বাংলার ভোর প্রতিবেদক
আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ‘জাল দলিলের মাধ্যমে’ যশোর শহরের সেই তিন কোটি টাকার সম্পত্তি বিক্রি করে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি ওই জমিতে বিদ্যুৎ সংযোগ গ্রহণ ও আদালতের নিষেধাজ্ঞার সাইনবোর্ড অপসারণের চেষ্টা করলে বিষয়টি জানাজানি হয়। জমির মালিক ফজলে রাব্বীর অভিযোগ, ‘আদালতের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও প্রভাব খাটিয়ে জাল দলিলের মাধ্যমে প্রতারক মোশারফ হোসেন ওই জমি বিক্রি করে দিয়েছেন।’
যশোর শহরের ঘোপ জেল রোড এলাকার ফজলে রাব্বী জানান, যশোর কোতোয়ালি থানার ৯২ ঘোপ মৌজায় এস.এ. ৫০৩ আর.এস ৫২৩ খতিয়ানের আর.এস. ১৭৭০ দাগে তাদের ২৮.৬৯ শত জমি রয়েছে। একসময় মোশারফ হোসেন তাদের জমি ও স্থাপনার কেয়ারটেকার ছিলেন। ওই সময় ৬ শতক জমি জাল-জালিয়াতি করে ভুয়া দলিল তৈরি করেন। বিষয়টি ফাঁস হওয়ার পর তিনি আদালতে মামলা করেন। মামলা চলমান রয়েছে। এজন্য জমিতে আদালতের নিষেধাজ্ঞাসম্বলিত সাইনবোর্ডও টানানো রয়েছে। ২০২৪ সালে মোশারফ হোসেন ওই জমি বিক্রির জন্য একাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে বায়না গ্রহণ করেন। কিন্তু মামলার বিষয়টি জেলা রেজিস্ট্রি অফিস অবহিত থাকায় জমি রেজিস্ট্রি করতে পারেননি। ফলে তিনি বায়না ফেরত দিতেও বাধ্য হন। গতবছর নভেম্বরে এ নিয়ে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়।
ফজলে রাব্বী আরও অভিযোগ করেন, গত বছর মোশারফ হোসেন উপশহর এলাকার বাসিন্দা ফজলিয়ারা জাহান নামে এক নারীর কাছে জমিটি বায়না করেছিলেন। কিন্তু তখন রেজিস্ট্রি করতে না পেরে বায়না ফেরত নিয়েছিলেন। কিন্তু গত ৪ আগস্ট ’২৫ মোশরফ হোসেন খুব গোপনে অনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে ওই জমি ফজলিয়ারা জাহান নামে সেই নারীর কাছে তিন কোটি টাকায় বিক্রি করে দেন। অথচ ওই জমি নিয়ে এখনও মামলা চলমান এবং জমিতে আদালতের নিষেধাজ্ঞাসম্বলিত সাইনবোর্ডও টানানো রয়েছে।
ফজলে রাব্বী জানান, সম্প্রতি ওই জমিতে বিদ্যুৎ সংযোগ গ্রহণ ও আদালতের নিষেধাজ্ঞার সাইনবোর্ড অপসারণের চেষ্টা করলে বিষয়টি জানাজানি হয়। এরপর তিনি খোঁজ-খবর নিয়ে জানতে পারেন জাল দলিল ব্যবহার করে ওই ছয় শতক জমি মোশারফ হোসেন তিন কোটি টাকায় বিক্রি করে দিয়েছেন। গত ৪ আগস্ট ওই জমি রেজিস্ট্রি হয়েছে। দলিল নং-১০৫৬৩/২৫। তিনি ওই দলিলের নকলও তুলেছেন। প্রভাবশালী এক কর্মকর্তাকে অনৈতিক সুবিধা দিয়ে তিনি ওই জমি রেজিস্ট্রি করতে সক্ষম হন দাবি করে ফজলে রাব্বী বিষয়টি নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হবেন বলেও জানিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, এই মোশারফ হোসেনের বিরুদ্ধে জালিয়াতি করে দু’টি এনআইডি কার্ড তৈরিসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে। এসব ঘটনায় তিনি কারাগারেও গিয়েছেন। এনিয়ে একাধিক সংবাদও প্রকাশিত হয়েছে।
এ ব্যাপারে মোশরফ হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জমি বিক্রির বিষয়টি অস্বীকার করেন। দলিলের বিষয়টি উল্লেখ করা হলে তিনি বলেন, ‘কে কিভাবে দলিল করেছে জানি না। আপনাদের ইচ্ছে হলে লিখে দেন।’