সুমন ব্রহ্ম, নিজস্ব প্রতিবেদক
পানি নেই,বিদ্যুত নেই, রাস্তা নেই কালবৈশাখি ঝড়ের আতঙ্কে বসবাস করছে আবাসন প্রকল্পে বাসিন্দারা। এমনই চিত্র উঠে এসেছে ৩ নং রুদাঘোরা ইউনিয়নের আবাসন প্রকল্পে। এদিকে গতবছর ডুমুরিয়ায় প্রধানমন্ত্রীর আবাসন প্রকল্প-২ এর কাজ শেষ না করে এবং ভূমিহীনদের ঘর বুঝিয়ে না দিয়েই উপজেলাকে ভূমি ও গৃহহীন মুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। তথ্য নিয়ে জানা যায় এ পর্যন্ত মোট আবাসন প্রকল্পের ঘর বরাদ্দ এসেছে ১১৫৫ টি। যার প্রত্যেকটি ঘরের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে ২ লাখ ৮৯ হাজার ৫০০ টাকা। সরকারিভাবে নির্দেশনা রয়েছে নিস্কন্টক খাস জমি হতে হবে। কোন অবস্থাতে নতুন ভরাট করা মাটি, খাল জলাশয় ও নদীর তীরে নিচু জায়গায় ঘর নির্মাণ করা যাবে না। ঘরগুলোকে টেকসই ও মজবুত করার জন্য ঘর করার উপযুক্ত জায়গাতে অনুমোদিত নকশা অনুসরণ করে গুণগত মান ঠিক রেখে ঘর নির্মাণ করতে হবে। সরকারি নির্দেশনা না মেনেই অনেক জায়গায় নির্মাণ করা হয়েছে আবাসন প্রকল্পের ঘর। অনেক জায়গাতে বন্দোবস্তকৃত ব্যক্তি মালিকানাধীন জমিতে নির্মাণ করা হয়েছে আবাসন প্রকল্প-২ এর ঘর। এই সকল জটিলতার কারণে এখনও অনেক জায়গার জমির দলিল হতে বাকি রয়েছে। অপরদিকে এই সকল ঘরের কাজে ব্যবহার করা হয়েছে নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রি। আবাসন প্রকল্পের নির্মানকৃত ঘরের অধিকাংশ জায়গায় দেয়া হয়নি বিদ্যুত সংযোগ। সরেজমিনে রুদাঘোরা আবাসন প্রকল্পে গেলে স্থানীয় বাসিন্দারা দেখান নির্মাণকৃত ঘর রয়েছে মোট ৭০টি। এর মধ্যে ১২ টি ঘরে লোক রয়েছে। এই সকল ঘরের কয়েকটি বাথরুমের স্লাব রিং ভাঙা। কয়েকটি ঘরের জানালার কপাট ভাঙা ঘরের মেঝে ভাঙা। অধিকাংশ বাথরুমের ডেলিভারি পাইপ দুমড়ে মুচড়ে গেছে।
কয়েকটি টিউবয়েল বসানো আছে কিন্তু তাতে একটিরও মাথা লাগানো নেই শুধুমাত্র পাইপ রয়েছে। আবাসনে বসবাসকারীদের বের হওয়ার জন্য নেই কোন রাস্তা। যে জায়গা দিয়ে বের হয় সেটা মালিকানাধীন পরের জায়গা। কথা বললে মো. মহিউদ্দিন বলেন আমরা খুব কষ্টে আছি এখানে পানির ব্যাবস্থা নেই বিদ্যুত নেই শুনেছিলাম সরকার সব ব্যবস্থা করে দিবে। কিন্তু এখন দেখি এখানে বসবাস করাই কষ্ট। আগেইতো আমরা ভালো ছিলাম। মো.মহিদুল নামের এক যুবক বলেন আমার ঘরের ভিতর পানি পড়ে বৃষ্টি আসলে ঘরে থাকা কষ্ট হয়ে যায়। ঝড় আসলে ভয় হয় এমনিতে হালকা বাতাসে জানালা খুলে পড়ে। রান্না ঘরের মেঝে ভেঙে গেছে শোয়ার ঘরের মেঝে ভেঙে গেছে বলেও অভিযোগ করেন। ঘরে বসবাসকারী মো. রফিক সরদার বলেন আমি প্রায় একবছর এখানে আছি এখনও পর্যন্ত ঘরের দলিল হয়নি। ঘর খালি থাকার বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন পানি নেই বিদ্যুত নেই বের হওয়ার রাস্তা নেই এই জন্য এখানে কেউ থাকতে চায় না। এরপর ডুমুরিয়া সদরের ট্রলারঘাট এলাকার আবাসনে গেলে দেখা যায় নদীর পাড়ে নির্মাণ করা হয়েছে মোট ২৯ টি ঘর। বসবাসকারী জামাল উদ্দিন নামের এক ব্যাক্তি বলেন আমি এখানে এক বছর যাবত আছি এখনও জমির দলিল হয়নি। শুনেছি কয়েকটি ঘরের দলিল হয়েছে বেশির ভাগই এখনও দলিল হয়নি। এ বিষয় নিয়ে কথা বলার জন্য মুঠো ফোনে যোগাযোগ করা হলে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এস এম আশিস মোমতাজ ফোন রিসিভ করেননি। পরবর্তীতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আল-আমিন বাংলার ভোরকে বলেন, অনেকগুলো সমস্যা আছে তবে আমরা যেখানে যে সমস্যা জানতে পারছি সেটাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে সমাধান করার চেষ্টা করছি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন কাগজ পত্র যাচাই বাছাই করে প্রস্তুত করতে দেরি হয়েছে যে কারণে পরে দলিল করা হয়েছে। এখনও কিছু বাকি আছে সেটার কাজও চলমান রয়েছে সেগুলোও দলিল করা হবে।