তালা সংবাদদাতা
মাদকাসক্ত ছেলে হাবিবুর রহমানকে হত্যার অভিযোগে তালায় হতভাগ্য মা পারুল বেগম গ্রেফতার হয়েছে। তালা থানা পুলিশ সোমবার রাতে তাকে গ্রেফতার করেন। ঘটনায় প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটক মা খুনের ঘটনা স্বীকার করেছেন। মাদকাসক্ত ভ্যানচালক ছেলে মোটরসাইকেল না পেয়ে মাকে হত্যা করতে আসলে ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে ছেলে মারা যায়।
জানা গেছে, উপজেলার আটরই গ্রামের হাবিবুর মোড়ল (৩০) পেশায় ভ্যানচালক এবং মাদকাসক্ত। মাদক সেবনের জন্য সে প্রায়ই তার মা পারুল বেগম (৫৫) এবং স্ত্রীকে মারপিট করতো। এ কারনে ইতোপূর্বে তার ২টি স্ত্রী সংসার ছেড়ে চলে যায়।
নিহত হাবিবুরের বর্তমান স্ত্রী শান্তা খাতুন বলেন, তার স্বামী মাদক সেবন করে আবার কখনও মাদকের টাকার জন্য তাকেসহ শাশুড়ি পারুল বেগমকে মারপিট ও গালিগালাজ করতো। গত কিছুদিন ধরে স্বামী হাবিবুর মটোরসাইকেল কেনার জন্য শাশুড়ির কাছে টাকা চেয়ে চাপ দিচ্ছিল। কিন্তু দরিদ্র শাশুড়ি সেই টাকা দিতে না পারায় সোমবার (২১ জুলাই) রাত ৯টার দিকে হাবিবুর রহমান বাড়িতে এসে টাকার জন্য আমাকে ও আমার শাশুড়িকে গালিগালাজ সহ মারপিট করে।
একপর্যায়ে আমি অচেতন হয়ে পড়ি এবং জ্ঞান ফেরার পর স্বামীকে রক্তাক্ত দেখি। এ সময় তার কপাল, গলা ও বুকে কোপের চিহ্ন ছিল। পরে রাত সাড়ে ১০টার দিকে স্বামী হাবিবুর রহমানকে তালা হাসপাতালে নিয়ে আসলে ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
পরে খবর পেয়ে তালা থানা পুলিশ হাসপাতালে এসে লাশ উদ্ধার করেন এবং ঘটনার প্রাথমিক তদন্ত শুরু করেন। এসময় নিহত হাবিবুর রহমানের মা পারুল বেগম খুন করার কথা প্রথমে অস্বীকার করলেও পরে ছেলের সাথে তার ধস্তাধস্তির কথা স্বীকার করে বলেন, ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে ছেলে হাবিবুরে গলায় ও বুকে হাসুয়ার কোপ লাগলে সে মারা যায়।
তালা থানার ওসি মো. মাইনউদ্দিন বলেন, ঘটনার সংবাদ পেয়ে গত রাতে ঘটনাস্থল থেকে হত্যার আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী শান্তা খাতুন বাদী হয়ে থানায় একটি হত্যা মামলা (১১/২৫) দায়ের করেছেন।
অপরদিকে গতরাতে তালা হাসপাতাল থেকে আটক মা পারুল বেগমকে মঙ্গলবার (২২ জুলাই) সকালে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া নিহত হাবিবুরের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য সাতক্ষীরা মর্গে পাঠানো হয়েছে।