মনিরামপুর সংবাদদাতা
যশোরের মণিরামপুরে চেক জালিয়াতি মামলার জেরে এক কিশোরকে অপহরণ এবং তার পরিবারের সদস্যদের মারধর ও বাড়িতে লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার জালালপুর ঘোষপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। চার ঘণ্টা পর অপহৃত কিশোরকে উদ্ধার করা হয়।
অপহরণের শিকার স্কুলছাত্রের নাম পিয়াশ ঘোষ (১৪)। সে পলাশ ঘোষের ছেলে এবং স্থানীয় জালালপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী।
পিয়াশ ঘোষের পরিবারে হামলা ও তার কিশোর ছেলেকে অপহরণের খবর পেয়ে এগিয়ে আসেন স্থানীয় বিএনপির নেতা শামসুজ্জামান শান্ত, আজিবার রহমান ও হোসেন আলীসহ অনেকে। তাদের তৎপরতায় চার ঘণ্টা পর অপহৃত কিশোরকে উদ্ধার করা হয়।
অভিযোগ ওঠা ব্যক্তির নাম আবুল হাসান। তার বাড়ি মনিরামপুর উপজেলার শাহপুর এলাকায়। একই উপজেলার গালদা গ্রামে শ্বশুরবাড়িতে থেকে একটি দাখিল মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করেন তিনি।
পলাশ ঘোষ বলেন, ‘পাঁচ থেকে সাত বছর আগে আবুল হাসান আমার কাছ থেকে লাভের ওপর ৩ লাখ টাকা নেন। সেই টাকা পরে ৫ লাখে দাঁড়ায়। স্থানীয়ভাবে সালিস করিয়েও টাকা আদায় করতে পারিনি। একপর্যায়ে আবুল হাসান আমাকে ৫ লাখ টাকার একটা চেক দেন। পরে ব্যাংকে গিয়ে টাকা না পেয়ে আদালতে মামলা করি। সেই মামলায় আবুল হাসানের ৫ লাখ টাকার জরিমানা ও এক বছরের সাজা দেন আদালত। সেই মামলায় কিছুদিন কারাগারে থেকে আদালতে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা জমা দিয়ে জামিনে বেরিয়ে আসেন আবুল হাসান।’
পলাশ ঘোষ আরও বলেন, ‘গতকাল রাত ৮টার দিকে সাত-আটটি মোটরসাইকেলে করে আবুল হাসান ও তার ছেলেসহ ১৫ থেকে ২০ জন আমার বাড়িতে আসেন। এরপর তাঁরা আমার শিশুসন্তানের গলায় ছুরি ধরে ১০ লাখ টাকা দাবি করেন। আমাকে মারধর করে বাড়িতে লুটপাট করেন। হামলাকারীরা আমার স্ত্রী ও মায়ের গলা থেকে স্বর্ণের চেইন ও ঘরের টাকা-পয়সা ছিনিয়ে নিয়েছেন। দাবি করা ১০ লাখ টাকা না পেয়ে তারা ফাকা স্ট্যাম্পে আমার স্বাক্ষর নেন। পরে আমার ব্যবহৃত মোটরসাইকেলসহ আমার ১৪ বছরের ছেলেকে অপহরণ করে নিয়ে যায়।’
অপহরণের শিকার পিয়াস ঘোষ বলেন, ‘আমাকে মোটরসাইকেলে করে নিয়ে যশোরে একটি আমবাগানে বসিয়ে রাখে। এ সময় তারা আমার বাড়িতে মোবাইল ফোনে কল করে ১০ লাখ টাকা দেয়ার জন্য চাপ দিতে থাকে। পরে রাত ১২টার দিকে আমাকে গলদা বাজারে এনে ছেড়ে দেয়।’
অভিযোগের বিষয়ে আবুল হাসানের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে খেদাপাড়া ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক শামসুজ্জামান শান্ত বলেন, ‘টাকা-পয়সার লেনদেনের জেরে এ ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার জামিনে বেরিয়ে এসে যশোর শহর থেকে লোক ভাড়া করে আনেন মাস্টার হাসান। খবর পেয়ে আমরা মোটরসাইকেল ও কিশোরকে উদ্ধার করে পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দিয়েছি।’
শামসুজ্জামান শান্ত আরও বলেন, ‘পলাশ বলেছে, ওরা দুটি চেইন ও তিনটি মোবাইল নিয়ে গেছে। টাকা-পয়সা নেয়ার বিষয়ে শুনিনি। এটা নিয়ে আমরা পরে বসতে চেয়েছি।’
মনিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এ বি এম মেহেদী মাসুদ বলেন, ‘এ বিষয়ে কেউ আমাদের জানায়নি।’