বাংলার ভোর প্রতিবেদক
একজন সৎ ও নিরপরাধ যুবককে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তার মা নাছিমা খানম। মঙ্গলবার প্রেসক্লাব যশোরে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই অভিযোগ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে কান্নায় ভেঙে পড়েন নাছিমা খানম। তিনি বলেন, তার একমাত্র ছেলে নাহিদ হাসান বাঁধন (৩০) দীর্ঘদিন ধরে যশোর কনসালটেন্সি ফার্ম, কাজীপাড়া বিমান অফিস মোড়ে সুনামের সঙ্গে চাকরি করছেন। তার বিরুদ্ধে থানায় আগে কোনো অভিযোগ বা মামলা ছিল না।
নাছিমা খানম অভিযোগ করে বলেন, গত ১০ মে শনিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে কর্মস্থল থেকে তার ছেলেকে পুলিশ একটি মিথ্যে ও সাজানো ধর্ষণ মামলায় গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে যায়। পরে তিনি জানতে পারেন, মামলাটি করেছেন নাজনীন নাহার তিশা নামে এক নারী।
সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়, নাজনীন নাহার তিশা কলেজে পড়ার সময় নাহিদ হাসানের সঙ্গে পরিচিত হন এবং পরবর্তীতে তাদের মধ্যে ব্যক্তিগত সম্পর্ক তৈরি হয়। তিশা একটি প্রতারক চক্রের সদস্য, যারা সম্পর্ক তৈরি করে গোপনে ছবি ও ভিডিও ধারণের মাধ্যমে ব্ল্যাকমেইল করে অর্থ আদায় করে থাকে। একই কৌশল অবলম্বন করে তিশা তার ছেলে বাঁধনের কাছেও পাঁচ লাখ টাকা দাবি করেন। এই অর্থ দিতে অস্বীকৃতি জানালে তার ছেলেকে মিথ্যা ধর্ষণ মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন নাছিমা খানম।
নাছিমা খানম আরও অভিযোগ করেন, তিশার চক্রের সদস্যরা তার ছেলেকে অপহরণ করে মারধর করে এবং তিনটি ব্ল্যাঙ্ক স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেয়। এরপর নগদ ও বিকাশের মাধ্যমে তিন লাখ টাকা আদায় করে এবং বিয়ের জন্য চাপ প্রয়োগ করে। সর্বশেষ গত ১ লা মে রাত ১০টার দিকে ওই চক্রের সদস্যরা তাদের বাড়িতে গিয়ে তার ছেলেকে না পেয়ে পরিবারের সদস্যদের গালিগালাজ ও মারধর করে এবং ধর্ষণ মামলার হুমকি দেয়।
তিনি আক্ষেপের সঙ্গে জানান, তার ছেলে বাঁধন ও ওই নারীর বিরুদ্ধে কোতোয়ালি থানায় এর আগে ২৮ মার্চ ও ২রা মে দুটি অভিযোগ দায়ের করা হলেও কোনো আইনি প্রতিকার পাওয়া যায়নি। বর্তমানে তার ছেলে মিথ্যা ধর্ষণ মামলায় জেল হাজতে রয়েছেন এবং তাদের পরিবার চরম নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন।
সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে নাছিমা খানম ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং তার ছেলের নির্দোষ প্রমাণপূর্বক মামলা থেকে অব্যাহতির জোর দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে নাসিমা খানমের ছেলের স্ত্রী লাবণী খাতুন, মেয়ে সুমনা ও অন্যান্য আত্মীয়-স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন। তারা সকলেই তাদের স্বজনের মুক্তি ও ন্যায়বিচার দাবি করেন।