বাংলার ভোর প্রতিবেদক
যশোরের মণিরামপুরে সাবেক এক ইউপি চেয়ারম্যানের পুকুর থেকে মাহমুদা সিদ্দিকা (১৩) নামে এক কিশোরীর অর্ধউলঙ্গ মরদেহ উদ্ধার হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার রোহিতা বাজার সংলগ্ন মিজানুর চেয়ারম্যানের পুকুর থেকে উদ্ধার করে পুলিশে খবর দেয় স্থানীয়রা। এর আগে সোমবার দুপুরে বাড়ির পাশের এক দোকান থেকে পাউরুটি চুরির অভিযোগ দিয়ে মেয়েটিকে মানসিক নির্যাতন করা হয়েছিল। পরে খবর পেয়ে মেয়েটির মাও তাকে জুতাপেটা করেছিলেন।
ওই কিশোরী রোহিতা বাজার এলাকার মাওলানা আইনুল হকের মেয়ে। মেয়েটি স্থানীয় একটি মাদরাসায় সপ্তম শ্রেণিতে পড়ত। তার বাবা রোহিতা ভান্ডারিমোড় এলাকার একটি মসজিদের ইমাম। পুলিশ বলছে, মেয়েটি পুকুরে গোসল করতে নেমেছিল। এরপর হয়ত উঠতে পারেনি। লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়েছে।
পুকুরের মালিক সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বলেন, মঙ্গলবার বেলা পুকুরের মাঝখানে চুল ভাসতে দেখেন আমার এক আত্মীয়। তারপর আমরা দৌঁড়ে পুকুর পাড়ে এসে লাঠি দিয়ে ঘাটে টেনে এনে দেখি একটি মেয়ের লাশ। মেয়েটির পরনে পায়জামা ছিল না। পরে খবর পেয়ে মেয়েটির বাবা মা পুকুর পাড়ে আসেন।
সাবেক চেয়ারম্যান বলেন, ওর বাবা মা বলছে, সোমবার সকালে না খেয়ে মেয়েটি মাদরাসায় গেছে। ফেরার পথে বাড়ির পাশে এক দোকান থেকে সে রুটি নেয়। তখন দোকানে মালিক ছিল না। পাশের এক নারী বিষয়টি দেখে দোকানদারকে জানায়। তখন দোকানের মালিক এসে চুরির অভিযোগে মেয়েটির বইপত্র কেড়ে রাখেন। পরে বাড়িতে খবর দিলে মেয়েটির মা গিয়ে সবার সামনে ওকে মারপিট করে। এরপর বাড়ি এনে শাসনের হুমকি দিলে মেয়েটি আর বাড়িতে ঢোকেনি। রাতে মেয়ে বাড়ি না আসায় ওর পরিবার গোপনে খোঁজাখুঁজি করে মেয়েকে পায়নি।
মিজানুর রহমান বলেন, এর আগে সোমবার বিকেলে মেয়েটিকে পুকুরে নেমে গোসল করতে পাড়ার লোকজন দেখেছিলেন। আজ পুলিশ এসে পুকুরে লোক নামিয়ে মেয়েটির পরনের পায়জামা ও গায়ের ওড়না উদ্ধার করেছে।
কিশোরীর মা শাহিনুর বেগম বলেন, সোমবার দুপুরে এক লোক এসে ওর বাবার কাছে মেয়ে দোকান থেকে রুটি চুরি করার কথা জানায়। আগেও একদিন না বলে রুটি নেওয়ার কথা বলে লোকটি। তখন ওর বাবা মসজিদে নামাজ পড়াতে চলে যান। আমি দোকানে গিয়ে সব শুনে ওরে জুতা দিয়ে মারি। পরে মেয়ে আমার সাথে চলে আসে। এরপর কি বুঝে ও বাড়ি ঢোকেনি। রাতে মেয়েকে খুঁজে পাইনি। মঙ্গলবার শুনি পুকুরে মেয়ের মরদেহ পাওয়া গেছে।
এদিকে, পুকুরে কিশোরীর অর্ধউলঙ্গ লাশ দেখে স্থানীয়দের মনে নানা প্রশ্ন জেগেছে। এটি আত্মহত্যা নাকি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।
মনিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বাবলুর রহমান খান বলেন, অর্ধউলঙ্গ ওইভাবে বলা যাচ্ছে না। মেয়েটি গোসল করতে পুকুরে নেমেছিল। হয়তো সাঁতার জানত না। আমরা মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠিয়েছি। ভিন্ন কিছু থাকলে ময়নাতদন্তের পর জানা যাবে।’