বাংলার ভোর প্রতিবেদক
ইসলাম ধর্ম প্রচারক, আধ্যাত্মিক জ্ঞানের সাধক, বঙ্গের বিখ্যাত সুবক্তা, সমাজ সংস্কারক, বাংলা সাহিত্যের একজন খ্যাতিমান লেখক ছিলেন মুনশী মেহেরুল্লাহ ১৬৩তম আবিভাব দিবস উপলক্ষে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে প্রাচ্য সংঘ যশোরে ‘মুনশী মেহেরুল্লাহ জীবন ও কর্ম’ উপরে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
বাংলাদেশ মুসলিম জাগরণে মুনশী মেহেরুল্লাহ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক আজাহারুল ইসলাম। প্রাচ্য আকাডেমীর অধ্যক্ষ আশরফ হোসেনে সভাপতিত্ব সভায় বক্তব্য রাখেন প্রাচ্যসংঘের প্রতিষ্ঠাতা বিশিষ্ঠ লেখক ,গবেষক সাংবাদিক বেনজীন খান, মুনশী মেহেরুল্লাহ দৌহিত্র কর্নেল (অবঃ) মুন্সী মেহের মহব্বত হোসেন, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ মুনশী নাজমুল হাসান, বিশিষ্ট লেখক ও আইনজীবী অ্যাড. এনামুল হক, অ্যাড.শামসুল হক, বিশিষ্ট লেখক সিনিয়র সাংবাদিক হারুন জামিল, প্রেসক্লাব যশোরে সাবেক সম্পাদক আহসান কবীর বাবু প্রমুখ।
বাংলাদেশ মুসলিম জাগরণে মুনশী মেহেরুল্লাহ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তরা বলেন, মুনশী মেহেরুল্লাহ সমাজ সংস্কার ও জনকল্যাণকর কাজে জড়িত ছিলেন। ইংরেজদের শোষণ, দমন-পীড়ন এবং খ্রিষ্টান পাদ্রিদের ইসলাম বিদ্বেষী বক্তৃতা বঙ্গের মুসলমানদের বিভ্রান্ত ও অতিষ্ঠ করে তোলে। এমন অবস্থা মানুষ বিভ্রান্ত ও ঈমানহারা হয়ে অনেকেই খ্রিষ্টানদের প্ররোচনায় খ্রিষ্টধর্ম গ্রহণ করে। এ সময় মুনশী মেহেরুল্লাহর দেখলেন এমন অবস্থা চলতে থাকলে বাংলায় ইসলাম ধর্ম টিকিয়ে রাখা অসাধ্য হয়ে উঠবে। তিনি তার তেজদীপ্ত কন্ঠে আওয়াজ তোলেন এবং খ্রিষ্টান পাদ্রিদের অপপ্রচারের বিরুদ্ধে হাতে কলম তুলে নেন। তখন মেহেরুল্লাহ সাপ্তাহিক ‘সুধাকর পত্রিকায় ‘ইশায়ী বা খ্রিস্টানী ধোঁকা ভাজন’ শীর্ষক এক দীর্ঘ প্রবাদ প্রকাশ করে।
উনিশ শতকের শেষের দিকে মুনশী মেহেরুল্লাহ বিভ্রান্ত দিশেহারা কুসংস্কারাচ্ছন্ন মুসলমানদেরকে মুক্ত করতে সক্ষম হয়েছিলেন। মুন্সী মেহেরুল্লাহর লিখিত ‘হিন্দুধর্ম রহস্য ও দেবলীলা, বিধবা গঞ্জনা, বিষাদ ভান্ডার, মেহেরুল এসলাম, মুসলমান ও খ্রীষ্ঠান তর্কযুদ্ধ’ বইগুলো সমাজে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল। মুনশী মেহেরুল্লাহ ১৮৬১ সালের ২৬ ডিসেম্বর যশোর সদর উপজেলার চুড়ামনকাটি ইউনিয়নের ছাতিয়ানতলা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৯০৭ সালের ৭ মে মৃত্যুবরণ করেন।
এ দিকে জানুয়ারি ৩ তারিখে বাদিয়াটোলা গ্রামে ‘মুন্সী মোহাম্মদ মেহেরুল্লাহ প্রাইমারী’ স্কুল প্রাঙ্গণে জন্মজয়ন্তী উৎসব ও মেলার আয়োজন করা হয়েছে। এবং ১৫ জানুয়ারিতে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (যবিপ্রবি) মুন্সী মোহাম্মদ মেহেরুল্লাহ হলে জন্মজয়ন্তী পালন করা হবে।