বাংলার ভোর প্রতিবেদক
ছাত্রলীগের সভাপতির সামনে লুঙ্গি পরিহিত অবস্থায় চলাচল ও সালাম না দেয়ায় যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রাবাসের আবাসিক শিক্ষার্থীকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতিসহ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। নির্যাতনের পর ওই শিক্ষার্থী যশোর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। শুক্রবার রাত সাড়ে ১১ টার দিকে যবিপ্রবির শহীদ মসীয়ূর রহমান (শ.ম.র.) হলের ৩০৮ নম্বর কক্ষে এ নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী যশোর কোতোয়ালি থানায় সাধারণ ডায়েরি ও হলের প্রভোস্ট বরাবর পৃথকভাবে লিখিত অভিযোগ করেছেন। ভুক্তভোগী মাঞ্জুরুল হাসান বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারীজ এন্ড মেরিন বায়োসায়েন্স (এফএমবি) বিভাগের ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী।
আর অভিযুক্তরা হলেন, শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সোহেল রানা, ছাত্রলীগ কর্মী ও ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ফয়সাল আহমেদ, শারিরিক শিক্ষা বিভাগের ইসাদ হোসেন, আল আমিন, শেখ বিপুল হাসান ও মুশফিক, ফার্মেসী বিভাগের রাইসুল হক রানা। এছাড়া অজ্ঞাত করা হয়েছে আরো কয়েকজনকে। এর মধ্যে ক্যাম্পাসে বিশৃঙ্খলার দায়ে সম্প্রতি অভিযুক্ত ফয়সাল আহমেদকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বহিস্কার করেন। তার পরেও তিনি ক্যাম্পাস ছাত্রলীগের ছত্রছায়ায় ছাত্রাবাসে অবস্থান করে আসছিলেন।
আহত মাঞ্জুরুল হাসান লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেছেন, শুক্রবার রাতে আমি শহীদ মসিয়ূর রহমান হলের ৩০১ নম্বর রুম থেকে বাহির হলে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সোহেল রানাকে সালাম না দেয়া এবং লুঙ্গি পরিহিত অবস্থায় তার সামনে চলাচলের কারণে সভাপতির নির্দেশে আমাকে আমার কক্ষ থেকে ডেকে ৩০৮ নাম্বার কক্ষে নিয়ে যায়। এর পর সভাপতির নির্দেশে আমার বুকের উপরে পাড়া দিয়ে এলোপাতাড়ি মারপিট করে। একপর্যায়ে আমার দম বন্ধ হওয়ার উপক্রম হলে চিৎকারে হলের অন্যান্য শিক্ষার্থীরা এগিয়ে আসলে তারা হত্যার হুমকি দিয়ে চলে যায়।
আহত মাঞ্জুরুল হাসান যশোর জেনারেল হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়ে শনিবার বিকালে আবার ছাত্রাবাসে উঠেছেন। তিনি মুঠোফোনে বলেন, ‘আমার দুই চোখেই সমস্যা। তেমন একটা দেখতে পাই না। রাতে আমি যখন লুঙ্গি পরে বাইরে যাচ্ছিলাম; তখন ছাত্রলীগের সভাপতিসহ তার কর্মীরা আমার সামনেই পড়ে যায়। এর পর তারা ফিরে এসে আমাকে আমার কক্ষ থেকে ডেকে নিয়ে ৩০৮ নাম্বার কক্ষে নিয়ে বেধড়ক মারমিট করে। মারপিটের একপর্যায়ে ছাত্রলীগের সভাপতি আসে। তখন তার কাছে মাফ চাই। এসময় ওদের মধ্যে একজন আমাকে বলেন, ‘ভাইকে সালাম দিস না কেন? কেন লুঙ্গি এত উচু করে পরেছিস। তার পরেও তারা আমাকে মারধর করেছে। তাদের আমি বলেছি, সোহেল ভাই (ছাত্রলীগের সভাপতি) ভাইকে দেখতে পাইনি আর লুঙ্গি উচু করে পরেছি ময়লা লাগার ভয়ে। মারের এক পর্যায়ে আমাকে তারা হুমকি দেয় এই ঘটনা কাউকে জানালে তোরে গুম হত্যা করে ফেলবো।’
আবাসিক ছাত্রাবাসে কোন শিক্ষার্থীকে মারধর করা হয়নি দাবি করে যবিপ্রবি ছাত্রলীগের সভাপতি সোহেল রানা বলেন, ‘রাতে আমাদের শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক ও ফিশারিজ ও মেরিন বায়োসাযেন্স এর কিছু ছেলে আমার রুমের সামনে জুনিয়রদের সাথে চিল্লাপাল্লা করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার চেষ্টা করলে তাদের বুঝিয়ে যার যার কক্ষে যেতে বলি। কাউকে মারা হয়নি আর যারা বিশৃঙ্খলা করছিলো তারা ছাত্রলীগের কোন পদপদবীধারি কেউ না। মাঝে মধ্যে তারা প্রগামে আসে। ক্যাম্পাস রাজনীতির গ্রুপিংয়ে বলি হয়ে আমাকে দোষারাপ করা হচ্ছে’।
এ বিষয়ে শহীদ মসিয়ূর রহমান হলের প্রভোস্ট ড. তানভীর ইসলাম বলেন, শুক্রবার রাতে মারামারির ঘটনা শুনে আমি আমার সহকারী প্রভোস্টদের নিয়ে ছাত্রাবাসে আসি। এসে দেখি ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর মাথায় পানি ঢালা হচ্ছে। পরবর্তীতে তাকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়। এ বিষয়ে শনিবার একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। এ ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করার প্রক্রিয়াধীন। তদন্ত শেষে অভিযুক্ত ও ছাত্রাবাসে অবস্থান করা বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীর বিষয়েও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানান।
শিরোনাম:
- আলুর দাম লাগামহীন ভোক্তার নাভিশ্বাস
- শীতে ফুটপাতে গরম কাপড় বিক্রির ধুম
- একটা সংস্কার কমিটি দিয়ে সংবিধান সংস্কার সম্ভব না: মির্জা ফখরুল
- নিখোঁজের ৩ দিন পর কপোতাক্ষ নদে মিলল বৃদ্ধার মরদেহ
- কৃষ্ণনগরে আরাফাত কোকো স্মৃতি ফুটবলে চ্যাম্পিয়ন রতনপুর
- পাখির সাথে মানুষের ভালোবাসার গল্প !
- সব রাষ্ট্রের সঙ্গে বন্ধুত্ব রাখবে বাংলাদেশ: প্রধান উপদেষ্টা
- যশোর মটর পার্টস ব্যবসায়ী সমিতির নির্বাচন সংস্কার ও উন্নয়ন পরিষদের পক্ষে ২৭টি মনোনয়নপত্র ক্রয়