বাংলার ভোর প্রতিকেদক

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদিকে গুলি করে হত্যার প্রতিবাদে যশোরে বিক্ষোভ করেছে ছাত্র জনতা। শুক্রবার জুম্মা নামাজ শেষে শহরের রেলগেটস্থ মডেল মসজিদের সামনে থেকে মিছিলটি বের হয়। এতে জুলাই আন্দোলনে অংশ নেয়া ছাত্র জনতা ছাড়াও বিভিন্ন সামাজিক রাজনীতিক সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ অংশ নেন। বিক্ষোভ মিছিলে নেতাকর্মীরা বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। স্লোগানগুলোতে ছিল- ‘আমি কে তুমি কে, হাদি হাদি’, ‘আমার সোনার বাংলায় খুনি লীগের ঠাঁই নাই’, ‘ফ্যাসিবাদের ঠিকানা এই বাংলায় হবে না’ এবং ‘আমরা সবাই হাদি হবো, যুগে যুগে লড়ে যাবো’।

মিছিলটি শহরের মুজিব সড়ক, দড়াটানা হয়ে রেজিস্ট্রি অফিস এলাকায় শহীদ মিনারে যেয়ে শেষ হয়। সেখানে শরীফ ওসমান হাদির আত্মার শান্তি কামনায় দোয়া করেন নেতৃবৃন্দ। সমাবেশ থেকে নেতৃবৃন্দ বলেন, বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকেই ভারত পরিকল্পিতভাবে এ দেশের ওপর আগ্রাসন চালিয়ে আসছে।

শরীফ ওসমান হাদিকেও পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে ভারতীয় অগ্রাসন। আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই—আগামী দিনে কেউ যদি বাংলাদেশকে ভারতের কলোনি বানাতে চায়, তবে বাংলাদেশের যুবসমাজ কখনো তা মেনে নেবে না। দাঁতভাঙা জবাব দেওয়া দিবে।

আগামী দিনের বাংলাদেশ হবে বাংলাদেশিদের বাংলাদেশ-এখানে কোনো ভিনদেশি আধিপত্য চলবে না। হাদী হত্যার বিচার না হলে এ দেশে নতুন করে হাদী তৈরি হবে না বলে জানান। এসময় নেতৃবৃন্দ হাদি হত্যার সঙ্গে জড়িতদের ভারত থেকে এনে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান।

জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) যশোরের প্রধান সমন্বয়কারী মোহাম্মদ নুরুজ্জামান বলেন, ‘হাদি ভাইয়ের মৃত্যু দেশ ও জাতির জন্য অপূরণীয় ক্ষতি। আমরা একজন বলিষ্ঠ কণ্ঠ হারিয়েছি। একজন দেশপ্রেমিককে হারিয়েছি।

হাদির মতো দেশপ্রেমিককে হত্যা করায় যশোরবাসী ফুঁসে উঠেছে। আগামীতে যাতে কোন রাজনৈতিক নেতা বা জুলাই যোদ্ধাকে এভাবে নৃশংসভাবে হত্যার শিকার হতে না হয়;তার জন্য সরকারকে এক্ষুনিই ভুমিকা নিতে হবে। একই সাথে  যে সন্ত্রাসী আমাদের দেশের সম্পদকে, জুলাই যোদ্ধাকে হত্যা করেছে তাকে ভারত থেকে অতিলম্বে এনে বিচারের আওতায় মুখোমুখি করতে হবে।’

এনসিপির কেন্দ্রীয় সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) সাকিব শাহরিয়ার বলেন, হাদির হত্যার পিছনে কাদের ইন্দনে হয়েছে; নতুন করে বলার দরকার নেই। যারা হত্যা করেছে, তারা ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উল্লাসিত রূপ দেখতে পেয়েছি। তারা রীতিমতো উল্লাস করছে। একজন সত্যিকারের মানুষকে হত্যা করার মধ্যে দিয়ে জুলাই যোদ্ধাদের কন্ঠ রোধ করতে চেয়েছে ; সেটা কখনোই সম্ভব হবে না।

এদেশে হাদী হত্যার বিচার না হয়, এই মৃত্যুর বিচার না হয়, তাহলে কেউ সাহস করে আর হাদি হওয়ার জন্য এগিয়ে আসবে না।’

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন যশোরের নেত্রী আশা লতা বলেন, ‘জুলাই বিপ্লবে যারা অংশ নিয়েছিলাম, তারা সকলেই হাদির অনুসারি। আমরা কেউ মৃত্যুকে ভয় পাইনা। আমরা সবসময় জুলাই আন্দোলনে মৃত্যুর জন্য মুখিয়ে ছিলাম।

আগামীতেও থাকবো। কিন্তু কোন সহিংসতা আমাদের কাম্য নয়। বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশে নিরাপত্তা গুরুতর হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটা সরকারকে ভূমিকা নিতে হবে।’

Share.
Exit mobile version