বাংলার ভোর প্রতিবেদক
বিশ্ববরেণ্য চিত্রশিল্পী এসএম সুলতানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ‘বিবর্তন যশোর আবৃত্তি আর্ট স্কুল’র আয়োজনে আবৃত্তি, নাটক, তথ্যচিত্র ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার সন্ধ্যা ৭টায় জেলা শিল্পকলা একাডেমি যশোর মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠানে এসএম সুলতানের জীবনী আলোকপাত করেন চিত্রশিল্পী ও লেখক মফিজুর রহমান রুননু।
মফিজুর রহমান রুননু এসএম সুলতানের জীবনী আলোকপাত করে বলেন, খুব কাছ থেকে এসএম সুলতানকে দেখার সুযোগ হয়েছিল আমার। তার অনেক গুণের মধ্যে একটি গুণ ছিল তিনি ছোট্ট শিশুদের অনেক ভালোবাসতেন। যদিও সুলতান নিজেই শিশু ছিলেন, বয়স্ক শিশু। তার আচরণ ছিল শিশুসুলভ। শিশুদের নিয়ে তিনি বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন।
এজন্য তিনি শিশু স্বর্গ স্কুল গড়ে তুলেছিলেন। ছবি বিক্রির ১২ লাখ টাকা দিয়ে তিনি শিশুদের জন্য ৬০ ফুট দীর্ঘ দোতলা একটি নৌকা তৈরি করেছিলেন। তার ইচ্ছা ছিল শিশুরা এ নৌকায় উঠবে, তিনি ছবি আঁকা শেখাবেন এবং ভাসতে ভাসতে নদী থেকে সমুদ্রে চলে যাবেন, হিরণ পয়েন্ট দেখবেন। সুলতান বিশ্বাস করতেন এসব শিশুরাই একদিন বিকশিত হয়ে সমাজে সুবাস ছড়াবে।
মফিজুর রহমান রুননু আরো বলেন, এস. এম সুলতান ছিলেন হ্যামিলিয়নের বাঁশিওয়ালা। কারন তার প্রতি শিশুরা আকৃষ্ট ছিল। তিনি যেখানেই থাকতেন অনেক শিশুরা তাকে ঘিরে থাকতো। সুলতান খুব নিবিড়ভাবে শিশুদের সঙ্গে মিশতেন। তার ভেতরটা শিশুর মতো ছিল। তার ভেতরে ব্যক্তিত্ব বা ইগো বলে কিছু কাজ করতো না। মনের দিক থেকে এমন নিস্কলুষতা আর কোন শিল্পীর মধ্যে পাইনি। সুলতান মনে করেছিলেন শিশুদের বিকশিত করা তার সামাজিক দায়িত্ব।
এছাড়া সুলতানের অনেক ছবিতে শ্রমজীবি মানুষের চিত্র ফুটে উঠেছে। তার অনেক ছবিতে কৃষক, জেলে সহ মাঠ ঘাটের মানুষ ছিল তার বিষয়বস্তু। তিনি বিশ্বাস করতে এরাই সমাজের প্রাণশক্তি, শেকড়। তিনি আমাদের নাড়ীর স্পন্দন উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন।
ইফফাত জামান রায়া’র সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আবৃত্তি করেন, তাসনিম মাহবুব, জাবালা জাহিন খান গল্প, ইউসরা মানহা, নির্জনা বিশ্বাস ভূমি, বর্ন, টিয়া, আরহাম প্রমুখ।
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের লেখা ও আতিকুজ্জামান রনির নির্দেশনায় নাটক ‘পুতুলের বিয়ে’ মঞ্চস্থ হয়। নাটকে অভিনয় করেন, বিবর্তন যশোরের শিশুশিল্পী-ভূমি, রায়, নিধি, অরণ্য, অর্ণব, অধি, আয়াত, তিতির, টিয়া, নাজিফা, মালিহা ও জান্নাতি প্রমুখ। এছাড়া বক্তব্য রাখেন বিবর্তনের সভাপতি নওরোজ আলম খান চপল এবং বিবর্তন যশোর আবৃত্তি আর্ট স্কুলের পরিচালক সাংবাদিক এইচ আর তুহিন।