বাংলার ভোর প্রতিবেদক
মিষ্টি শীত ও শিশির স্নাত হেমেন্তর শেষ মাস অগ্রহায়ণে যশোর গত কয়েকদিন ধরে বেশ ঠান্ডা পড়ছে। পুরোপুরি শীতের মাস পৌষ-মাঘ শুরুর আগেই দিনে ও রাতে বইছে হিমেল হাওয়া। আর এমন শীতল দিনে উষ্ণতা ছড়াতে শ্রমজীবী মানুষের মাঝে শীত নিবারণের উপকরণ বিতরণ শুরু করেছে ব্রাদার টিটোস হোমের শিক্ষার্থীরা। নিজেদের তৈরি হস্তশিল্প বিক্রির টাকায় কেনা কানটুপি, হাত ও পায়ের মোজা বিতরণ করছে। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় শহরের লালদিঘির পাড়ে স্কুলটির সামনে এই কার্যক্রম শুরু হয়। শিক্ষার্থীরা এদিন রিক্সা, ভ্যান ও ইজিবাইক চালকসহ শ্রমজীবী মানুষের মাথায় নিজ হাতে কানটুপি পড়িয়ে দেয়। এ ছাড়াও বিতরণ করে হাত ও পায়ের মোজা।
ব্রাদার টিটোস হোম স্কুলের অধ্যক্ষ আলী আজম টিটো জানান, বিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীদের বছরভর হস্তশিল্পের ওপর প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। বাড়িতে বসে শিক্ষার্থীরা অসংখ্য ক্রাফটস্ তৈরি করে। তিনি বলেন, এখানকার ছোট ছোট বাচ্চারা কাগজ, শোলা, আইসক্রিমের কাঠি ও অন্যান্য জিনিস দিয়ে দৃষ্টিনন্দন ‘ক্রাফট’ বানায়। যেগুলো বড়দেরও চমকে দেয়। শিশুদের তৈরি এসব শিল্পকর্ম নিয়ে প্রতিবছর এক্সিবিশন করা হয়।
ব্রাদার টিটো আরো জানান, গত ৭ ডিসেম্বর বার্ষিক হস্তশিল্প প্রর্দশনী ও বিক্রয় অনুষ্ঠান হয়েছে। এই আয়োজনে শিশুরা তাদের হস্তশিল্প সামগ্রি বিক্রি থেকে ১৬ হাজার ৭০০ টাকা উপার্জন করেছে। সেই টাকায় শীত নিবারণের বিভিন্ন উপকরণ কেনা হয়েছে। শিশুরা নিজ হাতে রিক্সা চালকসহ শ্রমজীবী মাঝে শীত নিবারণের বিভিন্ন উপকরণ বিতরণ শুরু করেছে। শীত নিবারণের এসব উপকরণ বিতরণের সময় স্কুলটির শিক্ষার্থী সাবিক সাদিক জানায়, সাদা চুলওয়ালা একটা রিক্সা চালক দাদুর মাথায় একটি টুপিয়ে পড়িয়ে দিয়েছি। তিনি মাথায় হাত রেখে দোয়া করেছেন। এতে আমার খুব ভালো লেগেছে।
রিক্সা চালক আব্দুল আলিম জানান, শিশুরা তাদের নিজেদের উপার্জিত টাকায় আমাদের মতো শ্রমজীবী মানুষের হাতে কানটুপি, হাত ও পায়ের মোজা তুলে দিচ্ছে; এটা খুবই আনন্দের। খুব সকালে ও রাতের বেলায় রিক্সা চালানোর সময় ঠান্ডা বাতাসে অনেক কষ্ট হয়। শিশুদের দেওয়া এসব শীত নিবারণের উপকরণ তখন খুব কাজে লাগবে। নূর ইমাম বাবুল বলেন, শুধুমাত্র লেখাপড়া শিখলেই শিক্ষিত হওয়া যায় না। লেখাপড়ার পাশাপাশি মানবিকতা, সামাজিকতা ও নৈতিক শিক্ষায় শিক্ষিত হওয়ার দরকার আছে। ব্রাদার টিটোস হোম স্কুলের শিক্ষার্থীর এরকম মানবিক কাজের মধ্য দিয়ে প্রকৃত শিক্ষায় শিক্ষিত হচ্ছে।