বিবি প্রতিবেদক
যশোর-৪ (বাঘারপাড়া-অভয়নগর ও বসুন্দিয়া) আসনে দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী এনামুল হক বাবুলকে সমর্থন জানিয়ে সরে দাঁড়িয়েছেন ওই আসনের বহুলালোচিত বর্তমান সংসদ সদস্য ও স্বতন্ত্র প্রার্থী রনজিত কুমার রায়।
গতকাল বেলা ১টার দিকে এ কথা নিজেই জানান তিনবারের সংসদ সদস্য রনজিত কুমার রায়।
এর ফলে দীর্ঘ ১৫ বছর পর রনজিত মুক্ত হলো যশোর-৪ আসনের আপামর মানুষ। নানা অপকর্ম ও দুর্নীতি-স্বজনপ্রীতি আর সন্ত্রাসের সমালোচিত এই এমপির নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষনায় এই আসনে নির্বাচন নতুন মোড় নিয়েছে।
ওই আসনের রাজনীতি সংশ্লিস্টদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, রনজিত সরে যাওয়ার ফলে এ আসনে এখন মূলত লড়াই হবে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী এনামুল হক বাবুলের সাথে জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী এডভোকেট জহুরুল হকের সাথে। তারা বলেন, এনামুল হক বাবুল অভয়নগরের বাসিন্দা অপরদিকে জহুরুল হক বাঘারপাড়ার বাসিন্দা। পৃথক এই দুই উপজেলায় ওই দুই প্রার্থীর আলাদ ভোট ব্যাংক আছে। এছাড়া সদরের বসুন্দিয়া ইউনিয়টি দীর্ঘদিন ধরে জাতীয় পার্টির ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। এতে করে জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকের ভোট বেশ কিছুটা এগিয়ে থাকে। সেই সাথে দুই উপজেলার বিএনপি বা আওয়ামী বিরোধী ঘরানার ভোট যদি লাঙ্গলের প্রার্থী টানতে পারেন তাহলে হয়তো তার ভাগ্যে শিঁকে ছিড়তে পারে বা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাটা জোর হবে।
তবে রাজনীতি সংশ্লিষ্ট অপর একটি পক্ষ বলছে, বর্তমান সংসদ ঘোষণা দিয়ে নির্বাচন থেকে সরে গেলেও আদৌ তিনি এবং তার কর্মী সমর্থকরা নৌকার কাজ করবেন বা ভোট দেবেন নাকি শুধু দলের সিদ্ধান্ত মানতেই তিনি ঘোষণা দিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন।
এদিকে, দলীয় নেতাকর্মীকে নৌকার পক্ষে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে এমপি রনজিত রায় বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আমার প্রতীক ছিল ঈগল।
আমি বরাবরই বলে এসেছি নৌকার বিপক্ষে কখনও নির্বাচন করবো না। সে কারণেই প্রতীক বরাদ্ধের পরও আমি কোনো প্রকার প্রচারণা চালাইনি।’
জেলা নির্বাচন কার্যালয় সূত্র জানায়, বাঘারপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য রনজিত কুমার রায় ২০০৮ সালে ৯ম জাতীয় নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে প্রথমবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। প্রতিদ্বন্দ্বীতাপূর্ণ ওই নির্বাচনে রনজিত কুমার রায় পেয়েছিলেন ১ লাখ ২ হাজার ৯৫৮ ভোট।
সেবার নির্বাচনে তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী ছিলেন কেন্দ্রীয় বিএনপি নেতা ইঞ্জিনিয়ার টিএস আইয়ুব। তিনি ধানের শীষ প্রতীকে পেয়েছিলেন ৯৭ হাজার ৫২০ ভোট।
এরপর ২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন রনজিত কুমার রায়। এ নির্বাচনে তিনি ভোট পেয়েছিলেন ৭৬ হাজার ৯৪২ টি।
তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ছিলেন নিজ দলের প্রার্থী অধ্যক্ষ শেখ আব্দুল ওহাব। ওহাব কলস প্রতীক নিয়ে পেয়েছিলেন ৩৬ হাজার ২৮০ ভোট।
সর্বশেষ গত ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যশোর-৪ (বাঘারপাড়া-অভয়নগর) আসনে বিপুল ভোটে আওয়ামী লীগের নৌকার প্রার্থী রনজিৎ কুমার রায় জয়লাভ করেন। তিনি ভোট পেয়েছিলেন ২ লাখ ৭৬ হাজার ২৮১ ভোট।
রনজিত কুমার রায়ের নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি বিএনপির প্রার্থী টি এস আইয়ূব পেয়েছিলেন ২৫ হাজার ৯১৯ ভোট।
এই আসনে আরো প্রার্থী হয়েছেন, জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে অ্যাডভোকেট জহুরুল হক, তৃণমূল বিএনপির লে. কর্নেল (অব.) এম শাব্বির আহমেদ (সোনালী আঁশ), বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের সুকৃতি কুমার মন্ডল (নোঙ্গর) ও (মিনার) প্রতীক নিয়ে ইসলামী ঐক্যজোটের ইউনুস আলী।
শিরোনাম:
- যশোরে নারী সিএসও ও পরিষেবা প্রদানকারীদের মধ্যে সংযোগ স্থাপনে কর্মশালা
- সাবেক এমপি ইয়াকুবের বিরুদ্ধে মাছ লুটের মামলা
- যশোরে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মানববন্ধন
- ‘ফ্যাসিস্ট হাসিনার দোসররা অসহিষ্ণু আচরণ করে ছাত্র সমাজকে কলঙ্কিত করছে’
- যশোরে মাংস ও ডিমের দাম চড়া : নিম্ন ও মধ্যবিত্তের পাতে আমিষের টান
- চার দশকে ‘হাজার কোটি টাকা’ জলে ভবদহের ৩৪১ গ্রামের মানুষ পানিবন্দি
- সাবেক এমপি রণজিৎ রায়, সাবেক এসপি আনিসসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা
- যশোরে প্রয়াত নায়ক সালমান শাহ’র জন্মদিন উদযাপন