বাংলার ভোর প্রতিবেদক
পুলিশ বাহিনী সংস্কারে ১১ দফা দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন যশোরের পুলিশ সদস্যরা। বুধবার বিকেল ৫টায় বাংলাদেশ পুলিশ অধস্তন কর্মচারী সংগঠনের কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে জেলা পুলিশ লাইন্সের অভ্যন্তরণে এ মিছিল বের করা হয়। দুই শতাধিক পুলিশের উপপরিদর্শক, সহকারী উপপরিদর্শক ও কনস্টেবল মিছিলে অংশ নেন।
বিক্ষুব্ধ পুলিশ সদস্যরা জানান, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনার সরকার পতনের হলে পুলিশের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তারা আত্মগোপনে চলে যান। এরপর পুলিশ কনস্টেবলসহ নিম্ন পর্যায়ের অফিসাররা আতঙ্ক ও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। উধ্বর্তন কর্মকর্তাদের কারণে পুলিশ বাহিনী জনগণের কাছে প্রত্যাখিত হয়েছে। অসংখ্য পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন। এ অবস্থায় পুলিশ বাহিনীতে সংস্কার ছাড়া তারা কাজে যোগদান করতে পারছেন না। এজন্য আজ ১১দফা দাবিতে তারা আজ বিক্ষোভ করছেন। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা কাজে যোগদান করবেন না বলে জানান।
১১ দফা দাবিতে উল্লেখ করা হয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যে সকল পুলিশ সদস্যকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে তাদের বিচার করতে হবে। বাংলাদেশ পুলিশ কোনো সরকার অথবা রাজনৈতিক দলের অধীনে কাজ করবে না। পুলিশ ৮ (আট) ঘণ্টার বেশি ডিউটি করবে না। অধস্তন কর্মচারীরা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কোনো মৌখিক আদেশ পালনে বাধ্য থাকবে না। বাংলাদেশ পুলিশের অধস্তন কর্মচারীদের পদোন্নতির ক্ষেত্রে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণের পদোন্নতির মতো পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে। বাংলাদেশ পুলিশের বাৎসরিক ২০ দিন ছুটি বৃদ্ধি করে ৬০ দিন করতে হবে।
ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মতো অধস্তন কর্মচারীদেরকে সোর্স মানি দিতে হবে, কারণ অধস্তন কর্মচারীরাই মাঠে কাজ করে। বাংলাদেশ পুলিশের প্রতিটি ইউনিটি প্রতি মাসের ১০ তারিখের মধ্যে পূর্ববর্তী মাসের টিএ/ডিএ পরিশোধ করতে হবে। নতুন বেতন স্কেল প্রণয়ন পূর্বক মূল বেতন বৃদ্ধি করতে হবে। বাংলাদেশ পুলিশের ঝুঁকিভাতা বৃদ্ধি করতে হবে। পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সসহ পুলিশ লাইন্স, থানা, ফাঁড়ি, তদন্ত কেন্দ্রের নিরাপত্তা বেষ্টনী জোরদার করে নিরাপদ কর্মস্থল নিশ্চিত করতে হবে।
এদিকে খবর পেয়ে পুলিশ সুপার মাসুদ আলমসহ উধ্বর্তন কর্মকর্তারা পুলিশ লাইনে যান এবং তাদের দাবির প্রতি সংহতি প্রকাশ করেন। একইসাথে দাবি বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের আশ্বাস দেন।
পুলিশ সুপার মাসুদ আলম বলেন, পুলিশ সদস্যদের দাবিগুলো যৌক্তিক। একটি মানবিক ও জনবান্ধব পুলিশ বাহিনী গঠনে কর্তৃপক্ষ দাবিগুলো বিবেচনা করবে সেই প্রত্যাশা করছি।