বাংলার ভোর প্রতিবেদক
শ্রদ্ধা, ভালোবাসা ও সমাজ বদলের লড়াই চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকারের মাধ্যমে চির বিদায় জানানো হয়েছে বাংলাদেশের বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের কেন্দ্রীয় সম্মানিত সদস্য, আজীবন বিপ্লবী, কমিউনিস্ট মুক্তিযোদ্ধা জাকির হোসেন হবিকে।
জাকির হোসেন হবি শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টার দিকে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
রোববার বেলা ১২টায় তার মরদেহ প্রিয় পার্টি অফিস যশোর শহরের ভোলা ট্যাংক রোডে আনা হয়।
সেখানে হবির কফিনে শ্রদ্ধা জানান বাংলাদেশের বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের কেন্দ্রীয়, যশোর জেলা, নড়াইল জেলা, খুলনা জেলাসহ বিভিন্ন উপজেলা কমিটির নেতৃবৃন্দ।
এরপর পর্যায়ক্রমে বাম গণতান্ত্রিক জোট, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী, বিবর্তন যশোর, সুরধুনী, কিংশুক সংগীত একাডেমি, কচিকাঁচা পরিষদ, যশোর বালিকা বিদ্যালয়, ভবদহ পানি নিস্কাশন সংগ্রাম কমিটি, বিপ্লবী যুব মৈত্রী, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী, বাংলাদেশ যুব মৈত্রী, নারী মুক্তি পরিষদ, কমরেড অমল সেন স্মৃতি রক্ষা কমিটি, শ্রমিক ফেডারেশন বাংলাদেশ, কৃষক ক্ষেতমজুর সমিতি, মৈত্রী ভলান্টিয়ার্সসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন।
এছাড়া মরহুম হবির প্রতি শ্রদ্ধা জানান তার পরিবারের সদস্য, নাজিমউদ্দিন ও ইভা বিশ্বাস পরিবারের সদস্য, শিক্ষাবিদ অধ্যাপক আফসার আলী, কপোতাক্ষ বাঁচাও আন্দোলনের উপদেষ্টা অনিল বিশ্বাস প্রমুখ।
বাদ জোহর যশোর শহরের শংকরপুর প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে তার নামাজে জানাজা শেষে বেজপাড়া তালতলা কবরস্থানে তাকে সমাহিত করা হয়।
শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদনকালে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক, বাম গণতান্ত্রিক জোটের কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদের সমন্বয়ক ইকবাল কবির জাহিদ, কেন্দ্রীয় সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য কাজী নজরুল ইসলাম ফিরোজ, গাজী আব্দুল হামিদ, নাজিমউদ্দীন, তসলিম উর রহমান, নওশের গাজী, ওমর আলী, কেন্দ্রীয় সম্মানীয় সদস্য প্রফেসর আফসার আলী, অনিল বিশ্বাস, পার্টির জেলা কমিটির সম্পাদক তসলিম উর রহমান, মিজানুর রহমান, নূর আলম, কামাল হাসান পলাশ, পলাশ বিশ্বাস, চৈতন্য পাল, খুলনা জেলা কমিটির সম্পাদক গাজী নওশের, নড়াইল জেলা কমিটির নেতা সোমন্ত গোলদার, মাগুরা জেলা কমিটির সম্পাদক কাজী নজরুল ইসলাম ফিরোজ, তারাপদ রায়, মণিরামপুর উপজেলার সিরাজুল ইসলাম, আব্দুল আজিজ, শুকুর আলী, অভয়নগর উপজেলার নূর আলম, ডা. শহিদুল ইসলাম, রণজিৎ বাওয়ালী, কানু বিশ্বাস, বাঘারপাড়া উপজেলার নেতা মলয় রায়, বিথীকা বিশ্বাস, সদর উপজেলার সাহবুদ্দিন বাটুল, সবুর, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির ইলাদাদ খান, আমিনুর রহমান হিরু, প্রকৌশলী আবু হাসান। বাসদের শাহজান আলী, হাচিনুর রহমান, আক্কাস আলী। জাসদ’র কেন্দ্রীয় কমিটির কার্যকরী সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা রবিউল আলম, অশোক রায়, অ্যাড. আবুল কায়েশ, শরিফ আহম্মেদ বাপ্পি, ওয়ার্কার্স পার্টি জেলা সভাপতি অ্যাড. আবু বকর সিদ্দিকী, সাধারণ সম্পাদক সবদুল হোসেন খান। জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের হাফিজুর রহমান, লাল পরিবারের পক্ষে খবির শিকদার, সুরাইয়া শিকদার ইলা।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন, অ্যাড. শহীদ আনোয়ার, হারুন-অর-রশীদ, অ্যাড. মাহমুদ হাসান বুলু, সাংবাদিক নেতা সাজেদ রহমান বকুল, নারী নেত্রী অর্চনা বিশ্বাস, সাংবাদিক তৌহিদ জামান, ইঞ্জি. রুহুল আমীন, সানোয়ার আলম খান দুলু, মামুনুর রশীদ, নওরোজ আলম খান চপল, শেখ আলাউদ্দিন, মঞ্জুরুল আলম, নিজামউদ্দিন অমিত, সুমন পোদ্দার, পলাশ মন্ডল, মোহাম্মদ দীপ কামাল, যোগেশ দত্ত, নাসির আহম্মেদ শেফার্ড, হাবিবুর রহমান মোহন প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, কমরেড জাকির হোসেন হবি ১৯৫১ সালের ১৫ জানুয়ারি যশোরের অভয়নগর উপজেলার চন্দ্রপুরে জন্মগ্রহণ করেন। ১৩ ভাই বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন দ্বিতীয়। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, এক ছেলে, দুই মেয়ে, নাতি-পুতি, রাজনৈতিক বন্ধু, অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
কমরেড হবি ১৯৬৭ সালে হাজী মুহাম্মদ মহসিন স্কুল থেকে ২য় বিভাগে মাধ্যমিক পাশ করেন। ১৯৬৯ সালে বিএল কলেজ থেকে ২য় বিভাগে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন। মেডিক্যাল ও প্রকৌশল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েও পার্টি সিদ্ধান্তে তিনি বিএল কলেজে রসায়ন নিয়ে ভর্তি হন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি গ্রামে চন্দ্রপুরে যেয়ে পার্টির বাহিনীতে যুক্ত হন এবং সরাসরি প্রতিরোধ যুদ্ধে নিয়োজিত হন।