মণিরামপুর সংবাদদাতা
সংসদ সদস্য ও উপজেলা প্রশাসনের কর্তা ব্যক্তিদের সামনে এক শিক্ষককে লাঞ্ছিত করার ঘটনা নিয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা মহলে ব্যপক প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। গত ১৮ জুলাই মণিরামপুর শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ফুটবল টুনার্মেন্ট চলাকালে আওয়ামী লীগের দুই নেতার হাতে ইমদাদ হোসেন নামে এক শিক্ষক লাঞ্ছিত হন। ঘটনার সময় সংসদ সদস্য এসএম ইয়াকুব আলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন, প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আবু মোত্তালেব আলমসহ অনেকেই সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
গত বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) পাঁচাকড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং মাঝ লাউড়ী কল-কাকলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ফাইনাল খেলা চলছিল। এ সময় দু’পক্ষের খেলোয়াড়দের নিয়ে জটিলতা সৃষ্টির একপর্যায়ে অতিথিদের উপস্থিতিতে আওয়ামী লীগের দুই নেতা ইমদাদ হোসেন নামে এক শিক্ষককে চড় থাপ্পড় মেরে লাঞ্ছিত করেন।
বিষয়টি নিয়ে উপস্থিত শিক্ষকদের মাঝে প্রতিক্রিয়া দেখা দিলে স্থানীয় সংসদ সদস্য তাৎক্ষণিক ঘটনার দুঃখ প্রকাশ করে মীমাংসা করে দেন। যদিও তাৎক্ষণিকভাবে মীমাংসা করা হলেও দ্রুততার সাথে ছড়িয়ে যায় উপজেলা শিক্ষক মহলে।
জনসম্মুখে শিক্ষার্থীদের সামনে একজন শিক্ষককে লাঞ্ছিত করার বিষয়টি মেনে নিতে পারছেন না শিক্ষকরা। টানা কয়েকদিনে কারফিউয়ের কারণে বিষয়টি ধামাচাপা থাকলেও এখন প্রকাশ্যে আসতে শুরু করেছে। এ নিয়ে ক্ষোভে ভাসছে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমাজ।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে একাধিক শিক্ষক বলেন, আওয়ামী লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেয়া হলে পুনরায় হেনস্থা হতে হবে। এ আশংকা থেকেই নিরবে সহ্য করতে হচ্ছে।
যোগাযোগ করা হলে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি সভাপতি আহম্মেদ শফি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ঘটনাটি যদিও এমপি মীমাংসা করেছেন, তবু সাধারণ শিক্ষকদের মাঝে প্রতিক্রিয়া চলছে। জনসম্মুখে একজন শিক্ষককে মারপিট করার অর্থ সকল শিক্ষককে লাঞ্ছিত করার সামিল বলে মনে করেন তিনি।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোত্তালেব আলম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, সংসদ সদস্য বিষয়টি মীমাংসা করে দিয়েছেন। এ কারণে আমরা কিছুই ভাবছি না।
মণিরামপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কমিটি সভাপতি আমজাদ হোসেন লাভলু বলেন, বিষয়টি আমিও শুনেছি। শিক্ষককে মারপিটের ঘটনাটি দুঃখজনক।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন বলেন, সংসদ সদস্যর উপস্থিতিতে তাৎক্ষণিক বিষয়টি মীমাংসা করা হয়।
বিষয়টি নিয়ে সংসদ সদস্য এসএম ইয়াকুব আলী বলেন, ঘটনাটি যদিও আমার অগোচরে ঘটেছে। তবু আমি নিষ্পত্তি করেছি এবং দুঃখ প্রকাশ করছি।