বাংলার ভোর প্রতিবেদক
যশোরে সিরাজুল ইসলাম কুটি হত্যায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে প্রেসক্লাবের সামনে নিহতের স্বজনরা মানববন্ধনে অংশ নেন। নিহত সিরাজুল ইসলাম কুটি শহরের বারান্দীপাড়া এলাকার বাসিন্দা ছিলেন।
মানববন্ধনে সিরাজুল ইসলাম কুটি ভাই মফিজুল ইসলাম ইমন বলেন, তারা মাসুরা বেগম হাসির মাধ্যমে কুটির ছেলে মেহেদী হাসানকে বিদেশে পাঠানোর জন্য ২০২৪ সালের ৭ জুলাই ১২ লাখ টাকা প্রদান করেন। পরবর্তীতে ২০২৫ সালের ২৯ বাকি ৩ লাখ টাকা এবং পাসপোর্ট দিতে গেলে মাসুরা বেগম হাসির বাড়িতে এক ভয়াবহ ঘটনার সূত্রপাত হয়। ওই দিন সকাল আনুমানিক ৯টায় তারা হাসির বাহাদুরপুর গ্রামের বাড়িতে যান।
সেখানে বাকি ৩ লাখ টাকা দেওয়ার পর কুটি তার ছেলেকে দ্রুত বিদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করতে বলেন, অন্যথায় সম্পূর্ণ টাকা ফেরত দেয়ার দাবি জানান। এতে হাসি ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। এ সময় মাসুরা বেগম হাসির ছোট মেয়ে মনিকা খাতুন (২০) কুটির অন্ডকোষ চেপে ধরলে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। এরপর হাসি ঘরে থাকা চাকু দিয়ে কুুটির দু’চোখে উপর্যুপরি আঘাত করেন।
অন্যান্য আসামিরা শাবল ও লোহার রড দিয়ে কুটির মাথায় একাধিকবার আঘাত করে গুরুতর জখম করে। ইমন বাধা দিতে গেলে রেজাউল ইসলাম রেজা ও মনিরুল ইসলাম তাকে এলোপাতাড়ি মারপিট করে এবং অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। ইমনকে পাশের একটি রুমে প্রায় দুই ঘণ্টা আটকে রাখা হয়।
স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় পরিবারের সদস্যরা খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছালে আসামিরা পালিয়ে যায়। গুরুতর আহত অবস্থায় সিরাজুল ইসলাম কুটিকে প্রথমে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল, যশোরে ভর্তি করা হয়। সেখানে তার অবস্থা গুরুতর দেখে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। ৭ টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় কুটি মারা যান।
এ ঘটনায় মফিজুল ইসলাম ইমন বাদি হয়ে কোতোয়ালী মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মাসুরা বেগম হাসি বর্তমানে জেলহাজতে থাকলেও, বাকি আসামিরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে।
পুলিশ তাদের গ্রেপ্তারে কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। আসামিরা মামলার সাক্ষী এবং তার পরিবারের সদস্যদের প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে। নিহত সিরাজুল ইসলাম কুটির পরিবার মাসুরা বেগম হাসির ফাঁসি। এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত সকল আসামির শাস্তি দাবি করেছেন। মানববন্ধনে সিরাজুল ইসলাম কুটির পরিবারের সদস্য ও স্থানীয় ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।