বাংলার ভোর ডেস্ক
নিপীড়িত ও নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত সাংবাদিকদের অধিকার নিয়ে কাজ করার লক্ষ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করেছে পেশাগত অধিকার সংগঠন ‘জার্নালিস্টস ফর জাস্টিস।
বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) নসরুল হামিদ মিলনায়তনে ‘নির্যাতিত সাংবাদিকদের কথা’ শীর্ষক সভায় সংগঠনটির আনুষ্ঠানিক আত্মপ্রকাশের ঘোষণা দেন আহ্বায়ক কাজী জেসিন। এ সময় তিনি গত ১৫ বছরে নিপীড়িত সাংবাদিকদের তালিকা করা হবে বলে জানান।
সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের যুগ্ম আহ্বায়ক আলফাজ আনাম, সদস্য জাহেদ চৌধুরী, অলিউল্লাহ নোমান, মারুফ মল্লিক ও এহসান মাহমুদ উপস্থিত ছিলেন।
কাজী জেসিন বলেন, ‘প্রায় দুই দশক ধরে বাংলাদেশে অসংখ্য সাংবাদিক ও সংবাদকর্মী নানা ধরনের নির্যাতন ও হয়রানির শিকার হয়েছেন। কিন্তু নিপীড়িত সাংবাদিকদের প্রকৃত সংখ্যা আমরা কেউ জানি না। আবার শুধু সাংবাদিকেরা নিজেরাই নন, তাদের পরিবারের সদস্যদের পর্যন্ত মামলা, হামলা এবং হয়রানির মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে।’
নিপীড়ন থেকে রক্ষা পেতে অনেক সাংবাদিককে দেশ ছাড়তে হয়েছে বলে জানান কাজী জেসিন।
তিনি বলেন, ‘বিদেশে বসে সাংবাদিকতা চালিয়ে যাওয়ার কারণে সাংবাদিক তাসনীম খলিল, জুলকারনাইন সায়ের, কনক সরওয়ারসহ আরও অনেকের পরিবারের সদস্যরা দেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং ক্ষমতাসীন ক্যাডারদের নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এ ধরনের নির্যাতিত সাংবাদিকদের বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করে তারা যাতে যথাযথ বিচার এবং ক্ষতিপূরণ পান তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যেই এই সংগঠনের আত্মপ্রকাশ। একই সঙ্গে বর্তমান এবং ভবিষ্যতে যেকোনো সরকারের সময় যাতে পেশাগত কাজের কারণে সাংবাদিকেরা নিপীড়নের শিকার না হন সে জন্য কাজ করে যাব।’
সংগঠনের সদস্য জাহেদ চৌধুরী বলেন, ‘সাংবাদিকদের হয়রানির ঘটনাগুলো এই ফোরামের মাধ্যমে ধারাবাহিকভাবে তুলে ধরা হবে। চাকরিচ্যুত সাংবাদিকদের ক্ষতিপূরণ পাওয়ার বিষয়ে আমরা সোচ্চার থাকব। সরকারসহ অন্যান্য অংশীজনের সঙ্গে কথা বলে নিপীড়িত সাংবাদিকেরা যাতে যথাযথ বিচার পান তা নিশ্চিত করতে আমরা নিরলসভাবে কাজ করব।’
সদস্য অলিউল্লাহ নোমান বলেন, ‘ছাত্রদের আত্মত্যাগের কল্যাণে আমরা আজ স্বাধীনভাবে কথা বলছি। তাদের ত্যাগ ব্যর্থ হতে দেয়া যাবে না। এ জন্য আমাদের সর্বত্র সুবিচার প্রতিষ্ঠায় সচেষ্ট হতে হবে।’
সদস্য মারুফ মল্লিক বলেন, বাংলাদেশে সাম্প্রতিক অতীতে সাংবাদিকতার জন্য কালো অধ্যায় শুরু হয় ওয়ান-ইলেভেন সরকারের সময় থেকে। গত ১৫ বছরে তা আরও ভয়াবহ রূপ ধারণ করে। ওই সময়ে দলদাস সাংবাদিকতার নজির বিশ্বের সাম্প্রতিক ইতিহাসে দেখা যায় না। আমরা এই কালো অধ্যায় থেকে বের হয়ে সাংবাদিকতার জন্য সুস্থ একটা পরিবেশ তৈরির লক্ষ্যে কাজ করে যেতে চাই। আশার কথা যে, গতকাল (১১ সেপ্টেম্বর) প্রধান উপদেষ্টা তার বক্তব্যে মিডিয়ার সংস্কারের জন্য কমিশন গঠনের কথা বলেছেন। গণমাধ্যমকে পদলেহী মাধ্যম হওয়া থেকে বের করে আনতে হবে।