বাংলার ভোর প্রতিবেদক
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (যবিপ্রবি) অর্গানোগ্রাম (টিওঅ্যান্ডই) অনুমোদন ছাড়াই নিয়োগ কার্যক্রম কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না-তা জানতে চেয়ে রুলনিশি জারি করেছে হাইকোর্ট।
যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার বাসিন্দা আব্দুল করিমের দায়ের করা রিট পিটিশন গ্রহণ করে হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী ইবাদত হোসাইন এই রুলনিশি জারি দেন। বুধবার (১২ জুন) রিটের আদেশের সার্টিফাইড কপি পেয়ে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদীর আইনজীবী মোস্তফা গোলাম কিবরিয়া।
মামলার বাদী যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার কৃষ্ণনগর এলাকার বাসিন্দা ও বঙ্গবন্ধু পরিষদ যশোর জেলা শাখার প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল করিম জানান, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (যবিপ্রবি) ‘অর্গানোগ্রাম (টিওঅ্যান্ডই) অনুমোদন ছাড়াই একের পর এক কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগের মহোৎসব চলছে’ বলে অভিযোগ উঠে।
এই অভিযোগ নিয়ে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় একাধিক সংবাদ প্রকাশিত হয়। এর প্রেক্ষিতে তিনি অভিযোগ তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান, শিক্ষা সচিব ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান বরাবর আবেদন করেন।
এরপর তিনি গত ২৮ মে হাইকোর্টে রিট পিটিশন দাখিল করেন। রিটে বিবাদী করা হয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এর চেয়ারম্যান, শিক্ষা সচিব, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান ও সচিব, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব, যবিপ্রবি উপাচার্য, রেজিস্ট্রার ও ডেপুটি রেজিস্ট্রারকে। হাইকোর্ট তার আবেদন গ্রহণ করে ১০ জুন রুলনিশি জারি করেছে। গত ১২ জুন তিনি আদেশের সার্টিফাইড কপি হাতে পেয়েছেন।
বাদীর আইনজীবী মোস্তফা গোলাম কিবরিয়া জানান, হাইকোর্ট আব্দুল করিমের রিট আমলে নিয়ে ‘যবিপ্রবিতে অর্গানোগ্রাম (টিওঅ্যান্ডই) অনুমোদন ছাড়াই নিয়োগ কার্যক্রম কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না-তা জানতে চেয়ে রুলনিশি জারি করেছে। আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে সংশ্লিষ্টদের রুলের জবার দেয়ার জন্য বলা হয়েছে।
এছাড়া দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এর চেয়ারম্যান, শিক্ষা সচিব ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যানকে হাইকোর্ট ইতোপূর্বে আব্দুল করিমের করা অভিযোগ আইনগতভাবে নিস্পত্তির জন্য নির্দেশ দিয়েছে।
এজন্য তিন মাসের সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। হাইকোর্টে বাদীর পক্ষে ছিলেন, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মোতাহার হোসেন সাজু ও আইনজীবী মোস্তফা গোলাম কিবরিয়া। অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন, ডেপুটি এটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন, সহকারী এটর্নি জেনারেল আসাদুজ্জামান, আফিফা বেগম স্বপ্না ও সরোয়ার আক্তার মাসুদ এবং দুদকের আইনজীবী আসিফ হাসান।
এ ব্যাপারে যবিপ্রবি উপাচার্য প্রফেসর ড. আনোয়ার হোসেন জানান, হাইকোর্টের নির্দেশনা সংক্রান্ত কোনো কাগজপত্র এখনও পাননি। তবে তিনি উল্লেখ করেছেন, তিনি ২০১৭ সালে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদান করার পর থেকে এখন পর্যন্ত ইউজিসি’র সৃষ্ট পদ ছাড়া এবং অনুমোদন ছাড়া কোনো নিয়োগ প্রদান করেননি।
প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) অর্গানোগ্রাম (টিওঅ্যান্ডই) অনুমোদন ছাড়াই একের পর এক কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগের মহোৎসব চলছে বলে অভিযোগ উঠে। এসব নিয়োগে স্বজনপ্রীতি ও অর্থবাণিজ্যেরও পাশাপাশি ‘পছন্দের প্রার্থী’কে নিয়োগ দিতে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতেও অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া যায়।
যবিপ্রবি’র প্রস্তাবিত অর্গানোগ্রাম শিক্ষা মন্ত্রণালয় সুপারিশসহ ফেরত পাঠালেও তা সংশোধন না করেই অনুমোদিত বলে প্রচারেরও অভিযোগ ওঠে। এ নিয়ে বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় সংবাদও প্রকাশিত হয়।