বাংলার ভোর প্রতিবেদক
দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্প প্রতিষ্ঠান নওয়াপাড়া গ্রুপের প্রধান কার্যালয়ে পেট্রলবোমা হামলাকারীদের গ্রেফতারের দাবিতে অর্ধদিবস ধর্মঘট ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ব্যবসায়ী ও শ্রমিকরা রোববার সকাল ৮ টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত এ কর্মসূচি পালন করে।
সমাবেশ থেকে তিন দিনের মধ্য হামলাকারীদের গ্রেফতারের দাবি জানানো হয়। অন্যথায় হরতাল অবরোধের কর্মসূচি ঘোষণার হুঁশিয়ারি দেয়া হয়।
নওয়াপাড়া সার, সিমেন্ট, খাদ্য শস্য ও কয়লা ব্যবসায়ী সমিতি, নৌবন্দর হ্যান্ডলিং শ্রমিক ইউনিয়ন, মটর শ্রমিক ইউনিয়ন ও ট্রাক ট্রান্সপোর্ট সমিতির উদ্যোগে আয়োজিত কর্মসূচিতে আমদানিকারক, রপ্তানিকারক, ঘাট, মটর শ্রমিকসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা কর্মচারী এবং রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন। এ সময় ব্যবসায়ী নেতারা বলেন, তিন যুগের বেশি সময় দেশের অন্যতম শিল্পপ্রতিষ্ঠান নওয়াপাড়া গ্রুপ যশোরের নওয়াপাড়ায় ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে। এছাড়া দেশের আমদানি রপ্তানিতে সুনামের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছেন। গত ১৮ জুলাই ভোর রাতে ৪ জন দুর্বৃত্তকারি যশোরে নওয়াপাড়া বাজারে অবস্থিত নওয়াপাড়া গ্রুপের প্রধান কার্যালয়ে পেট্রল বোমা ও ককটেল নিক্ষেপ করে। এই হামলা ছিল পূর্বকল্পিত।
হামলার মূল উদ্দেশ্য নওয়াপাড়ায় ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি করা। নওয়াপাড়া গ্রুপে হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। ১০ দিন অতিক্রম হলেও বোমা হামলাকারীরা গ্রেফতার না হওয়ায় ব্যবসায়ীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগেছেন।
তারা আরো বলেন, যশোরে নওয়াপাড়া মোকাম থেকে দেশের ৬৫ থেকে ৭০ ভাগ সার সরবরাহ করা হয়। যে মুহূর্তে দেশের শীর্ষ স্থানীয় ব্যবসায়ীরা অন্তবর্তী
সরকারকে দেশে খাদ্য শস্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ করার লক্ষ্যে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করে যাচ্ছে ঠিক সেই সময়ে পূর্বকল্পিত ভাবে পেট্রল বোমা ও ককটেল নিক্ষেপ করে এই ঘটনা ঘটিয়েছে। যা ব্যবসায়ীদের ভীতসন্ত্রস্ত করে তুলেছে। সমাবেশ থেকে আগামী তিন দিনের মধ্য হামলাকারীদের গ্রেফতারের দাবি জানানো হয়। অন্যথায় হরতাল অবরোধের কর্মসূচি ঘোষণার হুঁশিয়ারি দেয়া হয়।
নওয়াপাড়া সার, সিমেন্ট, খাদ্য শস্য ও কয়লা ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক শাহজালাল হোসেন বলেন, ‘এখন টেকনোলজির যুগ। হামলার ঘটনায় সিসি ফুটেজ, অভিযুক্তদের ছবি সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে দিয়েছি। কিন্তু ১০ দিন পার হলেও এখনো পুলিশ কাউকে আটক করতে পারেনি। এমন পরিস্থিতিতে দেশের বড় বড় শিল্পগ্রুপ আমাদের এখানে ব্যবসা করতে রাজি হচ্ছে না। তারা বলছে, আমরা নাকি তাদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হচ্ছি। তাই এই নওয়াপাড়াতে ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে এই ব্যবসায়ীদের উদ্যোগ নিতে হবে। ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন করতে হবে এই সব দুবৃর্ত্তদের বিরুদ্ধে। আমরা আগামী ৭২ ঘন্টা আল্টিমেটাম দিচ্ছি। এর মধ্যে জড়িতদের আটক করতে না পারলে নওয়াপাড়া বন্দর অচল করে দেওয়া হবে।’
নওয়াপাড়া সার, সিমেন্ট, খাদ্যশস্য ও কয়লা ব্যবসায়ী সমিতির সহ সভাপতি আব্দুল আওয়াল হোসেনের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন অভয়নগর থানা বিএনপির সভাপতি ফারাজী মতিয়ার রহমান, সাধারণ সম্পাদক, গোলাম হায়দার ডাবলু, সার সমিতির সহ-সভাপতি মশিয়ার রহমান, পৌর বিএনপির সভাপতি আবু নঈম মোড়ল, সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম, সাবেক মেয়র রবিউল হোসেন, নওয়াপাড়া প্রেসক্লাবের সভাপতি এস এম মুজিবর রহমান, হ্যাল্ডলিং শ্রমিক ইউনিয়নের আহবায়ক মাসুদ রানা, নওয়াপাড়া মটর শ্রমিক ইউনিয়নের সদস্য সচিব রফিকুল ইসলাম টুলু, উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক বাকিউজ্জামান রানা, স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক হাবিবুর রহমান মোল্যা, ব্যবসায়ী শেখ আসাদুল্লাহ আসাদ, নূর আলম পাটোয়ারি।
এদিকে এ ঘটনায় প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে বিক্রয় প্রতিনিধি সাইফুল ইসলাম অভয়নগর থানায় অভিযোগ দিয়েছেন। তবে এই ঘটনায় কাউকে আটক করা যায়নি বলে জানান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল আলীম। তিনি বলেন, ‘সিসি ক্যামেরা ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। পর্যালোচনা করে জড়িতদের আটকে অভিযান চলমান রয়েছে।’