বাংলার ভোর প্রতিবেদক
যশোরের মণিরামপুরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সেবার মান উন্নয়ন নিয়ে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। স্বাস্থ্য কমপ্রেক্সের সভাকক্ষে বুধবার বেলা ১০টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত চলে এই সভা। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিশাত তামান্নার সভাপতিত্বে সভায় স্থানীয় রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গসহ বিশিষ্টজনেরা উপস্থিত ছিলেন। এসময় সভায় হাসপাতালে দায়িত্বরত সকল চিকিৎসক উপস্থিত থাকায় চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে হাসপাতালের বহির্বিভাগে আগত রোগীদের।
দীর্ঘ সময় অপেক্ষায় থেকে চিকিৎসকের দেখা না পেয়ে অনেক রোগী ফিরে গেছেন বলে অভিযোগ। অবশ্য রোগীদের সমস্যার বিষয়টিকে বৃহৎ স্বার্থে ক্ষুদ্রতর সমস্যা হিসেবে দেখছেন হাসপাতালের প্রধান ফাইয়াজ আহমেদ ফয়সাল।
হাসপাতালে আগত রহিমা খাতুন নামে এক রোগীর স্বামী তাজাম্মুল হুসাইন বলেন, মনিরামপুর হাসপাতালের গাইনী বিশেষজ্ঞ দিলরুবা ফেরদৌস ডায়না সপ্তাহে তিন দিন হাসপাতালে কর্মস্থলে আসেন। তিনি শুধুমাত্র বুধবার রোগী দেখেন। আমার স্ত্রী আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা। তাকে নিয়ে গাইনী বিশেষজ্ঞ দেখানোর উদ্দেশে ১১টার দিকে হাসপাতালে গিয়েছি। যেয়ে শুনি দুই ঘন্টা ধরে রোগীরা চিকিৎসকের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে আছেন। কোন কক্ষে ডাক্তার নেই। তারা সবাই রোগী ছেড়ে মিটিং করছেন। তাজাম্মুল হুসাইন বলেন, দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত ডাক্তাররা মিটিং করেছেন। অনেক রোগী অপেক্ষায় থেকে ফিরে গেছেন। আমার স্ত্রীকে ডাক্তার দেখাতে না পেরে আল্ট্রাসনোগ্রাম করিয়ে ফিরে এসেছি।
মনিরামপুর হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, বুধবার জরুরি বিভাগ ও বহির্বিভাগে একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকসহ সাত জন চিকিৎসকের রোগী দেখার কথা ছিল। এ দিন সকাল ১০টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২ টা পর্যন্ত চলা হাসপাতালের মতবিনিময় সভায় সকল চিকিৎসক উপস্থিত থাকায় সকাল থেকে কোন চিকিৎসক রোগী দেখেননি। সভা শেষ হওয়া পর্যন্ত যে কজন রোগী অপেক্ষায় ছিলেন পরে এসে তাদের দেখেছেন চিকিৎসক।
সভায় উপস্থিত থাকা মণিরামপুর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান মিন্টু বলেন, হাসপাতালের সমস্যাগুলো নিয়ে সভা জরুরি ছিল। তবে সভা চলা অবস্থায় চিকিৎসকদের রোগী দেখার ব্যবস্থা করে দেয়া উচিৎ ছিল। আসলে ওই সময় আমরা রোগীদের ভোগান্তির বিষয়টি নিয়ে ভাবিনি। যা আমাদের ভাবা উচিৎ ছিল।
মণিরামপুর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক অনুপ বসু বলেন, আমরা ১০টায় শুরু হয়ে ১১টায় এক ঘন্টার মধ্যে সভা শেষ করে রোগী দেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। কিন্তু সভা দীর্ঘক্ষণ চলায় সাড়ে ১২টার আগে রোগী দেখা সম্ভব হয়নি। সভা শেষে যে কজন রোগী ছিল চিকিৎসকেরা তাদের সেবা দিয়েছেন। মণিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ফাইয়াজ আহমেদ ফয়সাল বলেন, অনেকগুলো সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে মতবিনিময় সভা হয়েছে। সেখানে চিকিৎসকদেরও মত বিনিময়ের প্রয়োজন ছিল। আমরা চেয়েছি রোগীদের ভোগান্তি যেন না হয়। বৃহৎ স্বার্থে তো ক্ষুদ্রতর সমস্যা কিছুটা হবেই।
মণিরামপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিশাত তামান্না বলেন, হাসপাতালের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে আমরা মতবিনিময় সভা করেছি। সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে, কবে কোন চিকিৎসক দায়িত্ব পালন করবেন তার একটা তালিকা দৃশ্যমান স্থানে দিতে হবে। এছাড়া একটি অভিযোগ বক্সও হাসপাতাল চত্বরে স্থাপনের সিদ্ধান্ত হয়েছে