বাংলার ভোর প্রতিবেদক
স্থল বন্দর বেনাপোলে রাজস্ব ফাঁকির ঘটনা নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে। সম্প্রতি আঞ্চলিক ও দেশের জাতীয় পত্র পত্রিকা ও প্রিন্ট ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় সংবাদ প্রকাশের পরে এই নিয়ে নড়ে চড়ে বসেছে সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা। বিষয়টি নজরে এসেছে দুর্নীতি দমনসহ বিভিন্ন গেয়েন্দা সংস্থার। রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে অনেকেই সম্পদের পাহাড় গড়েছেন। বেশ কয়েকটি সিণ্ডিকেট রয়েছে এই চক্রের। যার মধ্যে অতি সম্প্রতি আলোচনায় এসেছে ভাই ভাই সিণ্ডিকেট।
এই সিণ্ডিকেটের অন্যতম হোতা আজিম। বেনাপোল-যশোর এলাকায় তার রয়েছে সম্পদের পাহাড়। আলাদিনের চেরাগের মত তাদের এই চেরাগের নাম রাজস্ব ফাঁকি। ভারত থেকে আমদানি পণ্যর সাথে অবৈধ নিষিদ্ধ পণ্যের চালান প্রবেশ করিয়ে বনে গেছেন কোটি কোটি টাকার মালিক। বেনাপোল ও যশোরে গড়ে তুলেছেন আলিশান বাড়ি। কিনেছেন একাধিক জমি। জ্ঞাত আয় বহির্ভুত এ সম্পদের উৎস তদন্ত করলে বেরিয়ে আসবে থলের বিড়াল।
স্থানীয়রা জানান, বেনাপোল দুর্গাপুর মোড়ে ভাজা বিক্রি ছেড়ে ভাই সামাদের হাত ধরে সিঅ্যান্ডএফ ব্যবসায় আসেন আজিম। সেখান থেকে আ,লীগের আমলে অবৈধ ব্যবসার সাথে গড়ে তোলেন সাম্রাজ্য। বিভিন্ন সূত্রের খবরে জানা যায়, সীমান্ত পথে চক্রটির মাধ্যমে দেশে আনা হচ্ছে অস্ত্র ও নেশা জাতীয় ওষুধের চালান, সাপের বিষ, মোবাইল, মোবাইল ডিসপ্লে, চুল, ব্লেড ও উচ্চ শুল্কযুক্ত পণ্য। ৫ আগস্ট পরবর্তীতে এই সিণ্ডিকেটের কয়েকটি চালান আটক হলেও ধরা ছোঁয়ার বাইরে রয়েছে এই চক্র। কার্যত কোন ব্যবস্থা নেইনি কাস্টমস ও বন্দর কতৃপক্ষ।
বেনাপোল কার্গো শাখা সূত্রে জানা যায়, ভারতীয় রপ্তানিকারক সেন শিপিং লাইসেন্সের মাধ্যমে বাংলাদেশ রপ্তানিকৃত ১৯৪ বস্তা কাঁচাঝাল (ওজন ১১টন) ভর্তি ট্রাক চালকের হেফাজতে রাখা পিস্তল ও গুলি উদ্ধার পূর্বক গাড়ির চালক ও হেলপার দুই ভারতীয় নাগরিককে আটক করে বিজিবি। পণ্য চালানটির বাংলাদেশি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান শিমু এন্টারপ্রাইজ ও সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট বেনাপোলের বহুল আলোচিত ও বিতর্কিত প্রতিষ্ঠান ওমর এন্ড সন্স। যেটা আজিম চুক্তিতে ভাড়া করে চালাচ্ছেন।
সীমান্তের সূত্রগুলো জানায়, ২০১৯ সালে ভাই ভাই সিণ্ডিকেটের অন্যতম হোতা আজিম ১০টি অস্ত্রসহ ঢাকা ডিবি পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন। শার্শা উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আকুলের সাথে তার অস্ত্র, মাদক, সীমান্ত পিলার, সাপের বিষ, স্বর্ণ চোরাচালান ও আইস ব্যবসার অংশিদারি ছিলো। ৫ আগস্ট পরবর্তীতে আকুলের সেই ব্যবসা নিজের হাতে তুলে নেয় আজিম। আকুল বর্তমান ভারতে পালিয়ে থেকে সেখান থেকেই আজিমকে দিয়ে অবৈধ ব্যবসা পরিচালনা করছে বলে জানা গেছে।
বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত আজিম উদ্দীনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি সাংবাদিকদের দেখে নেয়ার হুমকি দেন।
ভাই ভাই সিন্ডিকেটের হোতা আজিম উদ্দীনের বেনাপোল ও যশোর শহরে আলিশান বাড়ি দেখলেই বেরিয়ে আসবে তার অপকর্মের সত্যতা।
কয়েকজন ব্যবসায়ী অভিযোগ করে বলেন, বেনাপোল বন্দরের শেড ইনচার্জ, স্কেলের দায়িত্বে থাকা কাস্টমস কর্মকর্তার সাথে পূর্ব চুক্তি মোতাবেক শুল্ক ফাঁকি দিতে ভারত থেকে এমন পণ্য চালান আমদানি করা হয়। এসব তারই অংশ। শুল্ক ফাঁকি চক্রের গড়ে ওঠা সিন্ডিকেটের কবলে পড়ে বেনাপোল বন্দর দিয়ে সরকার বড় অঙ্কের রাজস্ব হারালেও ফুঁলে ফেঁপে ওঠছে অসাধু এসব ব্যবসায়ী।