বাংলার ভোর প্রতিবেদক
যশোরে বাজারে বেড়েছে বেশিরভাগ শাকসবজির দাম। আগের চেয়ে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের সবজি ও কাঁচা মরিচ ও তেলের দাম। বাজারে মাছের তুলনায় মাংসের দাম কম। ফলে ভিড় বেড়েছে মাংসের দোকানে। শুক্রবার যশোরে বিভিন্ন কাঁচাবাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখতে পাওয়া যায়।
শুক্রবার (২৫ জুলাই) যশোর শহরের হাজী মোহাম্মদ মহসিন রোড বড় বাজার ও রেলস্টেশন বাজার ঘুরে দেখা গেছে কমবেশি সবরকম সবজির দাম সর্বনিম্ন ৩০ থেকে সর্বোচ্চ ১২০ টাকা কেজি। যা কয়েকদিন যাবত স্থিতিশীল থাকলেও রয়েছে ক্রেতা অসন্তোষ। বর্তমানে প্রতি কেজি কুমড়ো ৩০ টাকা, কচুর মুখি ৪০ টাকা, কুশি ৪০ টাকা, কাঁচা ঝাল মানভেদে ১৬০ থেকে ২০০ টাকা, পটল ৪০ টাকা, বেগুন ১০০ টাকা, ঢেরষ ৪০ টাকা, পুঁইশাক ৪০ টাকা, ওলকচু ৮০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, কলা ৬০ টাকা, পেঁপে ৪০ টাকা, আমড়া ৪০ টাকা, কাকরোল ৮০ টাকা, করলা ১২০ টাকা, উচ্ছে ৮০ টাকা, ধুন্দল ৪০ টাকা, সবুজ শাক ৮০ টাকা, ঝিঙে ৬০ টাকা, টমেটো ১২০ টাকা, শসা ১০০ টাকা, গাজর ১৩০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া লাউ আকার ভেদে ৫০ থেকে ৭০ এবং কচুর লতি ৩০ টাকা আটি বিক্রি হচ্ছে। এর মধ্যে কিছু সবজির দাম গত সপ্তাহের তুলনায় বৃদ্ধি পেয়েছে। কিছু সবজির স্থিতিশীল এবং কিছু সবজির দাম সামান্য কমেছে।
এতে অসন্তোষ প্রকাশ করছেন মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত আয়ের মানুষ। সবজির দাম নাগালের বাইরে থাকায় তারা অভিযোগের সুরে বলেন, ৭০/৮০ টাকা কেজির তরকারি কিনে অবশিষ্ট টাকায় অন্য কিছু তারা কিনতে পারছেন না।
যশোর শহরে নির্মাণ শ্রমিকের কাজ করেন ভুট্টা খান জানান, পেটের তাগিদে তিনি গ্রামের বাড়ি সাতক্ষীরা ছেড়ে যশোর শহরে পরিবার নিয়ে থাকেন। কাজের আশায় রোজ কাকা ডাকা ভোরে লালদিঘীর পাড়ে অবস্থান নিলেও টানা বৃষ্টিতে কাজ অনিয়মিত। তার উপর তরিতরকারির দাম বেশি হওয়ায় বেগ পেতে হচ্ছে তাকে। এ যেন নুন আনতে পান্তা ফুরানোর দশা।
সবজি বিক্রেতা শরিফুল ইসলাম বলেন, আড়তে সবজির আমদানি কম হওয়ায় দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। আমদানি বৃদ্ধি পেলে দাম স্বাভাবিকভাবে কমে যাবে।
আলু এবং মশলা জাতীয় পণ্যের বাজার স্থিতিশীল রয়েছে। বর্তমানে প্রতি কেজি আলু ২৫, পেঁয়াজ ৫৫, রসুন ১০০ থেকে ১২০, আদা ১২০ থেকে ১৪০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। তবে বেড়েছে খোলা সয়াবিন তেলের দাম। বর্তমানে খোলা সয়াবিন তেল ৫ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে ১৮৫ টাকা বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৯০ টাকা প্রতি লিটার। খোলা আটা প্রতি কেজি ৪০, ময়দা ৫৬ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। সবরকম ডালের দাম স্থিতিশীল রয়েছে।
বড় বাজারের চাল বাজার ঘুরে দেখা গেছে, চালের দাম স্থিতিশীল রয়েছে। বর্তমানে মিনিকেট চাল মানভেদে প্রতি কেজি ৬৪ থেকে ৬৫ টাকা, কাজললতা
৫৮ থেকে ৬০, বাসমতি ৮৪ থেকে ৮৬, ৬৩ চাল ৬৮ থেকে ৭০, ২৮ চাল ৬০ থেকে ৬২, মোটা স্বর্ণ ৫২, মোটা হিরা ৪৯ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
চাল ব্যবসায়ী অসিত সাহা বলেন, এ বছর চালের বাজারে তেমন একটা পরিবর্তন আসবে না। হয়তো কেজিতে দুই এক টাকা কম বেশি হবে।
মুরগী বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বর্তমানে লেয়ার জাতের মুরগি ৩২০ টাকা, ব্রয়লার ১৭০ টাকা, সোনালী ২৯০ টাকা এবং দেশি মুরগি ৫৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। বিসমিল্লাহ ব্রয়লার হাউসের মালিক জনি বলেন, মুরগি বিক্রি বেড়েছে। মাছের তুলনায় মুরগীর দাম কম হওয়ায় ক্রেতা এদিকে ঝুঁকছে। এছা গরু ৭৫০, খাসি ১১০০ থেকে ১২০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
মাছের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বর্তমানে সাড়ে ৩ থেকে ৪ কেজি ওজনের কাতলা ৪২০ টাকা কেজি, একই ওজনের রুই ৩৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া পাবদা মাছ আকার ভেদে ৪০০ থেকে ৬০০, বাগদা চিংড়ি ৮০০, হরিণা চিংড়ি ৭০০, বাটা ২২০, বড় পাঙাশ ১৮০, পারশে ৪৬০, তেলাপিয়া ১৯০, কই ২০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
মাছ বিক্রেতা শুভ বিশ্বাস বলেন, বৃষ্টি কমলে মাছের দাম কমবে। এছাড়া ভারতে রফতানি হওয়ার কারনে স্থানীয় বাজারে পাবদা মাছের সরবরাহ কমে যাওয়ায় দাম বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানান তিনি।
বাজারে ইলিশ মাছের দাম গত সপ্তাহের তুলনায় কিছুটা কমেছে বলে লক্ষ্য করা যায়।
ডিমের পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ী ‘মায়ের দোয়া এন্টারপ্রাইজ’ এর মালিক সাব্বির হোসেন জানান, বর্তমানে বর্তমানে হাঁসের ডিম ৬০, লাল ডিম ৩৬, সাদা ডিম ৩২ এবং বাদামী ডিম ৩৩ টাকা প্রতি হালি বিক্রি হচ্ছে।