বাংলার ভোর প্রতিবেদক
চণ্ডীপাঠ ও আগমনী গান পরিবেশনের মধ্য দিয়ে যশোরে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের শারদীয় দুর্গোৎসবের শুভ মহালয়া অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর মাধ্যমে শুরু হয় দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা। বুধবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে শহরের পৌর পার্কে সনাতন ধর্ম সংঘের আয়োজনে মহালয়া উপলক্ষে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। প্রদীপ প্রজ্বালন ও উলুধ্বনির মাধ্যমে মহালয়ার সূচনা হয়। এরপর মূল আচার-অনুষ্ঠান হিসেবে ঘট স্থাপন করে ফুল, তুলসী ও বেলপাতা দিয়ে পূজা করা হয়।
ত্রিভঙ্গ চরণ ব্রহ্মচারীর চণ্ডীপাঠের সঙ্গে সমবেত কণ্ঠে ইয়া চণ্ডী অর্চনা করবে ভক্তরা। সনাতন ধর্ম সংঘের যশোরের নেতা গোপিকান্ত সরকার বলেন, ‘শারদীয় উৎসব ছড়িয়ে দিতে মহালয়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। আজ থেকেই শারদীয় দুর্গা উৎসব শুরু হয়েছে। এদিন দেবী দুর্গার আবির্ভাব ঘটে। এ দিন থেকেই দুর্গাপূজার দিন গণনা শুরু হয়।
মহালয়া মানেই আর ছয় দিনের প্রতীক্ষা মায়ের পূজার। আর এই দিনেই দেবীর চক্ষুদান করা হয়।’ এ ছাড়া যশোর কালেক্টরেট পুকুরপাড়, বেজপাড়ায়ও মহালয়া উৎসব অনুষ্ঠিত হয়।
এদিকে, যশোরে শারদীয় দুর্গাপূজার প্রস্তুতি চলছে পুরোদমে। প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন ভাস্কর শিল্পীরা। জেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদের তথ্যমতে, এ বছর জেলায় ৬৫২টি মন্দির ও মণ্ডপে পূজার আয়োজন চলছে। গত বছর জেলায় ৭৩২টি মণ্ডপে পূজা হয়েছিল। গতবছরের তুলনায় এবার মণ্ডপের সংখ্যা কমেছে ৮০টি। জলাবদ্ধতা, রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর নিরাপত্তার অভাব ও আর্থিক সংকটের কারণে পূজামণ্ডপ কমেছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
যশোর জেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি দীপংকর দাস রতন বলেন, ‘গত বছরের তুলনায় এবার পূজার মণ্ডপ কমেছে। কেশবপুর, মনিরামপুরে জলাবদ্ধতার কারণে অনেক জায়গায় পূজার আয়োজন করা সম্ভব হয়নি। দেশে বড় একটা প্রেক্ষাপট পরিবর্তন হয়েছে। অনেক হিন্দু ব্যবসায়ী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। স্বাভাবিকভাবে মানুষের মনে কিছুটা আতঙ্ক রয়েছে।
তবে যশোরের কোথাও প্রতিমা ভাঙচুর, হুমকি-ধমকির কোনো অভিযোগ আমাদের কাছে আসেনি। প্রতিটি মণ্ডপ এলাকায় হিন্দু-মুসলিম মিলে নিরাপত্তা কমিটি করা হয়েছে। সরকারিভাবে মন্দিরে পূজার জন্য সহযোগিতা করা হচ্ছে। প্রশাসন ও রাজনৈতিক দলের নেতারা যথেষ্ঠ সহযোগিতা করছেন।’