বাংলার ভোর প্রতিবেদক
অনেক দিন পর যশোরে পাড়া মহল্লাগুলোতে ফিরেছে খেলা নিয়ে উৎসব আমেজ। গত ২৫ এপ্রিল থেকে যশোরে নগর বিএনপির বৈশাখী ফুটবল উৎসবকে কেন্দ্র করে ফিরেছে সেই পরিবেশ। যা দেখা যেত অনেক বছর আগে অনুর্ধ্ব-১৪, ১৬সহ নানা বয়সের ফুটবল অথবা ক্রিকেট টুর্নামেন্টের আয়োজন ঘিরে। এক পাড়া অথবা কোন সংগঠন করতো এই আয়োজন। ক্ষুদ্র এসব আয়োজনে জমজমাট থাকতো যশোরের পাড়া মহল্লার মাঠ কিংবা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাঠে। কিন্তু গত এক দশকে মানুষ যেমন রাজনৈতিক সহনশীলতার বিলুপ্তি দেখেছিলেন, তেমনি দেখেছেন পাড়া মহল্লায় ক্রীড়া সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন ক্রমশ বিলুপ্ত।
এমন পরিস্থিতিতে নগর বিএনপির বৈশাখী ফুটবল উৎসবের মধ্যে দিয়ে পাড়া পাড়ায় ফিরেছে ক্রীড়া উৎসব।
নগর বিএনপির সভাপতি রফিকুল ইসলাম চৌধুরী মুল্লুক চাঁদ বলেন, ‘বিগত সময়ে আওয়ামী লীগের দলীয়করণে রাজনৈতিক অস্থিরতা কেবল বাড়েনি, দলীয়করণের বিষবাস্প ছড়িয়েছিলো ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক চর্চাতেও। ৫ আগস্টের মধ্যে দিয়ে দেশে মুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। তাতে ক্রমশ ফিরে আসছে সামাজিক নানা অনুুষ্ঠান। এমন পরিস্থিতিতে পাড়ায় পাড়ায় আয়োজন করা হয়েছে বৈশাখী ফুটবল উৎসব। এই উৎসবের মধ্যে দিয়ে পাড়ায় পাড়ায় ক্রীড়া উৎসব শুরু হয়েছে। খেলার দিন পাড়ায় পাড়ায় থেকে ব্যান্ড পার্টির তালে তালে বের হচ্ছে শোভাযাত্রা। এক ধরনের উচ্ছ্বাস পরিলক্ষিত হচ্ছে যুব সমাজের ভিতর।’
এদিকে, বৈশাখী ফুটবল উৎসব-১৪৩২ প্রথম সেমিফাইনাল খেলা আজ রোববার। বিকেলে যশোর শামস-উল-হুদা স্টেডিয়ামে খেলাটি অনুষ্ঠিত হবে। এতদিন গ্রুপ পর্বের খেলাগুলো পাড়ার স্থানীয় মাঠে গড়ালেও সেমিফাইনাল ও ফাইনাল খেলাগুলো অনুষ্ঠিত হবে এই মাঠে। বৈশাখী ফুটবল উৎসবের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে শনিবার দুপুরে নগর বিএনপি সংবাদ সম্মেলন করে। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গেল ২৫ এপ্রিল যশোর সরকারি এম এম কলেজ মাঠে বৈশাখী ফুটবল উৎসবের যাত্রা শুরু হয়। ফুটবল উৎসবের উদ্বোধন করেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক নার্গিস বেগম। নগরের ৯টি ওয়ার্ডের নিয়ে ইতিমধ্যে গ্রুপ পর্বের খেলা শেষ হয়েছে। ৪ টি দল সেমিফাইনালে উত্তীর্ণ হয়েছে।
প্রথম সেমিফাইনালে মুখোমুখি হবে ৩ নম্বর বনাম ৬ নম্বর ওয়ার্ড। আগামী বুধবার দ্বিতীয় সেমিফাইনালে মুখোমুখি হবে ১ নম্বর বনাম ৯ নম্বর ওয়ার্ড। দুই সেমিফাইনাল বিজয়ী দল নিয়ে আগামী ১০ তারিখ (শনিবার) শ্রেষ্ঠত্ব লড়াই অনুষ্ঠিত হবে। প্রতিটি খেলায় উভয় দলের হয়ে তিনজন বহিরাগত অথবা বিদেশি খেলোয়াড় অংশ নিতে পারবে। চ্যাম্পিয়ন দলকে নগদ পঞ্চাশ হাজার টাকার প্রাইজ মানি ও আকর্ষণীয় ট্রফি এবং রানার আপ দলকে নগদ পঁচিশ হাজার টাকার প্রাইজ মানি ও আকর্ষণীয় ট্রফি প্রদান করা হবে। একই সাথে যশোরের প্রাক্তন ফুটবল খেলোয়াড় ও সংগঠকদেরকে সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এহসানুল হক সেতু বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের দোষররা ক্রীড়াঙ্গনকে জিম্মি করে রেখেছিল। আমাদের এই আয়োজনের মাধ্যমে ফুটবল খেলাকে নিয়ে থেমে থাকা স্বপ্ন নতুন করে জাগ্রত হবে। দীর্ঘ ১৫ বছর পর যশোরের মানুষ ফুটবলকে নতুন ভাবে পেতে শুরু করেছেন।’ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, দলটির সাংগঠনিক সম্পাদক ফারুক হোসেন, সহ-সভাপতি শামীম হোসেন বাদল, যুগ্ম-সম্পাদক জহিরুল আলম, টুর্নামেন্টের আহ্বায়ক সোহেল মাসুদ হাসান টিটো, জেলা ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক মাহতাব নাসির পলাশ প্রমুখ।