যশোরে প্রতিটি সরকারি দপ্তরে ছাত্ররা দুর্নীতি প্রতিরোধে কাজ করবে: রাশেদ
বাংলার ভোর প্রতিবেদক
বৈষম্যহীন ও দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার শপথ নিয়েছেন যশোরের ছাত্র জনতা। বুধবার বিকেলে শহরের ঐতিহাসিক টাউন হল ময়দানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মহাসমাবেশে তারা এই শপথ নেন। শপথ বাক্য পাঠ করান সংগঠনটির যশোর জেলা শাখার প্রধান সমন্বয়ক রাশেদ খান। এর আগে, দুপুর থেকে বাস, ট্রাক, পিকআপে জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে ছাত্র জনতা সমাবেত হয় টাউন হল ময়দানে। সমাবেশে আসা ছাত্র জনতাকে হাতে বা মাথায় বাংলাদেশের পতাকা বেঁধে বিভিন্ন স্লোগান সম্বলিত প্ল্যাকার্ড নিয়ে সমাবেশে অংশ নিতে দেখা যায়।
শেখ হাসিনার সরকারের টানা তিন মেয়াদের শাসন আমলের নানা অনিয়ম দুর্নীতি নির্যাতনের তথ্য তুলে ধরে সমাবেশে বক্তারা বলেন, শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসেই প্রথমে বিডিআর বিদ্রোহ ঘটিয়েছিলো। বিজিবির মেজর জেনারেলসহ বড় বড় কর্মকর্তাদের হত্যা করা হয়েছে স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পরিকল্পনায়। শাপলা চত্বরে হেজাফত ইসলামের উপর গণহত্যার মতো ঘটনা ঘটানো হয়েছে। সেইসব হত্যার বিচার চাই।
স্বৈরাচার সরকার ক্ষমতায় থেকে দেশটাকে বিক্রি করার পায়তারা করেছে। দেশের অলিতে গলিতে রক্ত দিয়ে সেই সরকারকে হটিয়ে দিয়ে নতুন করে দেশটা স্বাধীন করেছে ছাত্র জনতা। আমরা যখন দেশটাকে সংস্কারে ব্যন্ত; ঠিক সেই সময়ে দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ব্যস্ত তাদের স্বার্থ হাসিলে। শুধু রাস্তা আর দেয়ালে রঙ আল্পনা এঁকে আর ঝাড়ু দিলেই রাষ্ট্র সংস্কার হবে না। দেশের মানুষকে পরিবর্তন আনতে হবে। ছাত্রজনতার রক্ত দিয়ে যে স্বাধীনতা এনেছি, সেই স্বাধীন দেশে ছাত্রদের রাজনৈতিক দলের কাছে বলি হতে দেওয়া যাবে না।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যশোর জেলা শাখার প্রধান সমন্বয়ক রাশেদ খান বলেন, ‘ছাত্ররা ঘুনে খাওয়া রাষ্ট্রকে সংস্কার করতে এসেছে। ভাঙতে আসি নাই। সমাজে সমস্ত বৈষম্য দূর করতে চাই। ধর্ম, ধনী গরিবের বৈষম্য দূর করতে চাই। সমাজে সকল বৈষম্য, দুর্নীতি মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত ছাত্রদের এই আন্দোলন চলবে।
তিনি বলেন, যারা দেশে অস্থিরতা সৃষ্টি করতে চাই, তাদের বিরুদ্ধে আবারও ছাত্রজনতা রুখে দিবে। আমাদের বিপ্লব ছিলো দুর্নীতি শোষণের বিরুদ্ধে। যা প্রতিবিপ্লবের স্বপ্ন দেখছেন তারা কাপুরুষ। মনে রাখবেন রাজপথ দখলে থাকে সাহসীদের। আপনারা তো রাজপথ থেকে পালিয়েছেন। আপনাদের রাজপথ কখনো ছিলো না, কাপুরুষদের থাকবেও না। যশোর থেকে শুরু হবে দুর্নীতি বৈষম্য বাংলাদেশ গড়ার কাজ।
প্রতিটি সরকারি দপ্তরে ছাত্রজনতা বৈষম্য ও দুর্নীতি প্রতিরোধে কাজ করবে। ইতোমধ্যে ছাত্ররা হাসপাতাল থেকে শুরু করে বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে কাজ শুরু করেছে। বাজারদর নিয়ন্ত্রণ, বাজারের সিণ্ডিকেট ভেঙ্গে দিতে কাজ করছে। দুর্নীতি রন্ধে রন্ধে ছাত্ররা ঢুকে সিণ্ডিকেট ভেঙ্গে দিবে। আমরা কথা দিচ্ছি, বাংলাদেশে বৈষম্য দূর করার যে স্বপ্ন নিয়ে ছাত্র জনতা জীবন উৎসর্গ করেছেন, এই স্বপ্ন বাস্তবায়িত না হওয়া পর্যন্ত আমরা প্রত্যেকেই জীবন বাজি রাখব।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক রাশেদ খানের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন শিক্ষার্থী মাসুম বিল্লাহ, জান্নাতুল ফোয়ারা অন্তরা, ইমরান খান, জেসিনা মোর্শেদ, ফরিদ হাসান প্রমুখ। মহাসমাবেশ শুরু আগে তিন ধর্মের পবিত্র গ্রন্থ থেকে পাঠ করা হয়।