বাংলার ভোর প্রতিবেদক
যশোরে ডিসেম্বর মাসে অপরাধ বেড়েছে। খুন, নারী নির্যাতন, অপহরণ, ধর্ষণ, চুরি, মামলা ও মাদকদ্রব্য উদ্ধারের ঘটনায় মামলার সংখ্যাও বেড়েছে। অপরাধ প্রবণতা বেড়ে যাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে আইনশৃংখলা কমিটির সদস্যরা। রোববার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে মাসিক আইনশৃংখা কমিটির সভায় জেলার সার্বিক আইনশৃংখলা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করা হয়। জেলা প্রশাসক আজাহারুল ইসলামের সভাপতিত্বে সভায় ডিসেম্বর মাসের অপরাধ চিত্র তুলে ধরা হয়।
ডিসেম্বরের প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ছয় উপজেলায় খুন হয়েছে ১০জন। যশোর সদর উপজেলায় ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে ২টি। মনিরামপুরে দস্যুতা ১টি হয়েছে। তিন উপজেলায় ধর্ষণ হয়েছে ৩টি ও নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে ৮টি। অপহরণ ৭টি, গাড়ি চুরি ৬টি, অন্যান্য চুরি ৭টি। সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ৪টি। অন্যান্য মামলা হয়েছে ৯৬টি। অস্ত্র আইনে মামলা ৫টি। মাদকদ্রব্য সংক্রান্ত মামলা ১০৫টি, চোরাচালান ঘটেছে ২টি। এসব ঘটনায় সর্বমোট মামলা হয়েছে ২৫৬টি। নভেম্বর মাসে যা ছিল ২৪০টি।
জেলা প্রশাসক মো. আজহারুল ইসলাম বলেন, খুন, অপহরণ, গাড়ি চুরিসহ বেশ কিছু অপরাধ বেড়েছে। আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে কঠোর হাতে দমন করতে হবে। গ্রাম আদালতে অন্য কাজের পাশাপাশি মামলার বিষয়ে কাজ করতে হবে। এক শ্রেণির মাটিখেকোরা মাটি কেটে বিক্রি করছে। মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে তাদের জরিমানার আওতায় আনতে হবে। এছাড়া অপরাধ দমনে চেকপোস্ট বসিয়ে বিভিন্ন ধরনের গাড়ি, পরিবহন তল্লাশি করতে হবে।
জেলা প্রশাসক আজাহারুল ইসলাম আরও বলেন, সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে আমরা বিপদের মধ্যে আছি। অনেক দুর্ঘটনার বিষয় আমাদের কাছে এন্ট্রি হয়না। মোটরসাইকেল ও ইজিবাইকে দুর্ঘটনার হার বেশি। ট্রান্সপোর্ট বাড়িয়ে বেনাপোল ও চৌগাছা এলাকায় নজরদারি ও মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান বাড়াতে হবে। সারের কৃত্রিম সংকট তৈরির বিষয়েও তিনি স্থানীয় প্রশাসনকে সজাগ থাকতে হবে।
পুলিশ সুপার জিয়াউদ্দীন আহমেদ বলেন, আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি আস্তে আস্তে স্বাভাবিক হচ্ছে। আমরা কোনো ঘটনার বিষয়ে জানতে পারলে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার চেষ্টা করছি। শহরে যানজট ও মণিহার এলাকায় রাস্তা দখলের বিষয়ে পৌরসভার সাথে একযোগে কাজ করার কথাও বলেন তিনি। এছাড়া জলমহল ভোগ দখলের বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসনের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আহবান জানান।
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকারের উপপরিচালক রফিকুল হাসান, সিভিল সার্জন মাসুদ রানা, সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়া, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কমলেশ মজুমদার, চেম্বর অব কমার্সের সভাপতি মিজানুর রহমান খান, পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাড. সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু, ৪৯ বিজিবির সহকারী পরিচালক মাসুদ রানা প্রমুখ।