খুলনা সংবাদদাতা
খুলনার পাইকগাছা উপজেলায় মুখে টেপ ও চোখে সুপার গ্লু লাগিয়ে হাত-পা বেঁধে গৃহবধূকে ধর্ষণের ঘটনার একদিন পেরিয়ে গেলেও কোনো মামলা হয়নি। খুলনার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাঈদুর রহমান জানান, আজ (মঙ্গলবার) দুপুর পর্যন্ত ভুক্তভোগী ওই নারীর পরিবারের কেউ অভিযোগ বা মামলা দায়ের করেন নাই। তবে অপরাধীদের সনাক্ত করতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। ৪৫ বছর বয়সী ভুক্তভোগী ওই নারীর স্বামী কাঁচামালের ব্যবসা করেন। রোববার রাতে তিনি বাসার বাইরে ছিলেন। সোমবার ভোরে তার মুখে টেপ, চোখে সুপার গ্লু লাগানো এবং হাত-পা বাঁধা অবস্থায় বাড়ি থেকে উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে ভর্তি করা হয়।
খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ও ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টার-ওসিসির সমন্বয়কারী সুমন রায় বলেন, “ওই গৃহবধূর প্রয়োজনীয় শারীরিক পরীক্ষা ও নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। তার চোখ ও মুখের আঠা অপসারণ করা হলেও শারীরিকভাবে দুর্বল হওয়ায় কথা বলতে পারছেন না। ওই নারীর ছেলে বলেন, রাতেই মায়ের জ্ঞান ফিরেছে। কিন্তু এখনও বেশ দুর্বল; ইশারায় কথা বলছেন। কান থেকে দুল টেনে নেওয়ায় তার দুই কানের লতি কেটে গেছে। ওই জায়গায় চিকিৎসকরা সেলাই করে দিয়েছেন।
ভুক্তভোগীর স্বামী বলেন, তিনি বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ঘুরে কাঁচামালের ব্যবসা করেন। শনি ও বুধবার ছাড়া বাকি দিন তিনি বাসার বাইরে থাকেন। এক ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন। ছেলে খুলনায় থেকে লেখাপড়া করে।
“রোববার রাতে তার স্ত্রী বাড়িতে একাই ছিলেন। গভীর রাতে কয়েকজন মই বেয়ে ছাদে উঠে শাবল দিয়ে দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে। এরপর তার স্ত্রীর চোখে-মুখে সুপার গ্লু লাগিয়ে এবং হাত-পা বেঁধে একাধিকবার ধর্ষণ করে। পরে স্ত্রীর কানের দুল ও গলার চেনসহ বেশকিছু স্বর্ণালংকার এবং ঘরের মালামাল নিয়ে পালিয়ে যায় তারা।”
থানায় মামলা বা অভিযোগ কেনো দায়ের করেন নাই, জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আমার স্ত্রী কথা বলতে না পারছে না। ফলে ঘটনা কি ঘটেছিল, তা বুঝতে পারছি না; কাউকে সন্দেহও করতে পারছি না। তাই এখনও পুলিশের কাছে অভিযোগ করি নাই।”
খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি ইউনিট-২-এর সহকারী রেজিস্ট্রার চিকিৎসক কনক হোসেন বলেন, হাসপাতালে যখন আনা হয়, তখন ওই রোগী পুরোপুরি অজ্ঞান ছিলেন তেমন নয়। তবে তিনি একটু অবচেতন অবস্থায় ছিলেন। চোখের পাতা ও দুই ঠোঁট শক্ত আঠা দিয়ে লাগানো ছিল। রোগীর শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঁচড়ের দাগ ও ছোট ছোট আঘাতের চিহ্ন ছিল। অস্ত্রোপচার কক্ষে নিয়ে আঠা অপসারণ করা হয়। এরপর রোগীকে পাঠানো হয় চক্ষু ওয়ার্ডে। রোগীর স্বজনদের অভিযোগ ছিল, তাঁকে ধর্ষণ করা হয়েছে। তাই চক্ষু ওয়ার্ড থেকে তাঁকে ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) পাঠানো হয়। তবে এর আগে কখনো চোখে ও মুখে এভাবে আঠা লাগানো অবস্থায় কোনো রোগী তারা দেখেননি।
পাইকগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওবাইদুর রহমান গতকাল বলেন, ওই ঘটনায় কেউ মামলা করেননি। তবে অপরাধীদের শনাক্ত করতে অভিযান অব্যাহত আছে।
শিরোনাম:
- যশোর জেনারেল হাসপাতালে দুদকের অভিযান
- যশোরে বেড়েছে খুন-ধর্ষণ, আইনশৃংখলা উদ্বেগজনক
- যশোরে দ্বন্দ্ব সংবেদনশীলতা ও রূপান্তর বিষয়ক কর্মশালা শুরু
- জাতীয় ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপ নড়াইলকে দুই গোল যশোরের
- এবার যশোরে ৭০৫টি শারদীয় দুর্গোৎসবের প্রস্তুতি
- সুন্দরবনের সাগরে নিখোঁজ মাহিদের মরদেহ উদ্ধার
- শ্যামনগর ইউএনও’র বদলি আদেশ প্রত্যাহার দাবিতে মানববন্ধন
- মানসিক সুস্থতা এবং আসক্তি প্রতিরোধে সচেতনতামূলক কার্যক্রম