বাংলার ভোর প্রতিবেদক
২০১৯ সালের ৭ অক্টোবর বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শেরেবাংলা হলের আবাসিক ছাত্র ও তড়িৎ কৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি সেই সময় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছিল। সেই সত্য ঘটনা অবলম্বনে নির্মিত হয়েছে স্বল্পদৈর্ঘ্য সিনেমা ‘রুম নম্বর ২০১১’। সিনেমাটি শুক্রবার দেশের সর্ববৃহৎ সিনেমা হল মনিহারের সিনেপ্লেক্সে প্রদর্শিত হয়েছে।
জেলা প্রশাসক আজাহারুল ইসলাম, পুলিশ সুপার জিয়াউদ্দিন আহমেদসহ সুধীজনের সিনেমাটি উপভোগ করেন। সিনেমাটি দর্শকের মনে নাড়া দিয়েছে। সন্ত্রাসমুক্ত ক্যাম্পাস ও স্বাধীন বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে আত্মমর্যাদা নিয়ে বেঁচে থাকার বার্তা দেয়া হয়েছে সিনেমায়। সিনেমাটি পরিচালনা করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী শেখ জিসান আহমেদ। চিত্রনাট্য রচনা করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক আনন জামান। চলচ্চিত্রটিতে অভিনয় করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী।
এ বিষয়ে সিনেমার পরিচালক ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শেখ জিসান আহমেদ জানান, ‘রুম নম্বর ২০১১’ সরাসরি বায়োপিক নয়। আবরারের ঘটনার ছায়া অবলম্বনে নির্মিত হয়েছে। আমরা নির্মাণের আগে তার পরিবার, বন্ধু, স্বজনদের সঙ্গে কথা বলেছি। আবরার সম্পর্কে সবকিছু জেনেই নির্মাণে হাত দিয়েছি। তবে আবরারের ঘটনাটি বুয়েটের হলেও এটির শুটিং হয়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর মুভিটার কাজ শেষ করেছি। ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতির বলি হয়ে যেন কেউ এ ধরনের ঘটনার শিকার না হয়। সিনেমায় সন্ত্রাসমুক্ত ক্যাম্পাসের বার্তা দেয়া হয়েছে।’
যশোরের নাট্যাভিনেতা মানস বিশ্বাস বলেন, ‘আসলেই আবরারের মৃত্যু ওই সময়ে সবশ্রেণী মানুষের মাঝে নাড়া দিয়েছিল। কিছু লোক প্রতিবাদ করলেও অনেকেই করতে পারেনি নানা কারণে। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর তাকে নিয়ে কিছু শিক্ষার্থী সিনেমা তৈরি করেছে। গল্পটি হৃদয়বিদারক। এরকম নির্যাতন বা মৃত্যু নিয়ে যত ঘটনা আছে; সেগুলো নিয়ে সিনেমা তৈরি করা উচিত। যাতে দেশের ভবিষ্যত প্রজন্ম ইতিহাস জানতে পারবে। এটা তো মূলত মুভি না; এ ধরনের নির্যাতন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বন্ধ হোক।’
যশোরের কবি মামুন আজাদ বলেন, ‘এ ধরনের মুভি জাতিকে অনুপ্রেরণা দেয়। ঘৃণিত ছাত্ররাজনীতির বিরুদ্ধে কথা বলে। সে ধরণের ছবি আরোও দেখতে চাই। আরবার হত্যায় কয়েকজন আটক হলেও দ্রুত আবরার হত্যার জড়িতদের রায় ঘোষণার দাবি জানান তিনি।’
সিনেমা নির্মাণ টিমের সদস্য ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রাজন্যা জানান, ‘কোন রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি বিষয় না। এটা প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের গল্প; আমাদের গল্প। এ ধরনের ইতিহাস বাস্তবভিত্তিক মৌলিক কাজের অংশ হতে পেরে গর্বিত ও আনন্দিত।’
মণিহার সিনেমা হলের ব্যবস্থাপক ও হিসাবরক্ষক তোফাজ্জেল হোসেন জানান, প্রথম দিনের চারটি শোতে ব্যাপক সাড়া পেয়েছি। আসলেই সিনেমা নয়; বাস্তব ঘটে যাওয়া বেদনা জাগানো গল্প। সেটা ফুটিয়ে তুলেছে কিছু শিক্ষার্থীরা। এই ধরনের সিনেমা আরো তৈরি হওয়া উচিত।
যশোরের জেলা প্রশাসক আজহারুল ইসলাম বলেন, ‘আবরারের সিনেমাটি বিগত সময়ে বাংলাদেশের বাস্তব চিত্র। শুধু শিক্ষার্থী নয় সারাদেশে একটি ভিতকর পরিবেশ ছিল। বিগত সময়ে তারাই চাকুরি পেতে; যারা তাদের চেতনা লালন করতো। ৫ আগস্টের পর নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি। আমরা দুটি বার্তা দিতে চাই। আবরারে মত ঘটনা দেশে আর দ্বিতীয়টি না ঘটুক। স্বাধীন সার্বভৌম আত্মমর্যাদা নিয়ে নতুন বাংলাদেশ গড়তে চাই।’
শিরোনাম:
- পুরাতন নেতৃত্বে আস্থা তৃণমূলের
- মণিহার প্রেক্ষাগৃহে ‘রুম নাম্বার ২০১১’ প্রদর্শন
- যশোরে দ্যোতনার মাসিক সাহিত্য আসর অনুষ্ঠিত
- যশোরে জুবায়েরপন্থীদের বিক্ষোভ মিছিল
- যশোরে খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় দোয়া
- যশোর জেলা জামায়াতের আমীর আগামি নির্বাচনের সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিন
- যশোরে কাচ্চি কুইন উদ্বোধন প্রথম দিনেই ভোজনরসিকদের ভিড়
- কালীগঞ্জে কৃষক সমাবেশ অনুষ্ঠিত