মাগুরা সংবাদদাতা
দেশব্যাপি আলোচিত মাগুরার তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী আছিয়া ধর্ষণ ও হত্যা মামলাটির অভিযোগপত্র আমলে নিয়েছেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালত। বুধবার সকালে মাগুরার নারী ও নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিজ্ঞ বিচারক এম জাহিদ হাসান অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে চার্জ গঠন করেন। এবং সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য আগামী ২৭ এপ্রিল দিন ধার্য করেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, গত ১৩ এপ্রিল চাঞ্চল্যকর এ মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা মাগুরা সদর থানার ওসি (তদন্ত) আলাউদ্দিন সরদার শিশুটির মায়ের দায়েরকৃত মামলায় অভিযুক্ত চার আসামি আছিয়ার বোনের শশুর হিটু শেখ, বোনের শাশুড়ি জাহেদা বেগম, বোন জামাই সজিব শেখ ও সজিবের বড় ভাই রাতুল শেখের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।
মাগুরার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতের পিপি মনিরুল ইসলাম মুকুল জানান, মামলায় অভিযুক্ত সকল আসামিকে আদালতে উপস্থিত করে তাদের সামনেই আসামিদের বিরুদ্ধে পুলিশের চার্জশীটে যে অভিযোগ আনা হয়েছে সেটি পড়ে শুনানো হয়।
এসময় আসামিরা নিজেদের নিদোর্ষ দাবি করে। মাগুরার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালের বিজ্ঞ বিচারক শিশু নির্যতন দমন আইনের ৯/২ ধারা দণ্ডবিধির ৫০৬এর ২ এবং ২০১ ধারায় চার্জ গঠন করা হয়। পাশাপাশি সাক্ষীর জন্যে আগামী ২৭ এপ্রিল দিন ধার্য্য করেছেন। আদালত আসামিদের নিজেদের পক্ষে আইনজীবী নিয়োগের বিষয়ে বললে আসামিরা নিজেদের পক্ষে সরকারিভাবে আইনজীবী নিয়োগ চান।
উল্লেখ্য, মাগুরা শহরের নিজনান্দুয়ালী গ্রামে বোনের শশুর বাড়ি বেড়াতে গিয়ে ৬ মার্চ ধর্ষণের শিকার হয় ৮ বছরের শিশু আছিয়া। এ ঘটনার পর মাগুরা ছাড়াও সারাদেশে শিশু নির্যাতনের প্রতিবাদে স্কুল কলেজসহ বিভিন্ন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভে নামে। গত ৮ মার্চ পুলিশের অভিযুক্ত এই চারজনকেই আসামি করে সদর থানায় ধর্ষণ ও হত্যা চেষ্টার মামলা করেন শিশুটির মা। এদিকে ধর্ষণের ঘটনার পর শিশুটিকে প্রথমে মাগুরা ২৫০ শয্যা হাসপাতালে এবং পরে ঢাকায় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ১৩ মার্চ মারা যায় শিশুটি।
এ ঘটনার পর পুলিশের রিমাণ্ড চলাকালে মামলাটির মূল আসামি শিশুটির বোনের শশুর হিটু শেখ ১৫ মার্চ শনিবার বিকেলে মাগুরার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। যেখানে ধর্ষণ ও হত্যা চেষ্টার ঘটনায় তিনি একাই জড়িত বলে স্বীকারোক্তি দিলেও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা হিটু শেখ ছাড়াও মামলায় অভিযুক্ত বাকি ৩ জনের বিরুদ্ধেও অভিযোগ এনে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন।