বাংলার ভোর প্রতিবেদক
‘পরিকল্পিত উন্নয়নের ধারা, নগর সমস্যায় সাড়া’ এইপ্রতিপাদ্য স্লোগানে যশোরে বিশ্ব বসতি দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় জেলা প্রশাসক আজাহারুল
ইসলাম অপরিকল্পিত নগরায়ন ও ভবন নির্মাণে জাতীয় নীতি লঙ্ঘনের বিষয়ে তীব্র সমালোচনা করেছেন। সোমবার সকালে র্যালি ও আলোচনার মাধ্যমে দিবসটি উদযাপন করা হয়। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের অমিত্রাক্ষর সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক আজাহারুল ইসলাম নগরের অব্যবস্থাপনা ও নাগরিকদের দায়িত্বহীনতা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, আমরা আমাদের নিজেদের দায়িত্ব সঠিক ভাবে পালন করি না। একটা মানুষ ১০ তলায় মারা গেলে উপরে খাটিয়া উঠেনা। লাশ সোজা করে নামাতে হয়। ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি ঢুকতে পারে না।
তিনি চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে বলেন, আমি চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলছি এখানে ৯৯ শতাংশ বিল্ডিং জাতীয় নীতি মেনে করা হয়নি। টাকা থাকলে, বিল্ডিং এর মালিক হলেই ধনি হওয়া যায় না। ধনি হতে হয় মনের দিক থেকে। জেলা প্রশাসক ফুটপাত ও ড্রেন দখল এবং নদী দখলদারদের ভণ্ডামির কঠোর সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, আজ একটা ড্রেন, ফুটপাত করতে গেলে জায়গা পাওয়া যায় না। নাগরিক কমিটি ওরে বাবা! প্রতিবাদ করে। আপনি যদি ভালোভাবে বসবাস করতে চান, শান্তি চান আরেক জনকে সুযোগ করে দিতে হবে। তিনি নির্মাণে ত্রুটিজনিত কারণে প্রাণহানির ঘটনা উল্লেখ করে বলেন, একটা বিল্ডিং তৈরি করতে প্রয়োজনীয় রসদ না দেয়ায় প্রাণহানি ঘটছে। মানুষের জীবনের কি মূল্য নাই?
ভৈরব নদ দখল নিয়ে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ভৈরব নদ দখল করে বিল্ডিং করা হয়েছে। যারা দখলের সাথে জড়িত তারাই নদী বাঁচাও আন্দোলন করে। একই সঙ্গে তিনি কিছু নাগরিকের মানসিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন, মানুষ নিজের জমির মধ্যে বাড়ি করে। উপরে গিয়ে বেলকোনি সরকারি জায়গায় বাড়িয়ে দেয়। মানুষ কত বড় খারাপ।
দিবসটি উপলক্ষে সকালে গণপূর্ত বিভাগ ও জেলা প্রশাসনের আয়োজনে এক বর্ণাঢ্য র্যালি কালেক্টরেট ভবন থেকে শুরু হয়ে শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে। গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী পরিচালক জাহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন, পুলিশ সুপার রওনক জাহান, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক রফিকুল ইসলাম, সিভিল সার্জন ডা. মাসুদ রানা, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম শাহিন, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শারমিন আক্তার, প্রেসক্লাব যশোরের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন, এনসিপির প্রতিনিধি মো. নুরুজ্জামান, ছাত্র প্রতিনিধি সোয়াইব হোসেনসহ অন্যান্য ব্যক্তিবর্গ।