বাংলার ভোর প্রতিবেদক
যশোরের অভয়নগরের নওয়াপাড়ার ব্যবসায়ী মেসার্স জাফ্রিদী এটারপ্রাইজের মালিক শাহ নেওয়াজ কবির টিপুর কাছে অসংখ্য ব্যবসায়ীর শত কোটি টাকা পাওনা রয়েছে। তার কাছে আসাদুজ্জামান জনি ও মফিজুর রহমান দপ্তরিরও ব্যবসায়িক লেনদেনের পাওনা টাকা রয়েছে। সেই পাওনা টাকা আদায় করায় তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা চাঁদাবাজির অভিযোগ তোলা হয়েছে। ব্যবসায়িক পাওনা টাকাকে চাঁদা হিসেবে কল্পকাহিনী সাজিয়েছে টিপুর স্ত্রী আসমা খাতুন। শনিবার প্রেসক্লাব যশোরের শহিদ সাংবাদিক আরএম সাইফুল আলম মুকুল অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে নওয়াপাড়া প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান দপ্তরীর স্ত্রীর লাবণ্য রহমান এ দাবি করেছেন।
লিখিত বক্তব্যে লাবণ্য রহমান বলেছেন, আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান নাবিল গ্রুপের নওয়াপাড়ার এজেন্ট মেসার্স জাফ্রিদী এন্টারপ্রাইজের মালিক শাহনেওয়াজ কবির টিপু। তার কাছ থেকে গম ক্রয় করে অনেক ব্যবসায়ী ব্যবসা করেন। আমার স্বামীও এক যুগেরও বেশি সময় গমের পাশাপাশি কয়লা, সার, ভুট্টা ইত্যাদির ব্যবসা করে আসছেন। নওয়াপাড়ার মেসার্স জনি এন্টারপ্রাইজও টিপুর সাথে চুক্তিবদ্ধ হয় গমের ব্যবসা করার জন্য।
শাহনেওয়াজ কবির টিপু কোম্পানির বেঁধে দেয়া দামের চেয়ে কম দামে গম বিক্রির কথা বলে বহু ব্যবসায়ীর কাছ থেকে শত শত কোটি টাকা নিয়েছেন। মেসার্স জনি এন্টারপ্রাইজের পরিচালক আসাদুজ্জামান জনি বিভিন্ন সময়ে গম কেনার উদ্দ্যেশে নগদ ৪ কোটি ২০ লাখ ৫০ হাজার টাকা দেন শাহনেওয়াজ কবির টিপুকে। মফিজুর রহমান দপ্তরীও নিজের কিছু এবং কয়েকজন ছোট ব্যবসায়ীর কাছ থেকে মোট এক কোটি টাকা সংগ্রহ করে জনি এন্টারপ্রাইজের মাধ্যমে ব্যবসায়ী টিপুর প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করেন।
তিনি বলেন, চুক্তি অনুযায়ী বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ না দিয়ে ঘোরাতে থাকেন টিপু। ইতোমধ্যে নাবিল গ্রুপ টিপুর কাছে পাওনা ১২৫ কোটি টাকা পরিশোধ না করায় গম দেয়া বন্ধ করে দেয়। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে জনি এন্টারপ্রাইজ তার বিনিয়োগের টাকা ফেরত দেয়ার জন্য চাপ দিতে থাকে। গত বছর জনি এন্টারপ্রাইজের পাওনা টাকার মধ্যে দুই কোটি টাকা তার ইউসিবি ব্যাংকের হিসাব নম্বরে পরিশোধ করেন ব্যবসায়ী টিপু। বাকি ২ কোটি ২০ লাখ ৫০ হাজার টাকার জন্য এক সপ্তাহ সময় নেন। কিন্তু দুই সপ্তাহ পার হলেও টিপু টাকা না দিয়ে তালবাহানা শুরু করেন।
তিনি আরও বলেন, আমার স্বামী মফিজুর রহমান দপ্তরী ধোপাদী এসএস কলেজের প্রভাষক, নওয়াপাড়া প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদকসহ স্থানীয় সামাজিক প্রতিষ্ঠানে গুরুত্বপূর্ণ পদের দায়িত্বে আছেন। এছাড়া তিনি নিজেও কয়লা, গম, ভুট্টা ব্যবসায়ী। ব্যবসায়ী হিসেবে জনি এন্টারপ্রাইজ আমার স্বামীকে ডেকে বিনিয়োগের টাকা ও লভ্যাংশ আদায়ের ব্যপারে ব্যবসায়ী টিপুর সাথে কথা বলতে অনুরোধ করেছিলেন। ব্যবসায়ী টিপু আমার স্বামীর ব্যাংক হিসাব নম্বরে ২ কোটি টাকা জমা দিয়েছিলেন। এ টাকা ব্যাংকে জমা হওয়ার পর জনি এন্টারপ্রাইজের পাওনা এক কোটি টাকা দেয়া হয়। বাকি ১ কোটি টাকা আমার স্বামী তার পাওনাদারদের পরিশোধ করেন। এরপর টিপুর সাথে জনি এন্টারপ্রাইজের সাথে ব্যবসায়িক বহু টাকা লেনদেন হয়েছে।
জনি এন্টারপ্রাইজের পাওনা ২০ লাখ ৫০ হাজার টাকা না দিয়ে বিষয়টি ভিন্নখাতে নিতে ব্যবসায়ী টিপু চলতি মাসের ২ তারিখে মিথ্যা কল্পকাহিনী সাজিয়ে তার স্ত্রী আসমা খাতুনকে দিয়ে মিথ্যা চাঁদাবাজি মামলা করিয়েছেন। মামলায় আমার স্বামী মফিজুর রহমান, কামরুজ্জামান মজুমদার, আসাদুজ্জামান জনিসহ বেশ কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে। প্রকৃপক্ষে ব্যবসায়ী টিপু ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে পাওনাদারদের টাকা আত্মসাতের উদ্দ্যেশে এ মিথ্যা অভিযোগ তুলে মামলা ও প্রচার করছেন। এর মধ্যে ব্যবসায়ী টিপু বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ীকে জমি লিখে দিয়ে দেনা শোধ হয়েছেন। তিনি এ মামলার সঠিক তদন্তের দাবি জানিয়েছেন প্রশাসনের কাছে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, মফিজুর রহমানের শ্যালক ইমরান হোসেন, মফিজ ট্রেডিংয়ের ম্যানেজার আবু সুফিয়ান প্রমুখ।