বাংলার ভোর প্রতিবেদক
মাদক ব্যবসা নিয়ে বিরোধের জের ধরে বেনাপোলে তৃতীয় লিঙ্গের রেশমাকে হত্যা করা হয়। যশোর ডিবি পুলিশের হাতে ফারুক গ্রেফতারের পর হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন হয়েছে। বেরিয়ে আসছে রোমহর্ষক ও চাঞ্চল্যকর তথ্য। এ ঘটনায় আরও ৫/৬ জড়িত থাকার কথা ফারুক স্বীকার করেছে। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত সাবল, লাশ গুমের কাজে ব্যবহৃত কোদাল, দুটি মোবাইল ফোন, রেশমার একটি স্কুটি উদ্ধার করা হয়।
যশোর ডিবি পুলিশের কর্মকর্তা মফিজুল ইসলামের নেতৃত্বে একদল ফোর্স বেনাপোলের কাগজপুকুর গ্রামের ফারুক নামে এক ব্যক্তিকে সোমবার গ্রেফতার করে। এর আগে স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে পুলিশ একটি পুরনো কবরের ভেতর থেকে তৃতীয় লিঙ্গের রেশমার গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছিল রেশমার স্বামী জাফর হত্যাকাণ্ড ঘটাতে পারে। কারণ তাদের দাম্পত্য জীবন খুব বেশি সুখের ছিল না। কিন্তু যশোর ডিবি পুলিশ লাশ উদ্ধারের পর বিভিন্ন সোর্স ও তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে হত্যাকান্ডের সাথে জড়িতদের শনাক্ত করে একজনকে আটক করে। রেশনা হত্যায় জড়িত ফারুক বেনাপোল পোর্ট থানার কাগজপুকুর গ্রামের মৃত নূর ইসলামের ছেলে। নিহত রেশমা একই গ্রামের জাকির হোসেনের মেয়ে ও জাফরের স্ত্রী। প্রথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ফারুক পুলিশকে জানায় মাদক ব্যবসা নিয়ে বিরোধের জের ধরে ৩ মার্চ রাতে রেশমাকে ডেকে নিয়ে ফারুক ও তার সহযোগিরা শ^াসরোধ করে মাতায় শাবল দিয়ে আঘাত করে ও জবাই করে রেশমাকে হত্যা করে। এরপর কাগজপুকুরের কবরস্থানে লাশ পুতে গুম করা হয়।
এ ঘটনায় ডিবি পুলিশের এস আই মফিজুল ইসলাম হত্যা মামলা করেন। মামলায় ৫ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত নামা আরো ২/৩ জনকে আসামি করা হয়। মামলার আসামিরা হলো বেনাপোল কাগজপুকুর গ্রামের ফারুক হোসেন (২৫), কাগজপুকুর দক্ষিণ কলোনি পাড়ার আল মামুন (২০), উত্তর কাগজপুকুর গ্রামের শরীফ (২৬), একই গ্রামের সাগর (২৫) ও হোসাইন (২৪)।
নিহত রেশমার স্বামী জাফর বলেন, ফেব্রুয়ারি মাসে আমার স্ত্রী রেশমা সংবাদ সম্মেলন করে। সে সময় ওলিয়ার, টিটু ও সাইফুল্লাহ তাকে হত্যা করার ষড়যন্ত্র করছে দাবি করে প্রশাসনের সহায়তা চেয়েছিলেন। আমাদের সম্পদ দখল করা ছিল অভিযুক্তদের মূল টার্গেট। শেষ পর্যন্ত তারা হত্যা মিশনে সফল হয়েছে।
বেনাপোল পৌরসভার কাউন্সিলর শাহিন জানান, স্বামীর সঙ্গে সম্পর্কের অবনতির পর রেশমা একা কাগজপুকুর গ্রামে বসবাস করতো। কয়েকদিন ধরে তার নিখোঁজের গুঞ্জন ওঠে। সোমবার (১১ মার্চ) দুপুরে কাগজপুকুর কবরস্থানের একটি গর্ত থেকে দুর্গন্ধ ছড়ালে গ্রামবাসী পুলিশকে খবর দেয়। এরপর পুলিশ গর্ত খুঁড়ে রেশমার মরদেহ উদ্ধার করে।
বেনাপোল পোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুমন ভক্ত জানান, রেশমা হত্যাকাণ্ড ঘটনায় জড়িত সন্দেহে একজনকে আটক করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে নাভারণ সার্কেলের সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার নিশাত আল নাহিয়ান জানান, অভিযোগে ফারুক হোসেন নামে একজনকে আটক করা হয়েছে। খুব দ্রুতই প্রকৃত অপরাধীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে।