♦ ঘাটতি দু’কোটি টাকা সমন্বয়ে মন্ত্রণালয়ে কর্তৃপক্ষ
বাংলার ভোর প্রতিবেদক
পাবলিক পরীক্ষার উত্তরপত্র মূল্যায়নে বাড়তি পরীক্ষক ও প্রধান পরীক্ষক নিয়োগ দিয়ে অর্থ সংকটে পড়েছে যশোর শিক্ষা বোর্ড। এই সঙ্কটে ২০২৩ সালের এইচএসসি পরীক্ষার উত্তরপত্র মূল্যায়ন বিল এখনও পরিশোধ করতে পারেনি বোর্ড। বোর্ডের এই বিল পরিশোধে প্রয়োজন প্রায় সাত কোটি টাকা। কিন্তু সংশ্লিষ্ট খাতে জমা আছে ৫ কোটি টাকা। অন্য খাত থেকে বাড়তি এ টাকা সমন্বয়ের জন্য মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন চেয়েছে বোর্ড কর্তৃপক্ষ। এদিকে, বছর ঘুরে গেলেও উত্তরপত্র মূল্যায়নের বিল না পাওয়ায় বোর্ড কর্তৃপক্ষকে দুষছেন পরীক্ষক ও প্রধান পরীক্ষকরা। তবে বোর্ড কর্তৃপক্ষ বলছে, দ্রুতই তাদের বিল ছাড় করা হবে।
যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড সূত্র জানিয়েছে, ২০২৩ সালের এইচএসসির উত্তরপত্র মূল্যায়নে পরীক্ষক ও প্রধান পরীক্ষকদের বিল এখনও পরিশোধ করা হয়নি। ২০২৩ এইচএসসির জন্য এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৯৮৬ জন পরীক্ষক বিল জমা দিয়েছেন। কিন্তু প্রকৃত এই সংখ্যা ৫ হাজারেরও বেশি। এখনও অনেকে বিল জমা দেননি। উত্তরপত্র মূল্যায়নসহ সংশ্লিষ্ট খাতের ব্যয় নির্বাহে ৬ কোটি ৭২ লাখ টাকার প্রয়োজন। কিন্তু ওই ফান্ডে ৫ কোটির মতো টাকা জমা আছে।
সূত্র জানায়, যেকোনো পাবলিক পরীক্ষার ফরম পূরণের সাথে সাথেই পরীক্ষার্থীর সংখ্যা নির্ধারিত হয়ে যায়। আর ফরম পূরণ করার সময় ফিসের সাথে খাতা দেখার নির্ধারিত টাকাও জমা নিয়ে নেয়া হয়। ফলে উত্তরপত্র মূল্যায়নের জন্য নির্ধারিত অর্থে ঘাটতি দেখা দেয়ার কথা নয়। অথচ এই ফান্ডে এখন প্রায় দুই কোটি টাকার ঘাটতি রয়েছে।
সূত্র আরও জানায়, মন্ত্রণালয় কোনো অর্থ দেয় না, বোর্ডের নিজেদের আয় থেকে সব শোধ করার নিয়ম থাকলেও বার্ষিক খরচের প্রাক্কলন অনুমোদন করে নিতে হয়। এখন নানা অনুষ্ঠানসহ বিভিন্ন কারণে বোর্ডের ব্যয় বেড়েছে। তাছাড়া টেণ্ডার ব্যয়ও বেড়েছে। চলতি বছর খাতা ক্রয়সহ আনুসঙ্গিক ব্যয়ের জন্যে ১৬ কোটি টাকার টেন্ডার হয়। এই টাকাও প্রাক্কলন অর্থ থেকে ছাড় করানো হয়। এসব কারণেও খরচ বেড়েছে। পাশাপাশি পাবলিক পরীক্ষার পরীক্ষক ও প্রধান পরীক্ষক বেড়েছে-বেড়েছে তাদের টিএ ডিএও। এ কারণেও টান পড়েছে ফান্ডে।
সূত্র মতে, আগে একজন প্রধান পরীক্ষকের আওতায় ১৫ থেকে ২৫জন পরীক্ষক কাজ করতেন। এখন প্রধান পরীক্ষকরা ৩ থেকে ৫ হাজার খাতা পান, পরীক্ষক থাকে অনেক ক্ষেত্রে ৮/১০জন। আবার আগে ৩শ’ থেকে ৪শ’ খাতাও পেতেন পরীক্ষকরা। এখন ২শ’ থেকে আড়াই শত খাতা পান গড়ে প্রতি পরীক্ষক। এ কারণে পরীক্ষক, প্রধান পরীক্ষকসহ অন্যান্য জনবল বৃদ্ধি পেয়েছে, তাদের প্রতি খরচের পরিমাণও বৃদ্ধি পেয়েছে।
সহকারী অধ্যাপক মনিরুজ্জামান নামের একজন প্রধান পরীক্ষক জানান, তিনি ৩ হাজার ৮শ উত্তরপত্র পেয়েছিলেন। তিনি এখনও বরাদ্দকৃত অর্থ পাননি। তবে তার মতো অনেকেই খাতা দেখার বিল ঈদের আগে পাওয়ার জন্যে অপেক্ষায় আছেন।
যশোর শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যার প্রফেসর ড. মো. আহসান হাবীব জানান, পরীক্ষার্থী বেড়েছে; পাশাপাশি উত্তরপত্র মূল্যায়নের ফিও বেড়েছে। একারণে বাজেটের চেয়ে বাড়তি অর্থ প্রয়োজন হচ্ছে। মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের প্রক্রিয়া চলছে। দ্রুতই শিক্ষকদের উত্তরপত্র মূল্যায়নের ফি পরিশোধ করা হবে।