বাংলার ভোর প্রতিবেদক
দানবীর হাজী মো. মহসীন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৫০ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ বলেছেন, ‘গত শতাব্দীতে সবচেয়ে বড় সম্পদ ছিল তেল ও গ্যাস। কিন্তু এই শতাব্দীর সবচেয়ে বড় সম্পদ হচ্ছে ডাটা বা তথ্য। এখন ফেসবুক বলি, গুগল বলি- বিশ্বের সবচেয়ে বড় বড় কোম্পানি হচ্ছে তথ্য নির্ভর।’
তিনি বলেন, ‘আমরা এখন বিশ্বায়নের যুগে বাস করছি। সারা পৃথিবী প্রযুক্তির মাধ্যমে আমাদের হাতের মুঠোয়। মোবাইল ফোনে কয়েকটি বোতাম চাপলেই পৃথিবীর যেকোনও তথ্য উপাত্ত খুব সহজেই পেতে পারি। আমাদের বাংলাদেশেও তথ্য-প্রযুক্তির বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।’
শুক্রবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় দানবীর হাজী মো. মহসীন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৫০ বছর পূর্তিতে ‘সুবর্ণজয়ন্তী ও পুনর্মিলনী’ অনুষ্ঠানে বক্তৃতাকালে যশোর-৩ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি কাজী নাবিল আহমেদ এ কথা বলেন।
ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্দেশে কাজী নাবিল বলেন, ‘২০৪১ সালের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী আমাদের স্মার্ট বাংলাদেশ, উন্নত বাংলাদেশের যে স্বপ্ন দেখিয়েছেন, সেই সময়ের স্মার্ট নাগরিক হবে আজকে যারা এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী। সেই সময় তারাই বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেবে। দেশের সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, উন্নয়ন- সব ক্ষেত্রেই তারা অনবদ্য ভূমিকা রাখবে।’
বিএনপি-জামায়াতের ষড়যন্ত্রের কথা উল্লেখ করে এই সংসদ সদস্য বলেন, ‘একাত্তরের পরাজিত শক্তি জামায়াত-বিএনপি তাদের কুচক্র এখনও চালিয়ে যাচ্ছে। দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন বানচাল করতে তারা বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের দ্বারে দ্বারে ঘুরেছে। এখনও ঢাকায় বিভিন্ন রাষ্টদূতের দ্বারস্থ হচ্ছে। বাংলাদেশের মানুষের প্রতি তাদের আস্থা নেই, সে কারণে দেশের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ব্যবস্থা আনাতে তৎপরতা চালাচ্ছে তারা। কিন্তু দেশের জনগণ প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রতি আস্থা রেখেছেন। সে কারণে তাকে পরপর চারবার এবং পঞ্চমবারের মতো ভোট দিয়ে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব দিয়েছে।’
বিএনপি-জামায়াত বিশ্ব ভ্রাতৃত্বের কথা মুখে মুখে বললেও আক্রান্ত ফিলিস্তিনদের জন্যে একটাও কথা বলে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘গাজায় গণহত্যা চালানো হচ্ছে। সেখানে হাজার হাজার শিশু, নারী-পুরুষকে নির্বিচারে হত্যা করা হচ্ছে। তাদের জন্যে বিএনপি-জামায়াতের প্রাণ কাঁদে না। কিন্তু দুই দিন আগে জার্মান থেকে ফিরেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখানে একটি কনফারেন্সে বিশ্বের প্রথম শ্রেণির রাষ্ট্রের প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দৃঢ় কণ্ঠে ইসরায়েলের এই গণহত্যার বিষয়ে কথা বলেছেন। তিনি বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা, সে কারণে দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে এই উচ্চারণ তিনি করেছেন। কেননা বঙ্গবন্ধু বলতেন, বিশ্ব আজ দুই ভাগে বিভক্ত, আমি শোষিতের পক্ষে।’
সামনের দিনগুলো আরও কঠিন উল্লেখ করে কাজী নাবিল বলেন, ‘দেশের বিরুদ্ধে চক্রান্ত থাকবে, আন্তর্জাতিক ও দেশীয় ষড়যন্ত্র এগুলো থাকবে। কিন্তু দেশের মানুষের দৃঢ় আস্থা রয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি। তার দীপ্ত পদক্ষেপে এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ। সেই দীপ্ত পদক্ষেপে আমরা যারা আওয়ামী লীগের ক্ষুদ্র কর্মী ও বিভিন্ন পর্যায়ের জনপ্রতিনিধি রয়েছি, তাদের সবাইকে একসঙ্গে কাজ করে যেতে হবে।’
স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি, উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক শেখ সালাউদ্দিন টিপুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম আফজাল হোসেন, মণিরামপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নাজমা খাতুন, আওয়ামী লীগের উপ-প্রচার সম্পাদক লুৎফুল কবীর বিজু, স্কুলের প্রাক্তন ছাত্র শেখ আলাউদ্দিন মুকুল, রামনগর ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদ হাসান, স্কুলের উদ্যোক্তা সদস্য এ টি এম মাহবুবুল হাসান, সরকারি মহিলা কলেজের সহযোগী অধ্যাপক মোফাজ্জেল হোসেন, প্রাক্তন ছাত্র সাহেব আলী রাজু, আ স ম এহসানুল হক।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক ফজলুর রহমান। অনুষ্ঠানের শুরুতে প্রধান অতিথিকে ফুলের তোড়া এবং ক্রেস্ট দিয়ে বরণ করে নেওয়া হয়।