বাংলার ভোর প্রতিবেদক
বিনামূল্যে গরীব ও অসহায় মানুষের স্বাস্থ্যসেবা সুনিশ্চিত করার লক্ষ্য নিয়ে নির্মাণ শুরু হয়েছে গণস্বাস্থ্য লেবুতলা হাসপাতাল। যশোর সদর উপজেলার লেবুতলা ইউনিয়নের লেবুতলা গ্রামে বীরমুক্তিযোদ্ধা অরুণ খাঁ ও তার ভাই বীরমুক্তিযোদ্ধা শুধাংশু খাঁ’র দান করা ৬৮ শতক জমির উপর এই হাসপাতাল নির্মাণ করা হয়েছে। এটি একটি জেনারেল হাসপাতাল কাম ডায়ালসিস সেন্টার হবে বলে জানানো হয়েছে নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে। এই হাসপাতাল নির্মাণের মাধ্যমে এই এলাকার প্রান্তিক সাধারণ মানুষকে উন্নতমাণের চিকিৎসাসেবা প্রদান করা হবে। ২৫ এপ্রিল বৃহস্পতিবার দুপুরে মাটিতে ভিত খননের মাধ্যমে নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন জমিতাদা মৃত অরুণ খাঁর স্ত্রী অরুণা খাঁ। এরপর হাসপাতালের সাফল্য কামনায় বিশেষ প্রার্থনা করা হয়।
হাসপাতাল নির্মাণের অন্যতম উদ্যোক্তা মানবাধিকার ব্যক্তিত্ব ও মৃত অরুণ খাঁর বন্ধু বিনয় কৃষ্ণ মল্লিক জানান, অরুণ খাঁ ছিলেন সমাজহিতৈষী মানুষ। তিনি আজীবন মানুষের ভালোর জন্যে সময় ব্যয় করেছেন। তিনি বেশ কয়েক বছর আগে জমির দলিল তার কাছে রেখে কিছু একটা করার জন্যে বলেছিলেন। তখন থেকেই তারা এখানে একটি হাসপাতাল নির্মাণের স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন। যে হাসপাতাল হবে উন্নত ও আধুনিক চিকিৎসায় সমৃদ্ধ। এলাকার অসহায় ও দরিদ্র মানুষ এই হাসপাতাল থেকেই আধুনিক সেবা নিতে পারবেন বিনামূল্যে বা স্বল্প মূল্যে। স্থানীয়দের যাতে রাতের আঁধারে বা দুর্যোগের মধ্যেও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দূরবর্তী হাসপাতালে ছুটতে না হয়। সেজন্য অনেক স্থানে ঘুরেছেন তারা। শেষ পর্যন্ত বীরমুক্তিযোদ্ধা, সমাজসেবক, দেশের চিকিৎসা জগতের অন্যতম পুরোধা ব্যক্তিত্ব ডাক্তার জাফরুল্লাহ চৌধুরী এখানে হাসপাতাল নির্মাণের দায়িত্ব নেন। তিনি মারা যাওয়ার আগে হাসপাতালের স্থান নির্বাচন এবং যাবতীয় ব্যবস্থা সম্পন্ন করেছিলেন।
বিনয় কৃষ্ণ মল্লিক আরও জানান, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বা অন্যান্য টেকনিশিয়ান ছাড়া এই হাসপাতালের প্রয়োজনীয় জনবলের একটা বড় অংশ স্থানীয় জনগোষ্ঠী থেকে সংগ্রহ করা হবে। তবে, টেকনিশিয়ান বা চিকিৎসকদের কেউ যদি এলাকার মানুষ হন তাহলে তাদেরকে অগ্রাধিকার দেয়া হবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটি যশোরের সভাপতি মিজানুর রহমান, সাংবাদিক সরোয়ার হোসেন, হাবিবুর রহমান মিলন, শিকদার খালিদ উর রহমান, কাজী আশরাফুল আজাদ, মনিরুল ইসলাম এবং ইন্দ্রজিৎ রায়। এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গও এসময় উপস্থিত ছিলেন।
নির্মাণ প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, নয় মাসের মধ্যে হাসপাতালের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হবে। ছয়তলা ফাউন্ডেশনের তিনতলা পর্যন্ত নির্মাণ করে হাসপাতালের কার্যক্রম শুরু হয়ে যাবে।