বাংলার ভোর প্রতিবেদক
নিষিদ্ধ ঘোষিত চরমপন্থী সংগঠন বিপ্লবী কমিউনিস্ট পার্টির খুলনা বিভাগের সামরিক প্রধান ও কুষ্টিয়ার শীর্ষ সন্ত্রাসী আব্দুল লতিফ লাল্টু (৬০) ও তার সহযোগী ইদ্রিস মন্ডলকে (৪৫) দুইটি বিদেশি পিস্তল, একটিটি রিভলবার, দুইটি ম্যাগাজিন ও ৬ রাউন্ডগুলি সহ যশোর থেকে আটক করেছে র্যাব-৬ এর সদস্যরা।
তথ্য ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় র্যাব-৬, যশোরের একটি দল ১০ জুলাই রাতে জানতে পারে, কিছু সন্ত্রাসী বেনাপোল থেকে মাদকের একটি চালান নিয়ে যশোরের উদ্দেশ্যে আসছে। এমন সংবাদের ভিত্তিতে বেনাপোল সড়কে দলুর গেট (রেলগেট) পাঁকা রাস্তার ওপর চেকপোস্ট বসিয়ে রাত ১০ টার দিকে যানবাহক তল্লাশীকে একটি মোটরসাইকেলকে সিগন্যাল দিলে মোটরসাইকেলে থাকা দুই ব্যক্তি সেটি ফেলে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। সে সময় র্যাব সদস্যরা ধাওয়া করে লাল্টু ও তার সহযোগীকে আটক করে।
আটক আব্দুল লতিফ লাল্টু (৬০) কুষ্টিয়ার দুর্বাডাঙ্গা এলাকার বাসিন্দা। তার দেহ তল্লাশী করে দুইটি বিদেশি পিস্তল, দুইটি ম্যাগাজিন যার একটি ম্যাগাজিনের ভেতর ৬ রাউন্ড গুলি ভর্তি ছিল। তার সাথে আটক সহযোগী ইদ্রিস মন্ডলও একই গ্রামের বাসিন্দা। তার হেফাজত থেকে ১ টি রিভলবার উদ্ধার করা হয় ও ১ টি মোটরসাইকেল উদ্ধার হয়। গ্রেফতারকৃত আসামিদের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করে র্যাব জানতে পেরেছে ১৯৮৬-১৯৮৭ সালে নিষিদ্ধ ঘোষিত শীর্ষ চরমপন্থী সংগঠন বিপ্লবী কমিউনিস্ট পার্টির খুলনা বিভাগের সামরিক প্রধান হিসেবে আব্দুল লতিফ লাল্টু (৬০) সন্ত্রাসী কার্যক্রম শুরু করে।
কুষ্টিয়ায় জাসদ নেতা কাজী আরেফ মার্ডার, যশোরের সাংবাদিক শামছুর রহমান কেবল মার্ডার, যশোরের টাউন হলে উদীচী বোমা হামলা ট্রাজেডির পর সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের নির্দেশে পুলিশ কম্বিং অপারেশন শুরু করে। এই অপারেশনে গোটা দক্ষিণাঞ্চলে চরমপন্থিদের নেটওয়ার্ক ভেঙ্গে পড়ে। সে সময় জীবন রক্ষায় চরমপন্থী লাল্টু অস্ত্র জমা দিয়ে আত্মসমর্পণ করে স্বাভাবিক জীবনে ফেরার ঘোষণা দেয়।
সূত্র বলছে, ২০০১ সালে তিনি নিষিদ্ধ ঘোষিত শীর্ষ চরমপন্থী সংগঠন “শ্রমজীবী গণমুক্তিফৌজ” প্রতিষ্ঠা করে এবং তার বিশ্বস্ত কয়েকজন সহযোগীদের হাতে দায়িত্ব অর্পণ করে। পরবর্তীতে তার নিজের এলাকায় একটি ২০/৩০ জনের গ্রুপ তৈরি করে নিজ জেলার মধ্যে খুন, টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, ডাকাতি ও কন্ট্রাক্ট কিলিং মিশন শুরু করে। সন্ত্রাসী লাল্টু এলাকায় শীর্ষ সন্ত্রাসী হিসেবেই পরিচিত। সে অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র ক্রয়-বিক্রয়ের স্বর্গরাজ্য তৈরি করেছে বলেও জানা যায়।
বিভিন্ন অপকর্মের দায়ে ২০২২ সালের ৩১ অক্টোবর পুলিশের হাতে আটক হয়ে দীর্ঘদিন কারাভোগ করে জামিনে মুক্তি পেয়ে গত ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ সন্ত্রাসী আব্দুল লতিফ লাল্টুর নেতৃত্বে ২০/২৫ জন সন্ত্রারীরা কুষ্টিয়া জেলার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) থানাধীন দুর্বাচারা এলাকায় অর্ধশতাধিক গুলি বর্ষণ সহ বাড়ি-ঘর ও দোকানপাট ভাংচুর, লুটপাট করে।