বাংলার ভোর প্রতিবেদক
পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন অনুষ্ঠান, জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি নিশ্চিতকরণসহ ৫ দফা দাবিতে যশোর জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি পেশ করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। কেন্দ্রীয় ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে রোববার দুপুরে যশোর জেলা জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে টাউনহল ময়দান থেকে মিছিল সহকারে নেতাকর্মীরা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে জড়ো হন। পরে জেলা জামায়াতের নেতৃবৃন্দ জেলা প্রশাসক আজাহারুল ইসলামের দপ্তরে গিয়ে তার হাতে এই স্মারকলিপি তুলে দেন।
এ সময় যশোর জেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক গোলাম রসুল জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি নিশ্চিতকরণ, পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচন, নির্বাচনের লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড বাস্তবায়ন, জুলাই গণহত্যার বিচার এবং ফ্যাসিবাদের দোসরদের বিচার ও বিচারকালীন তাদের নিষিদ্ধের দাবিতে জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন, খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, নেজামে ইসলাম পার্টি অভিন্ন কর্মসূচির কথা তুলে ধরেন।
স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয় যে, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের সফল গণঅভ্যুত্থানের পর জনগণের অভিপ্রায়ের পরম অভিব্যক্তি এবং জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। সরকার রাষ্ট্রের প্রয়োজনকে সামনে রেখে জনগণের প্রত্যাশা পূরণের লক্ষ্যে গণহত্যার বিচার, রাষ্ট্র সংস্কার ও স্বৈরাচার ফিরে আসার সকল পথ রুদ্ধ করার প্রত্যয় নিয়ে কাজ শুরু করেন। স্মারকলিপিতে জুলাই অভ্যুত্থানের প্রেরণা, জনমনের প্রত্যাশা ও ৫ দফা আন্দোলনের যৌক্তিকতা তুলে ধরে দাবিগুলোর প্রতি সংবেদনশীল হতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
স্মারকলিপিতে আরও বলা হয়, সরকার ইতোমধ্যেই জুলাই জাতীয় ঘোষণাপত্র ও জুলাই জাতীয় সনদ প্রস্তুত করেছেন এবং দেশের প্রতিটি রাজনৈতিক দল প্রয়োজনীয় সংশোধনীসহ তাদের পরামর্শ সরকারের নিকট উপস্থাপন করেছে। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী বরাবরই জুলাই জাতীয় সনদকে আইনগত ভিত্তি দেয়ার বিষয়ে জোরালো ভূমিকা পালন করে আসছে।
এ লক্ষ্যে জুলাই জাতীয় সনদের আইনগত ভিত্তি দেয়ার জন্য আইন ও সংবিধান বিশেষজ্ঞদের মতামতের ভিত্তিতে জামায়াতে ইসলামী ইতোমধ্যে সরকারের কাছে লিখিতভাবে দুইটি প্রস্তাব করেছে। প্রথমত, জুলাই জাতীয় সনদের জন্য “সংবিধান আদেশ জারি করা” এবং দ্বিতীয়ত, এই সনদের অধিকতর আইনি ভিত্তি দেয়ার জন্য নির্বাচনের পূর্বে গণভোট প্রদান করে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন করা। তারা মনে করেন, জুলাই জাতীয় সনদের আইনগত ভিত্তি প্রদান ব্যতীত ছাত্র-জনতার রক্তের বিনিময়ে অর্জিত অভ্যুত্থান ও তার অর্জন ব্যর্থতায় পর্যবসিত হতে পারে।
স্মারকলিপি পরবর্তী জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্বরে যশোর জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমীর অধ্যাপক গোলাম রসুলের সভাপতিত্বে সমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন, যশোর জেলা জামায়েতের সেক্রেটারি অধ্যাপক আবু জাফর সিদ্দিক, যশোর-১ (শার্শা) আসনের জামায়াত ইসলামী মনোনীত এমপি প্রার্থী মাওলানা আজিজুল হক, যশোর-৫ (মণিরামপুর) আসনের জামায়াত ইসলামী মনোনীত এমপি প্রার্থী অ্যাডভোকেট গাজী এনামুল হক, যশোর জেলা জামায়েতের সহকারী সেক্রেটারি অধ্যাপক গোলাম কুদ্দুস, যশোর জেলা জামায়েতের প্রচার সম্পাদক অধ্যাপক শাহাবুদ্দীন, যশোর জেলা সহকারী সেক্রেটারী অধ্যাপক মনিরুল ইসলাম, জামায়াতের শহর আমির অধ্যাপক শামসুজ্জামান, সদর উপজেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক আশসাফ আলী এবং সদর উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারী অধ্যাপক আব্দুল হক প্রমুখ।
নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে তাদের ৫ দফা দাবি মেনে নিয়ে দেশের গণতন্ত্র ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার পথে এগিয়ে যাওয়ার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।