সাতক্ষীরা সংবাদদাতা
সাতক্ষীরা সদর উপজেলার এডভোকেট আব্দুর রহমান কলেজের সভাপতির বিরুদ্ধে। শিক্ষাগত যোগ্যতাবিহীন সরদার রমেশ চন্দ্রকে জীববিজ্ঞান প্রভাষক পদে নিয়োগ প্রদান করা ও বর্তমানে আবুল হোসেন মো. মকসুদুর রহমান পাঁচ বছর দরে একাধিক্রমে ৪ বার সভাপতির দায়িত্বে থেকে জ্যেষ্ঠতা লংঘন করে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সংবিধি পরিপন্থী ও বিষয় বহির্ভূত, শিক্ষাগত যোগ্যতাবিহীন জীববিজ্ঞানের সহকারী অধ্যাপক সরদার রমেশ চন্দ্রকে দীর্ঘ ৪ বছরের বেশি সময় ধরে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্বে বসিয়ে যোগসাজশে পরিকল্পিতভাবে অনিয়ম ও আর্থিক দুর্নীতি অব্যাহত রেখেছেন।
গভর্নিং বডির সভাপতি আবুল হোসেন মো. মকছুদুর রহমান ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সরদার রমেশ চন্দ্রের বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা, নিয়োগ বাণিজ্য, ব্যাংক জালিয়াতি, স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ কলেজের নামকরণের শর্ত পূরণ না করে ব্যক্তি নামে কলেজের নামকরণ করা হয়েছে। এ খাতে প্রায় পনের লাখ টাকা আত্মসাত করেছেন সভাপতি আবুল হোসেন মো. মকছুদুর রহমান। এমনকি সভাপতি ও তার ভাইয়ের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য অন্তর্ভুক্তির জন্য বিশ লাখ টাকাও কোষাগারে জমা করা হয়নি।
২০১৯ সালে গভর্নিং বডি গঠনকালে গভর্নিং বডির দাতা ও হিতৈষী প্রতিনিধি নির্বাচনের সময়ে বর্তমান সভাপতি আবুল হোসেন মো. মকছুদুর রহমান ও সদস্য সচিব সরদার রমেশ চন্দ্রের যোগসাজসে তিন লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকার অনিয়ম সংঘঠিত হয়েছে অভিযোগ করেন ওই কলেজের শিক্ষক কর্মচারী।
ব্যাক্তি নামে কলেজের জমির কবলা দলিল মূলে দাতা-গ্রহীতা একই ব্যাক্তি – প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি আবুল হোসেন মো. মকছুদুর রহমান। জমির মূল্য নগদ বার লক্ষ টাকা দেখানো হয়েছে। শিক্ষক-কর্মচারীদের অনুদানের টাকায় জমি ক্রয় করে একই ব্যাক্তি দাতা-গ্রহীতা নাটক সাজিয়ে কলেজের নামে জমি রেজিস্ট্রি করা হয়েছে। কলেজ প্রতিষ্ঠাকালে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের ৩৪ জন শিক্ষক কর্মচারীর নিকট থেকে তেইশ লাখ টাকার নিয়োগ বাণিজ্য করেছেন প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি। এছাড়া নিয়োগ নির্বাচনী পরীক্ষায় প্রতিযোগিতাবিহীন নিয়োগের ভিত্তিতে অবৈধ নিয়োগ দেয়া কলেজের ৮ জন কর্মচারী-জনবলের কাছ থেকে দশ লক্ষ টাকার দুর্নীতি করেছেন সভাপতি।
গভর্নিং বডির সভাপতি, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সরদার রমেশ চন্দ্র ও গভর্নিং বডির সদস্যগণ যোগসাজশে ১৩ আগস্ট ২০২২ পত্রিকায় প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তি মূলে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমতি ব্যতিত, অত্যন্ত গোপনীয়তায় ২ জন ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগ দিয়ে ৩০ লাখ টাকা আর্থিক দুর্নীতি করেছেন। সভাপতি ও অধ্যক্ষ গভর্নিং বডির সদস্যগণ যোগসাজশে ২০২৩ সালে জাল জালিয়াতের মাধ্যমে ব্যাকডেটে ২০০৫-৬ কলেজ চালুর পূর্ববর্তী সময় দেখিয়ে ২০ জন প্রভাষক ও কর্মচারীর অবৈধ নিয়োগ দেখানো হয়েছে। নিয়োগে দুই কোটি টাকা অবৈধ নিয়োগ বাণিজ্য করে আত্মসাৎ করেছেন যেটা একাধিক সূত্রে অভিযোগ উঠেছে।
২০২৩ সালে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অডিটের নামে ননএমপিও শিক্ষক সুশান্ত কুমার মন্ডল এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের নিকট ২৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছে বলে শিক্ষকরা বলেন। শুধু তাই নয় উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের জনবল কাঠামো ১৯৯৫ এর নীতিমালা উপেক্ষা করে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে যুক্তিবিদ্যা ও জীববিজ্ঞান প্রভাষক, অফিস সহকারী কাম হিসাব সহকারী, নিম্নমান সহকারী পদে নিয়োগ দেয়া হয়েছে যা তদন্ত করলে সত্যতা পাওয়া যাবে।
শিক্ষাগত যোগ্যতাবিহীন, নিয়োগ নির্বাচনী বোর্ডের প্রতিযোগিতাবিহীন, অনিয়ম-দুর্নীতি করে কমিটির সভাপতি হিসেবে আবুল হোসেন মোঃ মকছুদুর রহমান দশ লক্ষ টাকা ঘুষের বিনিময়ে অবৈধ নিয়োগে সরকারের প্রায় এক কোটি সায়ত্রিশ লক্ষ ৬২ হাজার টাকার আর্থিক ক্ষতি সাধন করেছেন।
যুক্তিবিদ্যা প্রভাষক শামীম-উল-আলমের ফলাফল পত্র নিয়োগবিধি বহির্ভূত প্রস্তুতকৃত। সে প্রেক্ষিতে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের যুক্তিবিদ্যা প্রভাষক শাশীম-উল-আলমের অবৈধ নিয়োগ বাতিল ও এমপিও বাতিলযোগ্য। অবৈধভাবে তিনি এযাবৎ একান্ন লাখ পনের হাজার টাকা বেতন ভাতা উত্তলন করেন। জীববিজ্ঞান প্রভাষক সরদার রমেশ চন্দ্র অবৈধভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে এযাবৎ সরকারী বেতন-ভাতাদী বাবদ প্রায় একান্ন লক্ষ পনের হাজার টাকা অবৈধভাবে উত্তোলন করেছেন।
অফিস সহকারী কাম হিসাব সহকারী মোঃ. আকতারুজ্জামান অবৈধভাবে নিয়োগ প্রাপ্ত হয়ে এযাবৎ সরকারী বেতন-ভাতাদী বাবদ মোট সতের লক্ষ তিরাশি হাজার টাকা উত্তোলন করছেন।
নিম্নমান সহকারী দীপঙ্কর বাছাড় অবৈধভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে এযাবৎ সরকারী বেতন-ভাতাদী বাবদ মোট সতের লক্ষ সাতচল্লিশ হাজার টাকা উত্তোলন করছেন।
বর্তমান সভাপতি আবুল হোসেন মো. মকছুদুর রহমান প্রতিষ্ঠাকালীন এযাবৎ একাধিক্রমে ৫বার বিধি বহির্ভূত সভাপতি মনোনীত হয়ে যশোর শিক্ষাবোর্ড, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি-বিধান সংবিধি উপেক্ষার সামিল।
সভাপতি এককভাবে একাত্তর লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকার অনিয়ম করেছেন। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ-২ সরদার রমেশ চন্দ্র এককভাবে ৫১ লাখ ১৫ হাজার টাকা অবৈধ বেতন উত্তোলন করেছেন। তারা উভয়ে তাদের অন্যান্য সহযোগিসহ অবৈধ নিয়োগ বাণিজ্য করে অর্থ আত্মসাৎ করেছেন দুই কোটি ত্রিশ লক্ষ টাকার অধিক। অফিস সহকারী মোঃ আকতারুজ্জামান সতের লক্ষ টাকা অবৈধভাবে উত্তোলন করছেন। নিম্নমান সহকারী দীপঙ্কর বাছাড় ১৭ লক্ষ সাতচল্লিশ হাজার টাকা অবৈধভাবে উত্তোলন করছেন যাহা তদন্ত করলে বেরিয়ে আসবে।
চলতি বছর ৪ জুলাই অত্র কলেজের গভর্নিং বডির মেয়াদ শেষ হয়েছে।
অত্র কলেজের সভাপতি আবুল হোসেন মো. মকছুদুর রহমানের এর সঙ্গে মোবাইলে কথা বললে তিনি এপ্রতিবেদককে বলেন আমি কোনো দূর্নীতি করিনি এবং যারা বাংলাদেশ চাই না তারা এধরনের কথা বলে। ওই কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সরদার রমেশ চন্দ্র গনমাধ্যম কর্মিকে বলেন বিশ্ববিদ্যালয় আমাকে দায়িত্ব দিয়েছে তাই দায়িত্বে আছি এবং কলেজের কোনো টাকা লুটপাঠ হয়নি বা এত টাকা কি করে কলেজে আসবে।