বাংলার ভোর প্রতিবেদক
যশোরের দুঃখখ্যাত ভবদহের জলাবদ্ধতা সমস্যার স্থায়ী সমাধান, ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পুর্নবাসনের দাবিতে সমাবেশ করেছে জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীরা। সোমবার বিকেলে ভবদহ মহাবিদ্যালয়ের মাঠে ভবদহ আমডাঙ্গা সংস্কার আন্দোলন কমিটির ব্যানারে এই সমাবেশ করে। এ সময় ভবদহ সমস্যা সমাধানে বিভিন্ন দাবি সম্বলিত প্লেকার্ড নিয়ে জামায়াতের নেতাকর্মীরা ছাড়াও ভবদহ পাড়ের ক্ষতিগ্রস্তরা অংশ নেয়। সমাবেশে ভবদহ অঞ্চলের তিন সংসদীয় আসনের জামায়াতে মনোনীত প্রার্থীরা বিজয়ী হলে ভবদহ স্থায়ী সমাধানের প্রতিশ্রুতি দেন।
ভবদহ অঞ্চল যশোরের অভয়নগর, মণিরামপুর, কেশবপুর এবং খুলনার ডুমুরিয়া ও ফুলতলা উপজেলার অংশ বিশেষ নিয়ে গঠিত। এই এলাকার পানি ওঠানামা করে মুক্তেশ্বরী, টেকা, শ্রী ও হরি নদীর মাধ্যমে। তবে পলি পড়ে নদীগুলো নাব্যতা হারানোয় চার দশকের বেশি সময় ধরে পানি নিস্কাশনে সমস্যা হচ্ছে। এতে বছরের পর বছর জলাবদ্ধতা ভুগছে প্রায় কয়েক লাখ মানুষ। এখনও ভবদহ এলাকায় প্রতিটি বাড়িতে হাটু সমান পানি। ডুবে আছে ঘরবাড়ি, ফসলি মাঠ, ঘের, সড়ক, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান। এমন পরিস্থিতে ভবদহ সমস্যার স্থায়ী সমাধান, ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পুর্নবাসনের দাবিতে সমাবেশ করেছে জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীরা।
সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমীর ও যশোর -৪ (বাঘারপাড়া -অভয়নগর) আসনের মনোনীতি প্রার্থী অধ্যাপক গোলাম রসুল। এসময় তিনি বলেন, ‘ভবদহের দীর্ঘস্থায়ী জলাবদ্ধতা শুধু একটি ভৌগোলিক সমস্যা নয়, এটি মানুষের জীবন-জীবিকার সঙ্গে জড়িত। অতীতের সরকারগুলো ভবদহ নিয়ে শুধু প্রতিশ্রুতির রাজনীতি করেছে, কিন্তু বাস্তব কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। ভবদহকে পুঁজি করে কোটি কোটি টাকা লুটপাট করেছে। বিগত সরকারগুলোর নেতাকর্মীরা এটা সোনার ডিমপাড়া হাঁস বানিয়ে ছিলো। আমরা নির্বাচিত হলে ভবদহবাসীর আর আন্দোলন করা লাগবে না। জীবন দেওয়া লাগবে না, রক্ত দেয়া লাগবে না। পরিকল্পিত ও স্থায়ী সমাধান করবো। এসময় বিগত সরকারের সময় ভবদহ প্রকল্পের নামে লুটপাটকারীদের শাস্তির দাবি জানান তিনি।’
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি যশোর-৫ (মণিরামপুর) আসনের জামায়াতে ইসলামীর মনোনীত প্রার্থী অ্যাডভোকেট গাজী এনামুল হক বলেন, ‘ভবদহবাসী ত্রাণ চায় না। তারা ভবদহের অভিশাপ থেকে মুক্তি চাই। বিগত সরকারের নেতা আমলারা সমস্যা সমাধানের নামে কোটি কোটি টাকা লুটপাট করেছেন। তাদের লুটপাটে ভবদহবাসী মানবতার জীবনযাপন করছে। ভবদহের দুর্ভোগ কেবল যশোর নয়, সমগ্র দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের জীবনে স্থায়ী প্রভাব ফেলছে। বিগত সরকারের ব্যর্থতার কারণে জনগণ আজ দুর্ভোগে জর্জরিত। এই ভবদহ দুর্নীতিবাজদের কাছে নিরাপদ নয়।জামায়াত ক্ষমতা গেলে ভবদহকে নিরাপদ জনপদে গড়তে কাজ করবে।’
কেশবপুরের সুফলাকাটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এস এম মঞ্জুর রহমানের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন যশোর-৬ (কেশবপুর) আসনের প্রার্থী অধ্যাপক মুক্তার আলী, জেলা জামায়াতের ইসলামীর সেক্রেটারি অধ্যক্ষ আবু জাফর সিদ্দিকী, ভবদহ আন্দোলন কমিটির নেতা আবুল হাশিম রেজা, উপজেলা আমীর ফজলুর হক বক্তব্য রাখেন।