাংলার ভোর ডেস্ক
অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে যশোর-৬ (কেশবপুর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শাহীন চাকলাদারসহ তিনজনের দুর্নীতির অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দদমন কমিশন (দুদক)। অন্য দুজন হলেন- নোয়াখালী-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এইচ এম ইব্রাহিম ও রংপুরের সাবেক উপপুলিশ মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) আব্দুল বাতেন। রোববার দুদকের কমিশন সভায় এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন এই তথ্য জানান। শাহীন চাকলাদারের বিরুদ্ধে অভিযোগে বলা হয়, ক্ষমতার অপব্যবহার করে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন। তার নামে যশোর চিত্রাড় মোড়ে যাবির ইন্টারন্যাশনাল নামে পাঁচ তারকা হোটেল এবং শহরের কাঁঠালতলায় ‘হোয়াইট হাউস’ নামে সুরম্য অট্টালিকা রয়েছে।
অভিযোগে আরও বলা হয়, তিনি ক্ষমতার অপব্যবহার, নানাবিধ অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে নিজ ও আত্মীয়-স্বজনের নামে দেশে-বিদেশে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন। তার অবৈধভাবে অর্জিত জ্ঞাত-আয় বহির্ভুত সম্পদ রয়েছে মর্মে দুদেকর গোয়েন্দা তথ্যানুসন্ধানে প্রাথমিকভাবে সঠিক পরিলক্ষিত হওয়ায় অভিযোগটি প্রকাশ্য অনুসন্ধানের জন্য কমিশন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।
অন্য একটি অভিযোগে নোয়াখালী-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এইচ এম ইব্রাহিমের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আনা হয়েছে। অভিযোগের বিষয়ে বলা হয়েছে, তিনি ক্ষমতার অপব্যবহার, বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন।
তথ্যানুসন্ধানে তার নিজ নামে ১৬ কোটি ১৪ লাখ ৫৫ হাজার ৭৯ টাকার অস্থাবর সম্পদ এবং তার স্ত্রীর নামে ৩ কোটি ৬৫ লাখ ৫২ হাজার ৫৫ টাকার অস্থাবর সম্পদ এবং ২ কোটি ৬৫ লাখ ১৩ হাজার ৬০০ টাকার স্থাবর সম্পদসহ মোট ২২ কোটি ৪৫ লাখ ২০ হাজার ৭৩৪ টাকার সম্পদ অর্জনের তথ্য পাওয়া যায়। অবৈধভাবে অর্জিত জ্ঞাত-আয় বর্হিভূত সম্পদ অর্জনের বিষয়টি প্রাথমিকভাবে সত্যতা থাকায় অভিযোগটি প্রকাশ্য অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয়। একই দিনে রংপুর রেঞ্জের সাবেক উপপুলিশ মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মো. আব্দুল বাতেনের দুর্নীতির অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুদক। তার বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ থাকায় এই সিদ্ধান্ত নেয় সংস্থাটি।
অভিযোগ রয়েছে, আব্দুল বাতেনের নামে ৯৮ বড় মগবাজারের ৫০৪/২ রোকেয়া টাওয়ারে কোটি টাকার ফ্ল্যাট, ধামনন্ডি, বারিধারা, গুলশান, সিদ্দেশ্বরীতে ফ্ল্যাট এবং স্ত্রীর নামে পূর্বাচলে প্লট, পুলিশ হাউসিং সোসাইটিতে বিনিয়োগসহ বিভিন্ন ব্যাংকে প্রচুর টাকা জমা রয়েছে মর্মে রয়েছে বলে জানায় দুদক। এ ছাড়াও তিনি দেশে-বিদেশে বিপুল সম্পদ স্বনামে-বেনামে ক্রয় করে রেখেছেন। তার অবৈধভাবে অর্জিত জ্ঞাত-আয় বর্হিভূত সম্পদ থাকার বিষয়টি গোয়েন্দা তথ্যানুসন্ধানে প্রাথমিকভাবে সঠিক রয়েছে বলে জানায় দুদক।
প্রসঙ্গত, গত ৫ আগস্টের সরকার পতনের আটদিন পর অর্থাৎ ১৩ আগস্ট রংপুর সাবেক এই ডিআইজিকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়।