বাংলার ভোর ডেস্ক
বাংলাদেশ আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. তপন কুমার সরকার বলেছেন, সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ের কারণে এবছর এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফলে জিপিএ-৫ এর সংখ্যা বেড়েছে। কিন্তু পাশের হার কমেছে। এরপরও একটা গ্রহণযোগ্য রেজাল্ট দিতে পেরেছি।
তিনি বলেন, ‘সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ের কিছুটা প্রভাব শিক্ষার্থীদের মধ্যে থাকবেই। তবে সেটা উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করতে গিয়ে শিক্ষার্থীদের সমস্যা হবে না। কারণ যেখানেই তারা ভর্তি হতে যাক না কেন তাদের এডমিশন টেস্টের মধ্য দিয়ে তাদের ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবে। আর এ বিষয়ে লেখাপড়ারও প্রস্তুতি থাকে। ইন্টারন্যাশনালি এই সাবজেক্ট ম্যাপিং বিষয়টি রয়েছে।’ মঙ্গলবার ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশকালে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তপন কুমার সরকার এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘বাতিল হওয়া বিষয়গুলোর পরীক্ষা দেয়ার বিষয়ে শিক্ষার্থীদের পরিপূর্ণ প্রস্তুতি ছিল। অভিভাবক-শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের কাছে অনুরোধ রইল ভবিষ্যতে যেন এ ধরনের ঘটনা না ঘটে। পরীক্ষাগুলো দেওয়া উচিত। পরীক্ষার মাধ্যমেই ফলাফল আসে। আমরা কতটুকু শিখলাম তার জাস্টিফিকেশন পরীক্ষার মাধ্যমেই হয়। পরীক্ষা নেওয়া আমাদের কর্তব্য। আশা করবো আগামীতে পরীক্ষাগুলো যাতে হয় সে বিষয়ে লক্ষ্য রাখবো। সকলের সহযোগিতা কামনা করবো।’
তিনি বলেন, আমরা যে ২০২৫ সালে পরীক্ষাগুলো নেবো, তা সুষ্ঠুভাবে নিতে পারবো বলে আশা করছি। কোন শিক্ষার্থী যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেভাবে চেষ্টা করতে হবে। একটা বিপর্যয়ের মধ্য দিয়েই যাচ্ছিলাম। এ কারণে এবার পরিস্থিতির শিকার হয়েছি।
শূন্য পাস শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বিষয়ে তিনি বলেন, বিগত সময়ে এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে চিহ্নিত করে তাদের মানোন্নয়নের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। যেসব প্রতিষ্ঠানের মানোন্নয়ন করতে পারেনি সেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাঠদানের অনুমতি বাতিল করে দেয়া হয়। গত বছরও ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের ৪ টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এটা দিন দিন বাড়ছে। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা কম। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নন এমপিওভুক্ত।
তপন কুমার সরকার বলেন, আমাদের বোর্ড, প্রশাসন ও শিক্ষা মন্ত্রণালয় সবাই এবারের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা নেওয়ার চূড়ান্ত প্রস্তুতি নিয়েছিল। সার্বিক দিক দিয়ে পর্যালোচনা করে একটা বিকল্প পরীক্ষা নেওয়ার ব্যবস্থাও ছিল। বিষয়ের উপর অর্ধেক নম্বরের পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়েও প্রস্তাবনা দিয়েছিলাম। বিভিন্ন কারণে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এ পরীক্ষাগুলো বাতিল করতে বাধ্য হয়েছে।
শিক্ষার্থীদের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা দেয়ার প্রস্তুতি ছিল। তাদের লার্নিং স্কিল ডেভলেপমেন্ট করেছিল। তারা শুধু পরীক্ষা দিতে পারেনি। কিন্তু তাদের প্রস্তুতি ছিল। আমরা কয়েকবার এই পরীক্ষা পিছিয়ে পিছিয়ে একসময় তা বাতিল করে দিয়েছি। তার মানে তাদের লার্নিং গ্যাপ নেই। আমরা ৬টা পরীক্ষা নিতে পারিনি। এবারে সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ের মাধ্যমে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল হয়েছে। এরমধ্যে যখন আমাদের শিক্ষার্থীরা একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট পাবে তখন কিন্তু এই রেজাল্ট ম্যাপিংটা নিয়ে কোন কথা থাকবে না বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের ভিন্ন আঙ্গিকে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে। বেলা ১১টায় স্ব স্ব বোর্ডের ওয়েবসাইট ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে একযোগে এ ফলাফল প্রকাশ করা হয়। ৯ টি সাধারণ ও মাদরাসা এবং কারিগরি বোর্ড মিলিয়ে ১১টি শিক্ষা বোর্ডে গড় পাসের হার ৭৭ দশমিক ৭৮ শতাংশ। এবার জিপিএ-৫ পেয়েছে, ১ লাখ ৪৫ হাজার ৯১১ শিক্ষার্থী।