শেখ জালাল উদ্দিন
যশোরে স্বেচ্ছাসেবক দলে একযোগে নগর, ইউনিয়ন-ওয়ার্ড ইউনিটের কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছে। একই সাথে নিষ্ক্রিয় নেতাদের শোকজ করা হয়েছে। এতে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মাঝে মিশ্রপ্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। শীর্ষ নেতারা বলছেন, তৃণমূলকে ঢেলে সাজিয়ে সংগঠনকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তবে, বিলুপ্ত ইউনিটের নেতাদের ভাষ্য ভিন্ন। তারা বলছেন, কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদকের মতবিনিময় সভায় অনুপস্থিত থাকায় এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এতে তারা হতাশ হয়েছেন।
শনিবার (৯ আগস্ট) জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের তৃণমূলের মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসান। তার উপস্থিতিতে নিস্ক্রিয় ইউনিটের কমিটি বিলুপ্ত ও দায়িত্বশীল নেতাদের শোকজ করা হয়েছে। একই সাথে সাতদিনের মধ্যে কর্মীসভা সম্পন্ন করার নির্দেশনা দেয়া হয়। বিলুপ্ত কমিটির মধ্যে রয়েছে- চৌগাছা উপজেলা ১১টি ইউনিয়ন কমিটি, বেনাপোল পৌর শাখার ৫ ও ৭ নম্বর ওয়ার্ড কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। যশোর নগর স্বেচ্ছাসেবক দলের ৫ ও ৬নম্বর ওয়ার্ড কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। বাঘারপাড়া উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের জহুরপর, বন্দবিলা ও নারিকেলবাড়ীয়া ইউনিয়ন কমিটি ও বাঘারপাড়া পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের সকল ওয়ার্ড কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে।
অভয়নগর উপজেলার সকল ইউনিয়ন এবং নওয়াপাড়া পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের সকল ওয়ার্ড কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছে। মণিরামপুর উপজেলার সকল ইউনিয়ন কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয় এবং মণিরামপুর পৌর শাখার ১,৫,৬,৭, ৯ নম্বর ওয়ার্ড কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা হয়েছে। কেশবপুর পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের ১, ৩, ৪, ৬, ৭ নম্বর ওয়ার্ড কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা হয়েছে।
নাম প্রকাশে স্বেচ্ছাসেবক দলের একাধিক নেতা বলেন, যশোর স্বেছাসেবক দলে কমিটি ভাঙা-গড়ার ঝড় চলছে। তারা বলেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগ্রামে রাজপথে ছিলাম। দলের ক্রান্তিকালে পদ-পদবী থাকায় নানাভাবে হয়রানির শিকার ছিলেন তারা। তারা অভিযোগ করেন, গত ৯ আগস্ট কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সাথে যশোর জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের তৃণমূল নেতৃবৃন্দের মতবিনিময় সভা উপস্থিত না থাকায় তাদের বিরুদ্ধে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে যশোর জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক মোস্তফা আমীর ফয়সল বলেন, বিভিন্ন ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডে দলের সংগঠনিক কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ে ছিল। স্বেচ্ছাসেবক দলের অনেকেই বিএনপিতে সক্রিয় হয়েছেন। অনেকেই আছেন বিদেশে। দলের কার্যক্রমকে গতিশীল ও শক্তিশালী করতে কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছে। এই ধরনের সাংগঠনিক কাজ ভবিয্যতেও অব্যাহত থাকবে।
তিনি বলেন, দলকে আরো কার্যকর এবং গতিশীল করতে অবশ্যই দলে পুনর্গঠনের দরকার আছে। এতে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। দল গঠন ও পুনর্গঠনের মধ্য দিয়ে সংগঠনকে সুসংহত করা, ঐক্যবদ্ধ করা, শক্তিশালী করা এগুলোই মূল উদ্দেশ্য বলে তিনি জানান।